রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৫১ পূর্বাহ্ন

বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দর ৭টি মেট্রো

  • আপডেট সময় বুধবার, ১৭ জুলাই, ২০২৪

পৃথিবীর সব দেশেই এমন কিছু সুন্দর জায়গা আছে, যা স্থানীয়দের কাছে যতটুকু না ভালোলাগার, পর্যটকদের কাছে ততটাই বিস্ময়ের। পৃথিবী ঘুরে ঘুরে এসব সৌন্দর্য দেখা যেন কখনোই শেষ হওয়ার নয়। চোখ জুড়ানো এমনই কিছু বিস্ময়কর সুন্দর পর্যটনস্থলের মধ্যে রয়েছে নানা দেশের নানা শহরের দৃষ্টিনন্দন মেট্রো স্টেশন। চলুন এবারে এগুলোর গল্প আর ছবি দেখে নিই।

টলেডো মেট্রো স্টেশন, নেপলস

ইতালির নেপলসের টলেডো মেট্রো স্টেশন হচ্ছে বিশ্বের অন্যতম সুন্দর একটি জায়গা। এই স্টেশনের মূল আকর্ষণ হচ্ছে চোখ ধাঁধানো নীল মোজাইক, চারদিকে তাকালেই যার দেখা মিলবে।

এই স্টেশনের মূল আকর্ষণ হচ্ছে চোখ ধাঁধানো নীল মোজাইক
এই স্টেশনের মূল আকর্ষণ হচ্ছে চোখ ধাঁধানো নীল মোজাইক
উইকিপিডিয়া
মনে হবে আপনি বোধহয় সমুদ্রের নিচ দিয়ে যাচ্ছেন
মনে হবে আপনি বোধহয় সমুদ্রের নিচ দিয়ে যাচ্ছেন
উইকিপিডিয়া

স্টেশনে দাঁড়ালে আপনার মনে হবে আপনি বোধহয় সমুদ্রের নিচ দিয়ে যাচ্ছেন। এর পুরো দেয়াল ও ছাদ জুড়ে নীল আর টারকোয়েজ টাইলস দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে সমুদ্রের আমেজ আনার জন্য। সুসজ্জিত আলো যোগ করেছে বাড়তি এফেক্ট, স্টেশনটিকে করে তুলেছে সত্যিকারের ভূগর্ভস্থ এক মাস্টারপিস।

মস্কো স্টেশন, মস্কো

মস্কো মেট্রো সিস্টেম বিখ্যাত তার অলংকরণ আর সাজসজ্জার জন্য, যার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হচ্ছে খোদ রাজধানীর মস্কো স্টেশন।

সুবিশাল ছাদ, বিরাট ঝাড়বাতি, মার্বেলের স্তম্ভ আছে এখানে
সুবিশাল ছাদ, বিরাট ঝাড়বাতি, মার্বেলের স্তম্ভ আছে এখানে
উইকিপিডিয়া
এই স্টেশন ডিজাইন করা হয়েছে স্ট্যালিনীয় স্থাপত্য মেনে
এই স্টেশন ডিজাইন করা হয়েছে স্ট্যালিনীয় স্থাপত্য মেনে
উইকিপিডিয়া

১৯৫২ সালে চালু হওয়া এই স্টেশন ডিজাইন করা হয়েছে স্ট্যালিনীয় স্থাপত্য মেনে। এর সুবিশাল ছাদ, বিরাট ঝাড়বাতি, মার্বেলের স্তম্ভ এই জায়গাটির প্রাচীন ইতিহাসের কথাই মনে করিয়ে দেয়। এই স্টেশনের মোজাইক আর দৃষ্টিনন্দন কারুকাজ রাশিয়ান স্থাপত্যের ঐতিহ্য তুলে ধরে।

আর্টস এ মিতিয়ে, প্যারিস

জুলভার্নের কাজ থেকে উদ্বুদ্ধ হয়ে তৈরি করা প্যারিসের আর্টস এ মিতিয়েকে বলা যায় স্বপ্নের স্টিম পাওয়ার্ড স্টেশন। এই স্টেশনের ডিজাইন করেছেন বেলজিয়ান কমিক আর্টিস্ট ফ্র্যাংকয়েজ সুইটেন।

