শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৩০ অপরাহ্ন

বিমানের পাইলট হবেন কীভাবে

  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ৬ এপ্রিল, ২০২৩

আকাশে ওড়ার স্বপ্ন মানুষের আদিকাল থেকেই। মানুষ যখন পাখির মতো উড়তে ব্যর্থ হয়েছে, তখন সে ডানা আবিষ্কার করে। যা আজকের বিমানে রূপ নিয়েছে। শৈশবে অনেক শিশু-কিশোর বৈমানিক হওয়ার স্বপ্নে দেখে। কিন্তু সঠিক নির্দেশনা আর পরামর্শের অভাবে অনেকেই কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যে পৌঁছাতে পারে না।

পাইলট হওয়ার যোগ্যতা

উড়োজাহাজ বা বিমানের  পাইলট হতে চাইলে এইচএসসি পর্যায়ে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে পদার্থ, গণিতসহ ন্যূনতম জিপিএ ২.৫০ পেতে হবে। বয়স ন্যূনতম ১৬ বছর এবং শারীরিকভাবে ফিট হতে হবে। এছাড়া ইংরেজি বলা ও লেখায় দক্ষ হতে হবে।

pilot

যারা স্নাতক শ্রেণীতে পড়ছেন বা পাস করেছেন, তারাও পাইলট কোর্সে ভর্তির আবেদন করতে পারবেন। এইচএসসির পর ভর্তি হতে হবে দেশের বা বাইরের কোনো ফ্লাইং ট্রেনিং একাডেমিতে। প্রথমত, গ্রাউন্ড ও ফ্লাইং প্রশিক্ষণ শেষ করে প্রাইভেট পাইলট লাইসেন্সের (পিপিএল) জন্য আবেদন করতে হয়।

বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচলকারী কর্তৃপক্ষের (ক্যাব) নিয়ম অনুসারে লাইসেন্স পেতে কমপক্ষে ৪০ ঘণ্টা ফ্লাইং করতে হয়। ন্যূনতম বয়স হতে হয় ১৭ বছর। পিপিএল পাওয়ার পর আবেদন করতে হয় কমার্শিয়াল পাইলট লাইসেন্সের (সিপিএল) জন্য। এ ক্ষেত্রে ফ্লাইং করতে হয় ১৫০ ঘণ্টা। সিপিএলের জন্য ন্যূনতম বয়স হতে হবে ১৮ বছর। এ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে দেশ-বিদেশের এয়ারলাইন্সে ফার্স্ট অফিসার বা কো-পাইলট হিসেবে আবেদন করা যাবে।

pilotপাইলট হওয়ার পরীক্ষা

পাইলট কোর্সে ভর্তি হতে সবার আগে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। এ পরীক্ষা হয় দুইটি ধাপে- মৌখিক ও স্বাস্থ্য পরীক্ষা। মৌখিক পরীক্ষায় সাধারণত বিজ্ঞান ও সাধারণ জ্ঞানের ওপর প্রশ্ন করা হয়। এটি সংশ্লিষ্ট একাডেমি নিয়ে থাকে। আর স্বাস্থ্য পরীক্ষা হয় সিভিল এভিয়েশন অনুমোদিত ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোতে।

গ্রাউন্ড কোর্স

ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণরা পাইলট কোর্স করার যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন। তবে পাইলট হতে পেরোতে হবে আরো তিনটি ধাপ। গ্রাউন্ড কোর্সের পর পেতে হয় এসপি বা স্টুডেন্ট পাইলট লাইসেন্স। এরপর পিপিএল (প্রাইভেট পাইলট লাইসেন্স), আর সবশেষে পেতে হয় সিপিএল বা কমার্শিয়াল পাইলট লাইসেন্স।

তিন মাসের থিওরি কোর্সে বিমানের কারিগরি এবং এয়ার ল বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। এছাড়া এয়ারক্রাফট জেনারেল নলেজ, ফ্লাইট পারফরম্যান্স অ্যান্ড প্লানিং, হিউম্যান পারফরম্যান্স অ্যান্ড লিমিটেশন, নেভিগেশন, অপারেশনাল প্রসিডিউর এবং প্রিন্সিপল অব ফ্লাইটের মতো বিষয়গুলো সম্পর্কে ধারণা দেয়া হয়।

pilotউড়াল দেওয়া 

গ্রাউন্ড কোর্সের পর সংশ্লিষ্ট একাডেমি লিখিত পরীক্ষা নেয়। পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের সরাসরি বিমান চালনার জন্য সিভিল এভিয়েশনে এসপিএল বা স্টুডেন্ট পাইলট লাইসেন্সের আবেদন করতে হয়।

আবেদনের পর সিভিল এভিয়েশন অথরিটি (সিএএবি) পরীক্ষা নেয়। সিএএবির পরীক্ষা এবং সিএমবির (সার্টিফায়েড বাই দ্য মেডিক্যাল বোর্ড) স্বাস্থ্য পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেই কেবল এসপিএল দেয়া হয়। এ লাইসেন্স দিয়ে ৪০ থেকে ৫০ ঘণ্টা বিমান চালনার সার্টিফিকেট অর্জন করে পিপিএল বা প্রাইভেট পাইলট লাইসেন্সের আবেদন করতে হয়। এ সময় তিন মাসের থিওরি ক্লাসের সাথে একটি ক্রস কান্ট্রি ফ্লাইট (এক জেলা থেকে অন্য জেলায় যাওয়া-আসা) চালানোর অভিজ্ঞতাও অর্জন করতে হয়। এরপর আবারো লিখিত এবং স্বাস্থ্য পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেই মিলবে প্রাইভেট পাইলট লাইসেন্স।

এ লাইসেন্স দিয়ে কোনো বাণিজ্যিক বিমান চালানো যায় না। তাই পাইলট হিসেবে চাকরির জন্য প্রয়োজন সিপিএল বা কমার্সিয়াল পাইলট লাইসেন্স। এ লাইসেন্স পেতে ১৫০ থেকে ২০০ ঘণ্টা বিমান চালানোর অভিজ্ঞতা থাকতে হয়।

এছাড়া উত্তীর্ণ হতে হয় লিখিত ও স্বাস্থ্য পরীক্ষায়। পাশাপাশি থাকতে হয় একটি ক্রস কান্ট্রি ফ্লাইট চালানোর অভিজ্ঞতা ও তিন মাসের থিওরি কোর্সের সার্টিফিকেট। সিপিএল পাওয়া মানেই নিশ্চিত চাকরি।

pilotপাইলটদের কাজের ক্ষেত্র 

দেশে ও বিদেশে দক্ষ পাইলটের বেশ চাহিদা রয়েছে। আন্তর্জাতিক বিমান পরিবহন সংস্থা দি ইন্টারন্যাশনাল এয়ার ট্রান্সপোর্ট অ্যাসোসিয়েশনের এক রিপোর্টে জানা গেছে, প্রতি বছর ১৭ হাজার নতুন পাইলট প্রয়োজন হচ্ছে। এ থেকেই বোঝা যাচ্ছে, আন্তর্জাতিক পরিসরে দক্ষ পাইলটের প্রয়োজন কতটুকু। এটি এমন এক পেশা, যেখানে চাকরিই প্রার্থীকে খোঁজে।

তথ্যসূত্র: ইন্টারনেট

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com