আকাশ যান আবিষ্কারের আগে, জাহাজে করেই এক দেশ থেকে অন্য দেশে পাড়ি জমানোর প্রচলন ছিলো। তারও আগে ঘোড়ায় চড়ে, পায়ে হেঁটে ভ্রমণেরও ইতিহাস রয়েছে। তবে, আধুনিক এই যুগে প্রযুক্তির কল্যাণে সেসব এখন কেবলই অতীত।
পুরনো সেই অতীত যেন ফিরিয়ে আনলেন মিসরের অভিযাত্রিক ওমর নক। কোনো প্রকার আকাশযানে না চড়েই মিসর থেকে পৌঁছেছেন জাপানে। ২৭৫ দিন আগে বাড়ি ছাড়া ওমর গত মাসে পৌঁছান জাপানে। দীর্ঘ এই যাত্রা পাড়ি দিয়েছেন সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইরান, আফগানিস্তান, তাজিকিস্তান, উজবেকিস্তান, কাজাখস্তান, কিরগিজস্তান, চীন ও দক্ষিণ কোরিয়া।
মিসরীয় পর্যটক ওমর নক বলেন, এই যাত্রার শুরুর দিনটাই সবচেয়ে কঠিন ছিলো। প্রথম পা ফেলার সময়া আমার গন্তব্য ছিলো অনিশ্চয়তার পথে। যেসব দেশে আমাকে যেতে হয়ে সেগুলো সম্পর্কে আমার কোন ধারনাই ছিলো না। ইরান, আফগানিস্তানের মতো দেশ যেগুলোতে খুব বেশি পর্যটক যায় না সেগুলোতেও যেতে হয়েছে।
ওমরকে অতিক্রম করতে হয়েছে ৪৬ হাজার ২৩৯ কিলোমিটার পথ, যার পৃথিবীর পরিধির চাইতেও বেশি। কখনও ফেরি, আবার কখনও ট্রেনে চড়েছেন। উট, ঘোড়ায় তো চড়েছেন কখনও কখনও পায়ে হেঁটেও পাড়ি দিয়েছেন দীর্ঘ পথ।
প্রতিদিন গড়ে, ২০ ডলার খরচ হয়েছে তার। এরমধ্যে আফগানিস্তানে দুই সপ্তাহ থাকলেও ব্যয় করেছেন মাত্র ৮৮ ডলার। সামাজিক মাধ্যমে, ভিডিও কন্টেন্ট বানিয়ে নিয়মিতই দীর্ঘ এই ভ্রমণের নানা অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন ওমর।
ওমর আরও বলেন, কখনও ক্যাম্পে থেকেছি আবার কখনও পায়ে হেঁটেছি। এই ভ্রমণের ক্ষেত্রে আমার বাজেট মাথায় রাখতে হয়েছে। ফুটপাতের খাবার খেয়েছি। হোটেলে এক রুমে ২৫/২৬ জনের সাথে থেকেছি। গড়ে প্রতিদিন ২০ ডলার বাজেট ছিলো আমার।
ওমরের বিমান ছাড়া ভ্রমণের এই অভিযান অবশ্য শেষ হচ্ছে জাপানেই। টোকিও থেকে বিমানে চড়ে ফিরবেন বাড়ি। আড়াইশ’ দিনে যে পথ পাড়ি দিয়েছেন তা বিমানে অতিক্রম করতে লাগবে মাত্র ১২ ঘণ্টা।