জুলভার্নের কাজ থেকে উদ্বুদ্ধ হয়ে তৈরি করা প্যারিসের আর্টস এ মিতিয়ে
জুলভার্নের কাজ থেকে উদ্বুদ্ধ হয়ে তৈরি করা প্যারিসের আর্টস এ মিতিয়ে
উইকিপিডিয়া
পুরো স্টেশন জুড়ে কপারের দেয়াল, পোর্টহোল, বড় বড় সাবমেরিনের গিয়ার রয়েছে
পুরো স্টেশন জুড়ে কপারের দেয়াল, পোর্টহোল, বড় বড় সাবমেরিনের গিয়ার রয়েছে
উইকিপিডিয়া

পুরো স্টেশন জুড়ে কপারের দেয়াল, পোর্টহোল, বড় বড় সাবমেরিনের গিয়ার রয়েছে। এগুলো দেখলে অভিভূত হতেই হয়। ভার্নের টুয়েন্টি থাউস্যান্ড লিগ আন্ডার সি থেকে এই স্টেশনের ব্যতিক্রমী ডিজাইনটি নেওয়া হয়েছে। যাত্রীরা এই জায়গায় এলে কল্পনা্র জগতে ডুব দেবেন তা নিশ্চিত!

টি সেন্ট্রালেন, স্টকহোম

স্টকহোমের টি সেন্ট্রালেন হচ্ছে শহরের মেট্রো সিস্টেমের কেন্দ্রবিন্দু। চিত্রকলাকে কীভাবে এক পাবলিক প্লেসে সার্থকভাবে ব্যবহার করা যায়, তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ হচ্ছে এর ব্লু লাইন প্ল্যাটফর্ম।

এই স্টেশনের মূল আকর্ষণ হচ্ছে সরাসরি বেডরকে আঁকা নীল ও সাদা মোটিফ
এই স্টেশনের মূল আকর্ষণ হচ্ছে সরাসরি বেডরকে আঁকা নীল ও সাদা মোটিফ
উইকিপিডিয়া
পুরো জায়গা জুড়ে বেশ স্নিগ্ধ ও স্বস্তিকর এক আবহ থাকে
পুরো জায়গা জুড়ে বেশ স্নিগ্ধ ও স্বস্তিকর এক আবহ থাকে
উইকিপিডিয়া

আর্টিস্ট পার ওলফ আলটেড এটি তৈরি করেছিলেন। এই স্টেশনের মূল আকর্ষণ হচ্ছে সরাসরি বেডরকে আঁকা নীল ও সাদা মোটিফ। র স্টোনের টানেলের দেয়ালে ফুল ও লতার যে নকশা রয়েছে, তাতে পুরো জায়গা জুড়ে বেশ স্নিগ্ধ ও স্বস্তিকর এক আবহ থাকে সব সময়।

ফর্মুসা বুলভার্দ স্টেশন, কাওশিয়াং, তাইওয়ান

ফর্মুসা বুলভার্দ স্টেশন হচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় কাঁচের স্থাপনা। একে বলে ডোম অফ লাইট অর্থাৎ আলোর গম্বুজ। এটি তৈরি করেছেন ইতালিয়ান শিল্পী নার্সিসাস কুয়াগ্লিয়াটা। গম্বুজটির ব্যাস ৩০ মিটার পর্যন্ত বিস্তৃত আর ২১৮০ বর্গ মিটার জায়গা জুড়ে আছে এটি।

ডোম অফ লাইট অর্থাৎ আলোর গম্বুজ বলা হয় একে
ডোম অফ লাইট অর্থাৎ আলোর গম্বুজ বলা হয় একে
উইকিমিডিয়া কমন্স
রঙিন গম্বুজ ও দারুণ ডিটেইলিং আছ এখানে
রঙিন গম্বুজ ও দারুণ ডিটেইলিং আছ এখানে
উইকিমিডিয়া কমন্স
এই গম্বুজ বা ডোম ৪ হাজার ৫ শত কাঁচের প্যানেল নিয়ে গঠিত
এই গম্বুজ বা ডোম ৪ হাজার ৫ শত কাঁচের প্যানেল নিয়ে গঠিত
উইকিমিডিয়া কমন্স

