অনেকেই তাড়াতাড়ি গন্তব্যে পৌঁছানোর জন্য বিমানে ভ্রমণ করেন। বিদেশে যাওয়ার ক্ষেত্রে অনেকের কাছে ফ্লাইটে ভ্রমণ করা স্বপ্ন। কিন্তু পৃথিবীতে এমন কিছু বিমানবন্দর রয়েছে যেখানে অবতরণের আগে আপনি একশোবার ভাববে। কারণ সেই সব বিমান বন্দর থেকে বিমান টেক অফ করা বড় চ্যালেঞ্জের চেয়ে কম নয়।
গত ২৪ জুলাই নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উড্ডয়নের সময় একটি বিমান বিধ্বস্ত হয়। ক্রুসহ ১৯ জন আরোহী নিয়ে কাঠমান্ডু থেকে পোখারার উদ্দেশ্যে রওনা হওয়া ফ্লাইটটি উড্ডয়নের সময় দুর্ঘটনার মুখে পড়ে। দুর্ঘটনাস্থল থেকে ১৮ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এর আগেও বহুবার এই বিমানবন্দরটিতে প্লেন দুর্ঘটনা ঘটেছে। ১৯৪৯ সালে সেখান থেকে প্রথম ফ্লাইট টেক অফ করেছিল। তারপর থেকে এখানে প্রায় ১৮টি বিমান দুর্ঘটনা ঘটেছে। মারা গেছেন অনেক মানুষ।
পারো, ভুটান
হিমালয়ের মাঝে অবস্থিত ভুটানের একমাত্র বিমানবন্দর, যা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৭ হাজার ৩৬৪ ফিট উচ্চতায় অবস্থিত। এটি কতটা বিপজ্জনক তা অনুমান করা যায় একটি তথ্য থেকে। সেই এয়ারপোর্ট-এ মাত্র ১৭ জন পাইলটকে অবতরণের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। প্লেন শুধু দিনের বেলায় সেখানে অবতরণ বা টেক অফ করতে পারে।
শুধু নেপাল নয়, বিশ্বের মধ্যে অন্যতম বিপজ্জনক বিমানবন্দর বলে মনে করা হয় লুকলাকে। এই বিমানবন্দর তেনজিং হিলারি এয়ারপোর্ট নামেও পরিচিত। এই বিমানবন্দর এভারেস্টের খুব কাছে। এই বিমানবন্দর জনপ্রিয় কারণ এখান থেকেই এভারেস্টের বেস ক্যাম্পে পৌঁছানো যায়। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৯ হাজার ৩৩৪ ফুট উঁচুতে রয়েছে লুকলা বিমানবন্দরটি। রানওয়েটি দৈর্ঘ্যে ১ হাজার ৭২৯ ফুট প্রস্থে ৯৮ ফুট। রানওয়ের চারপাশে প্রায় ২ হাজার ফুট গভীর খাদ।
প্রিন্সেস জুলিয়ানা বিমানবন্দর
সেন্ট মার্টেনে অবস্থিত এই বিমানবন্দর। সেন্ট মার্টেন হচ্ছে একটি ক্যারিবিয়ান দ্বীপ, সেখানকার প্রিন্সেস জুলিয়ানা বিমানবন্দরের রানওয়ে মাত্র ৭ হাজার ১০০ ফিট লম্বা। একদিকে সাগরের তীর, অন্যদিকে পাহাড়। প্রিন্সেস জুলিয়ানা বিমানবন্দরে যথাযথভাবে অবতরণ করতে সমুদ্রসৈকতের ছোটোখাটো অংশ, সুরক্ষিত দেয়াল, রাস্তা পার হয়ে রানওয়েতে প্রবেশ করতে হয়।
পর্তুগালের সান্তা ক্রুজে অবস্থিত এই বিমানবন্দরটিকে ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরও বলা হয়। এর আরেক নাম মাদুরাই বিমানবন্দর। সেখানকার এয়ারস্ট্রিপ বেশ ছোট। সেটি সমুদ্র এবং পাহাড়ের খাদের মাঝে। সেখানে নিরাপদে অবতরণ করা চ্যালেঞ্জ বটে। এছাড়াও আটলান্টিক মহাসাগর থেকে আসা বাতাস ঝুঁকি বাড়ায়।
ফ্রান্সের কোর্চেভেল
বিশ্বের অন্যতম ছোট রানওয়ে এটি। এখানে অবতরণের জন্য পাইলটদের আল্পস পর্বতমালা পার হয়ে সতর্কতার সঙ্গে অবতরণ করতে হয়। তাই নিচু মেঘ বা কুয়াশা থাকলে এখানে অবতরণ করা অসম্ভবই বলা চলে।
জিব্রাল্টার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর বিশ্বের সবচেয়ে অনন্য এবং বিপজ্জনক বিমানবন্দরগুলোর মধ্যে একটি। এটির রানওয়ে শহরের মাঝখান দিয়ে গিয়েছে। ফ্লাইট টেক অফ-এর জন্য কিছুক্ষণ সড়ক চলাচল বন্ধ করতে হয়।
আইস রানওয়ে
এখানে কোনো সত্যিকারের রানওয়ে নেই। বিমান যেখানে অবতরণ করে সেটি শুধু পরিষ্কার করা বরফ এবং তুষারে আচ্ছাদিত স্থান। ফলে অতিরিক্ত ওজনের কারণে বিমানটি রানওয়েতে থাকা তুষারে আটকে যেতে পারে।