বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সে এক ক্যাপ্টেনের বিরুদ্ধে চলন্ত উড়োজাহাজে নারী কেবিনক্রুকে শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছে। সংশ্লিষ্টরা জানান, অতি সম্প্রতি ঢাকা থেকে মাসকাটগামী বিমানের ফ্লাইটে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় রাষ্ট্রায়ত্ত বিমান সংস্থার ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী কেবিন ক্রু।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিমানের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, গত ৩ নভেম্বর ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়া বিজি ৭২১ নম্বর ফ্লাইটে ইউসুফ মাহমুদ নামের এক ক্যাপ্টেন ককপিটের এক নারী কেবিন ক্রুকে যৌন হয়রানি করেন।
এ ঘটনায় গত ৭ নভেম্বর বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী ক্রু। লিখিত অভিযোগ সূত্র জানা গেছে, ক্যাপ্টেন ইউসুফ ওই নারী কর্মীকে ককপিটে ডেকে নিয়ে তার শরীর স্পর্শ করেন এবং জোর করে কমলা খাইয়ে দেন। এ ঘটনায় বিমান কর্তৃপক্ষের নির্দেশে পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির প্রধান করা হয়েছে বিমানের মহাব্যবস্থাপক ও জনসংযোগ কর্মকর্তা বোসরা ইসলামকে।
অভিযোগ উঠেছে, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সে কর্মরত কিছু কর্মী তাদের নারী সহকর্মী ছাড়াও নারী যাত্রীদের যৌন হয়রানি করে থাকে। এর আগেও বিমানের ফ্লাইটে যৌন হয়রানির ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় অনেক নারী কর্মী আতঙ্কিত বলে ভুক্তভোগীরা জানান।
বিমান ফ্লাইট ক্যাটারিং সেন্টারের (বিএফসিসি) এক নারী প্রশিক্ষণার্থী এবং বেকারি ইউনিটের এক নারী কর্মী সম্প্রতি যৌন হয়রানির শিকার হন। তবে ভুক্তভোগী অনেকেই ঘটনা প্রকাশ করেন না। আবার সাহস করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ বিচার পান না। ফলে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন ভুক্তভোগী নারীরা। সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
বিএফসিসিতে নারী প্রশিক্ষণার্থীকে যৌন হেনস্থায় অভিযুক্ত ব্যক্তিরা হলেন- ফুড সেফটি অ্যান্ড হাইজিন ম্যানেজার ও কুকিং কোর্সের প্রশিক্ষক রফিকুল ইসলাম এবং নিরাপত্তা সুপারভাইজার মো. মামুন। তবে তাঁদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বিমান সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, গত বছর ১১ জুলাই সিলেট থেকে আরব আমিরাতের শারজাহগামী বিজি ২৫১ নম্বর একটি ফ্লাইটে বিজনেস ক্লাসের এক নারী যাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ ওঠে লুৎফর রহমান ফারুকী নামে এক কেবিন ক্রুর বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় শাস্তিস্বরূপ ফারুকীর পদাবনতি করা হয়েছে।