বাহামা, আনুষ্ঠানিকভাবে কমনওয়েলথ অফ দ্য বাহামাস নামে পরিচিত, আটলান্টিক মহাসাগরে অবস্থিত একটি চমৎকার দ্বীপপুঞ্জ। এটি প্রায় ৭০০টি দ্বীপ ও ২,৪০০-এর বেশি কেয় দ্বীপ নিয়ে গঠিত। বাহামার মনোমুগ্ধকর সৈকত, ফিরোজা নীল জলরাশি এবং উষ্ণ আবহাওয়া একে পর্যটকদের জন্য একটি প্রিয় গন্তব্যে পরিণত করেছে।
বাহামা ক্যারিবিয়ান অঞ্চলের উত্তরে এবং ফ্লোরিডার দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত। এর প্রধান শহর ও রাজধানী নাসাউ, যা নিউ প্রভিডেন্স দ্বীপে অবস্থিত। বাহামার মোট ভূমি এলাকা প্রায় ১৩,৯৪৩ বর্গকিলোমিটার এবং এটি প্রায় ৩ লাখ মানুষের আবাসস্থল।
বাহামার ইতিহাস শুরু হয় খ্রিস্টপূর্ব প্রায় ১০০০ সালে, যখন লুকায়ান ইন্ডিয়ানরা এই অঞ্চলে বসতি স্থাপন করেছিল। ১৪৯২ সালে ক্রিস্টোফার কলম্বাস বাহামায় প্রথম পদার্পণ করেন। দীর্ঘদিন স্পেনের অধীনে থাকার পর, এটি ব্রিটিশ উপনিবেশে পরিণত হয় ১৭১৮ সালে। অবশেষে, ১৯৭৩ সালের ১০ জুলাই, বাহামা স্বাধীনতা অর্জন করে এবং একটি সার্বভৌম দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে।
বাহামার সংস্কৃতি বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর মিশ্রণে গঠিত। এখানকার মানুষের জীবনধারা অনেকটাই উৎসবমুখর। ‘জানকানো’ নামে পরিচিত একটি ঐতিহ্যবাহী উৎসব তাদের সংস্কৃতির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এটি সাধারণত বড়দিন এবং নতুন বছরের সময় উদযাপন করা হয়। বাহামার সংগীত, বিশেষ করে “ক্যালিপসো” এবং “রেগে”, বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয়।
বাহামার অর্থনীতির মূল ভিত্তি পর্যটন। পর্যটকদের জন্য আকর্ষণীয় স্থানগুলোর মধ্যে রয়েছে:
বাহামার স্থানীয় খাবার সমুদ্রের তাজা উপাদানের ওপর নির্ভরশীল। “কনক সালাদ,” “ক্র্যাকড কনক,” এবং “গুয়াভা ডাফ” এখানকার জনপ্রিয় খাবার। তাছাড়া, বাহামার বিখ্যাত “বাহামা মমা” ককটেলটি এখানে ভ্রমণে আসা পর্যটকদের জন্য একটি অবশ্যই চেখে দেখার পানীয়।
বাহামার জলবায়ু উষ্ণ এবং গ্রীষ্মমণ্ডলীয়। সারা বছরই এখানে ভ্রমণ করা সম্ভব, তবে নভেম্বর থেকে এপ্রিল মাস পর্যন্ত শীতল ও আরামদায়ক আবহাওয়া থাকার কারণে এটি ভ্রমণের সেরা সময়।
বাহামা শুধু সৈকত নয়, বরং জলজ জীববৈচিত্র্য, প্রবাল প্রাচীর এবং প্রাকৃতিক গুহাগুলোর জন্যও বিখ্যাত। এই দেশটি ডাইভিং, স্নরকেলিং এবং মাছ ধরার মতো কার্যক্রমের জন্য এক বিশেষ গন্তব্য।
বাহামা তার সৌন্দর্য, সংস্কৃতি এবং আতিথেয়তার জন্য বিশ্বজুড়ে পরিচিত। যারা প্রকৃতি, বিলাসবহুল বিশ্রাম এবং অ্যাডভেঞ্চার খুঁজছেন, তাদের জন্য বাহামা এক স্বপ্নের স্থান।