সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর দেশের অর্থনীতি সংস্কার কার্যক্রমে বড় পরিবর্তন এনেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। দায়িত্ব নেওয়ার ৫০ দিনের মধ্যে বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী থেকে এখন পর্যন্ত হাজার কোটি ডলারের বেশি ঋণের আশ্বাস পেয়েছেন। এছাড়া প্রধান উপদেষ্টার প্রথম সফরেই মিলেছে প্রায় পৌনে সাত বিলিয়ন ডলার পাওয়ার আশ্বাস। এতে দেশের রিজার্ভ বৃদ্ধির পাশাপাশি সামগ্রিক অর্থনীতিতে ইতিবাচক পরিবর্তনের সম্ভবনা রয়েছে।
জানা যায়, বাংলাদেশ সংস্কারে ৩৫০ কোটি ডলার ঋণ সহায়তা দিতে রাজি হয়েছে বিশ্বব্যাংক। এর মধ্যে নতুন ঋণ ২০০ কোটি ডলার আর বাকি ১৫০ কোটি ডলার আসবে চলমান প্রকল্প এগিয়ে নিতে। এছাড়া চলমান ৪৭০ কোটি ডলার ঋণ কর্মসূচির বাইরে বাংলাদেশকে আরও ৩০০ কোটি ডলার দেয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। যুক্তরাষ্ট্রও বাংলাদেশকে দিচ্ছে ২০ কোটি ডলারের বেশি উন্নয়ন সহায়তা।
পাশাপাশি, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে বাংলাদেশকে ৪০ কোটি ডলার ঋণ দেবে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। ব্যাংকসহ আরও কয়েকটি খাতে সংস্কারে সংস্থাটি থেকে ২০২৫ সালের মার্চ নাগাদ মিলতে পারে আরও ৫০ কোটি ডলার। আগামী তিন বছরে বাংলাদেশকে ৪০০ থেকে ৫০০ কোটি ডলার ঋণ সহায়তা দেবে ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক। নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতের উন্নয়নে জার্মানি আগামী ১০ বছরে বাংলাদেশকে দেবে ১০০ কোটি ইউরো।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এ ধরনের বাজেট সহায়তা ও পলিসি বেইজড ঋণ দেশের রিজার্ভ বাড়াতে ভূমিকা রাখে। নির্দিষ্ট কোনো প্রকল্পে ব্যবহারেরও বাধ্যবাধকতা থাকে না। এছাড়া সরকারের বৈদেশিক সূত্র থেকে ঋণ নেয়া দেশের বেসরকারি খাতের জন্য ভালো বলেই মনে করেন ব্যবসায়ীরা। তবে, পরিশোধের চাপ সামলাতে রফতানি আয় ও রেমিট্যান্স বাড়াতে ঋণের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিতের তাগিদ তাদের।
এ বিষয়ে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি আশরাফ আহমেদ বলেন, বৈদেশিক ঋণ নেয়াটা আমাদের দেশের বেসরকারি খাতের জন্য ভালো। তাহলে দেশীয় ব্যাংক খাতের ওপর চাপটা পড়ে না। তবে খেয়াল রাখতে হবে ঋণ পরিশোধ করতে গেলে রফতানির যে গ্রোথ দরকার, সেটার জন্য আমরা ইনভেস্টমেন্ট করতে পারছি কিনা বিষয়টিও দেখতে হবে।