এই গম্বুজ বা ডোম ৪ হাজার ৫ শত কাঁচের প্যানেল নিয়ে গঠিত। এর নকশা জীবনের চারটি মূল উপাদান পানি, মাটি, আলো ও আগুনের গল্প বলে। রঙিন গম্বুজ ও দারুণ ডিটেইলিং একে ফটোগ্রাফির জন্য অন্যতম জনপ্রিয় এক জায়গা হিসেবে গড়ে তুলেছে এবং প্রতি মুহূর্তে যাত্রীদের বিমোহিত করে রাখছে তার সৌন্দর্য দিয়ে।

আতোভো স্টেশন, সেইন্ট পিটার্সবার্গ

রাশিয়ার আরও একটি রত্ন হচ্ছে সেইন্ট পিটার্সবার্গের আতোভো স্টেশন। এটি পরিচিত এর নিখুঁত নকশার জন্য। এই স্টেশনের মার্বেলের তৈরি স্তম্ভগুলো কাঁচ দিয়ে সাজানো। বিশাল এই জায়গাটি স্তম্ভের কারণে দিচ্ছে বিলাসবহুল আমেজ।

রাশিয়ার আরও একটি রত্ন হচ্ছে সেইন্ট পিটার্সবার্গের আতোভো স্টেশন
রাশিয়ার আরও একটি রত্ন হচ্ছে সেইন্ট পিটার্সবার্গের আতোভো স্টেশন
উইকিমিডিয়া কমন্স
এটি পরিচিত এর নিখুঁত নকশার জন্য
এটি পরিচিত এর নিখুঁত নকশার জন্য
উইকিমিডিয়া কমন্স

এখানকার ঝাড়বাতি ও মোজাইকে আছে লেনিনগ্রাদের আগ্রাসনের চিত্র। ঐতিহাসিক গুরুত্বের সঙ্গে সঙ্গে এর শৈল্পিক আবেদনও কিন্তু ভাবার বিষয়। আতোভো শুধু একটি মেট্রো ট্রানজিট পয়েন্ট নয়, রাশিয়ার শিল্পের প্রতি এক শ্রদ্ধাঞ্জলি স্বরূপ।

বান্ড সাইটসিইং টানেল, সাংহাই

শুধু একটি ঐতিহ্যবাহী মেট্রো স্টেশনই নয়, সাংহাইয়ের বান্ড সাইটসিইং টানেল এ অঞ্চলের অন্যতম প্রধান পর্যটনকেন্দ্র। মাটির নিচে এমন ট্রানজিট অভিজ্ঞতা অন্য কোথাও পাওয়া যায় না।

সাংহাইয়ের বান্ড সাইটসিিইং টানেল এ অঞ্চলের অন্যতম প্রধান পর্যটনকেন্দ্র
সাংহাইয়ের বান্ড সাইটসিিইং টানেল এ অঞ্চলের অন্যতম প্রধান পর্যটনকেন্দ্র
উইকিপিডিয়া
এই টানেলটি বিস্ময়কর আলোর খেলা দেখায়
এই টানেলটি বিস্ময়কর আলোর খেলা দেখায়
উইকিপিডিয়া

বান্ড ও পুডোংকে সংযুক্ত করা এই টানেলটি আলোর এমন খেলা দেখায় যেখানে একই সঙ্গে বিস্ময় আর মুগ্ধতার অনুভূতি পাওয়া যায়। এর দেয়াল জুড়ে রয়েছে এলইডি লাইট ও আয়না, যা সাধারণ দৃশ্যকে নানা ধরনের এফেক্ট দিয়ে পুরোপুরি রূপান্তরিত করে ফেলে। আর এর ফলে এটি হয়ে উঠেছে বিশ্বের সবচেয়ে সুন্দর মেট্রো স্টেশনওগুলোর একটি।

তথ্যসূত্র: ডি এন এ ইন্ডিয়া, উইকিপিডিয়া

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com