বিয়ের পর সময় পেলেই কেউ বিদেশে, কেউ বা কাছে-পিঠে ঘুরতে যান। নবদম্পতির ঘুরতে যাওয়াটা রীতি হয়ে দাঁড়িয়েছে। যাকে আমরা বাংলায় বলে থাকি মধুচন্দ্রিমা। আর ইংরেজিতে বলি হানিমুন। কিন্তু এই ঘুরতে যাওয়াকে কেন হানিমুন বা মধুচন্দ্রিমা বলা হয় কখনও ভেবে দেখেছেন। নকুন বিয়ের পর প্রেম বা ভালোবাসার মধু থাকলেও চাঁদের সঙ্গে কোন সম্পর্কই নেই। তারপরও একে ঘুরতে যাওয়াতে বলা হয় মধুচন্দ্রিমা বা হানিমুন।
কেন বিয়ের পর ঘুরতে যাওয়াকে হানিমুন বলা হয় ? বিভিন্ন তথ্য ও ইতিহাস ঘেটে একাধিক কারণ উঠে এসেছে। সেই সকল তথ্যই এই প্রতিবেদনে তুলে ধরা হল। চলুন জানা যাক বিয়ের পর ঘুরতে যাওয়ার সঙ্গে কীভাবে হানি ও মুন শব্দটি জুড়ে গেল। ‘হানিমুন’ শব্দের উৎস ব্যাবিলনে। প্রাচীন ব্যাবিলনে বিয়ের পরে পাত্রীর বাবা পাত্রকে তার চাহিদা মতো মধু দিয়ে তৈরি মদ দিতেন। এই মদ থেকেই এসেছে ‘হানি’। ব্যাবিলনের ক্যালেন্ডার ছিল চান্দ্র। সেখান থেকে ‘মুন’ এসে থাকতে পারে বলে মনে করা হয়।
এছাডা প্রাচীন হুন রাজা অ্যাটিলার সময় থেকে একটি রীতি প্রচলিত ছিল। বিয়ের পরে একমাস প্রতিদিন একপাত্র করে মধু দিয়ে তৈরি মদ খেতে হত নবদম্পতিকে। নতুন সম্পর্ক সুখের ও মধুর করাপ জন্য এই রীতি ছিল। সেখান থেকেও হানিমুনের উৎপত্তি বলে মনে করা হয়। আরও একটি ব্যাখ্যায় বলা হয়, মুন শব্দটি ঋতুচক্রের প্রতীক। বিষয়টির সঙ্গে যৌনতার যোগ রয়েছে। বিয়ের পর পর সবকিছু মধুর মতো লাগলেও সব সময় তা নাও লাগতে পারে। এজন্য বিয়ের পরপরই যে একান্ত সময়টি দম্পতিরা সবাইকে পাশ কাটিয়ে যাপন করে সেটাকে ‘হানিমুন’ বলা হয়।
আরও একটি ধারণা রয়েছে। হানিমুন শব্দটি এসেছে ইংরেজি শব্দ Hony Moone থেকে। বিয়ের পর মাধুর্য ও সুখ বোঝাতে Hony শব্দটি, আর Moone-কে ব্যবহার করা হয় চাঁদ হিসেবে। আর চাঁদ মানে সময় হিসেবে দেখানো হয়। মধু মানে সুখ আর চাঁদ মানে সময়, সেখান তেকেই মধুচন্দ্রিমা বা হানিমুন বলা হয়। তবে কারণ যাই হোক না কেন, নাম যাই হোক না কেন, বিয়ের পর নব দম্পতির একে অপরকে আরও ভালোভাবে চেনার জন্য, জানার জন্য, দুজনে একসঙ্গে কোয়ালিটি টাইম কাটানোর জন্য, নতুন সম্পর্কের ভিত মজবুত করার জন্য এই ঘুরতে যাওয়ার গুরুত্ব যথেষ্ট।