সৌদি আরব ২০৩৪ সালের ফিফা বিশ্বকাপের আয়োজক দেশ হিসেবে তাদের স্টেডিয়ামের নকশা এবং নির্মাণ পরিকল্পনার প্রথম দিকের কাজ প্রকাশ করেছে। প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীনভাবে বিশ্বকাপ আয়োজনের দায়িত্ব পাওয়া দেশটি তাদের প্রস্তুতি কার্যক্রমে দ্রুত অগ্রসর হচ্ছে। সৌদি আরবের জন্য এটি হবে প্রথম ফিফা বিশ্বকাপ আয়োজনের অভিজ্ঞতা।
সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে নির্মিত হতে যাচ্ছে কিং সালমান ইন্টারন্যাশনাল স্টেডিয়াম। ধারণক্ষমতা থাকবে প্রায় ৯২,০০০ দর্শকের, যা ফিফা বিশ্বকাপের উদ্বোধনী এবং ফাইনাল ম্যাচের ভেন্যু হিসেবে ব্যবহৃত হবে।
সৌদি ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সম্প্রতি একটি আধুনিক কম্পিউটার-জেনারেটেড ভিডিও প্রকাশ করেছে, যেখানে স্টেডিয়ামের নকশা ও অভ্যন্তরীণ পরিবেশের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। স্টেডিয়ামটি কিং আবদুল আজিজ পার্ক প্রকল্পের অংশ হিসেবে নির্মাণ করা হবে এবং ২০২৯ সালের মধ্যে কাজ শেষ করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
স্টেডিয়ামটি শুধু ফুটবল নয়, বরং অন্যান্য বহুমুখী ক্রীড়া ও আন্তর্জাতিক ইভেন্ট আয়োজনের জন্যও ব্যবহৃত হবে। এটি হবে সৌদি আরবের জাতীয় ক্রীড়া দল এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র।
২০৩৪ সালের ফিফা বিশ্বকাপের জন্য সৌদি আরব পাঁচটি শহরে ১৫টি স্টেডিয়ামে ম্যাচ আয়োজনের পরিকল্পনা করছে। রাজধানী রিয়াদে থাকবে আটটি স্টেডিয়াম। এছাড়া জেদ্দা, আল খোবার, আবহা এবং বিশ্ববিখ্যাত নতুন শহর নিওমেও বিশ্বকাপের ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। নিওম শহরটি নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৫০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
২০৩৪ সালের ফিফা বিশ্বকাপে ৪৮টি দল অংশগ্রহণ করবে। সৌদি আরবের এই আয়োজন ক্রীড়াঙ্গনে তাদের আন্তর্জাতিক অবস্থান শক্তিশালী করার পাশাপাশি বৈশ্বিক বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করতে সহায়তা করবে।
বিশ্বকাপ আয়োজনকে কেন্দ্র করে সৌদি আরব পরিবেশবান্ধব অবকাঠামো তৈরির প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। সব স্টেডিয়ামেই থাকবে সৌরশক্তি ব্যবহারের সুবিধা, আধুনিক কুলিং সিস্টেম, এবং টেকসই পরিবেশ রক্ষার উপযোগী প্রযুক্তি।
সৌদি আরবের এই বৃহৎ ক্রীড়া পরিকল্পনা কেবল খেলার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। এর মাধ্যমে দেশটি আন্তর্জাতিক ক্রীড়া মঞ্চে নিজেদের প্রভাব আরও বিস্তৃত করার পাশাপাশি তাদের ভিশন ২০৩০-এর অংশ হিসেবে পর্যটন ও অর্থনৈতিক বিকাশের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে চায়।
বিশ্বকাপ আয়োজনের মাধ্যমে সৌদি আরব একদিকে যেমন ক্রীড়াঙ্গনে নিজেদের অবস্থান দৃঢ় করতে চায়, অন্যদিকে দেশের অভ্যন্তরীণ এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আর্থসামাজিক উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করাও তাদের মূল লক্ষ্য।