বিয়ের দিনটা সকলের জন্যই খুব স্পেশ্যাল। অনেকেই বহু বছর ধরে জীবনে এই সময়ের জন্য অপেক্ষা করে থাকে। সকলেই চায় যে, এই একটি দিন চির স্মরণীয় হয়ে থাকুক। ফলে খুব স্বাভাবিক ভাবেই বিয়ের জায়গা, ভেন্যু, খাওয়া দাওয়া… সব কিছুর উপরেই জোর দেওয়া উচিত যাতে সব আয়োজন ভীষণ স্পেশ্যাল হয়। এবং এই সব কিছুই করার আগেও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল বিয়ের বাজেট করা।
কিন্তু আমরা যদি আপনাকে বলি যে, ভারতে এমন অনেক বিয়ের ভেন্যু রয়েছে, যেখানে এমনকি মাত্র ১০০ জন অতিথির খরচও আপনার জীবনের পুরো সঞ্চয়টা হতে পারে, তার পরেও আপনি কি সেখানেই বিয়ে করতে চান? আসলে মুহূর্তকে স্পেশ্যাল করার জন্য সব কিছু করা যায়। তাই না? তা হলে চলুন আজকে ভারতের সবচেয়ে ব্যয়বহুল কিছু বিয়ের ভেন্যু সম্পর্কে চটজলদি জেনে নেওয়া যাক।
নিমরানা ফোর্ট ভারতের সবচেয়ে সুন্দর এবং ব্যয়বহুল ওয়েডিং ডেস্টিনেশনগুলির মধ্যে একটি। পনেরো শতকে নির্মিত এই রিসর্টটি সামনের দিকটি ১২টি ভিন্ন স্তরে নির্মিত। আপনি যদি একটি ব্যয়বহুল এবং রাজকীয় জায়গায় বিয়ে করতে চান, তাহলে নিমরানা রিসর্ট আপনার জন্য সেরা পছন্দ হতে পারে। রিসর্টের ছাদটি খুবই বিলাসবহুল, এখানে অনেকগুলি গ্র্যান্ড রুম এবং বিলাসবহুল স্যুট পাওয়া যায়। আপনি যদি মোট ২ দিনের জন্য বিয়ের ব্যবস্থা করতে চান নিমরানা ফোর্টে, তা হলে আপনার খরচ হবে ২০ লক্ষ টাকা থেকে ৮০ লক্ষ টাকার মধ্যে।
বিশ্বের বৃহত্তম ব্যক্তিগত আবাসগুলির মধ্যে অন্যতম হল উমেদ ভবন। এটি রাজস্থানের যোধপুরে অবস্থিত। বেলেপাথরের এই প্রাসাদটি সুন্দর ভাবে ডিজাইন করা হয়েছে। এখানকার বড় পার্ক এবং বিলাসবহুল হল প্রাসাদের সৌন্দর্য বাড়িয়েছে। এই প্রাসাদের স্থাপত্য আপনাকে রাজস্থানের রাজকীয় ঐতিহ্যের কথা মনে করিয়ে দেবে। এই প্রাসাদ থেকে ব্লু সিটির সুন্দর দৃশ্য, বালির টিলা এবং দেশের বৃহত্তম মেহরানগড় দুর্গের অসাধারণ দৃশ্য দেখা যায়। প্রাসাদটির তিনটি মহল রয়েছে, প্রথমটি জাদুঘর, রাজপরিবারের জন্য বাসস্থান, তাজ গ্রুপের বিলাসবহুল হোটেল। এই জায়গাটি ভারতের সেরা এবং সবচেয়ে ব্যয়বহুল বিয়ের ভেন্যুর মধ্যে অন্যতম। আপনি কেমন সুযোগ সুবিধে গ্রহণ করবেন, তার উপরে ভিত্তি করে উমেদ ভবনে বিয়ের খরচ হতে পারে ৫০ লক্ষ টাকা থেকে ১ কোটি টাকা পর্যন্ত। প্রসঙ্গত বলিউডের ‘দেশি গার্ল’ প্রিয়ঙ্কা চোপড়াও কিন্তু এখানেই নিক জোনাসের সঙ্গে নিজের বিয়ে সেরেছিলেন।
রাজস্থানের রাজকীয় প্রাসাদগুলির মধ্যে অন্যতম হল গোলাপি শহর বা দ্য পিঙ্ক সিটি অর্থাৎ জয়পুরের রাজকীয় জয় মহল প্রাসাদ। ১৮ একর জায়গা জুড়ে মুঘল গার্ডেনের মধ্যে অবস্থিত এই ঐতিহ্যবাহী সম্পত্তিটি ইন্দো-সরসেনিক শৈলীতে নির্মিত। ১৮ একর ল্যান্ডস্কেপের সুবিশাল মুঘল গার্ডেনের মধ্যে অবস্থিত জয়পুরের এই জয় মহল প্রাসাদটি বিয়ে করার জন্য এবং হনিমুনে বেড়াতে আসা দম্পতিদের জন্য উপযুক্ত। প্রাসাদে সারা দিন কাটানোর পাশাপাশি আউটডোরে যেমন ঘুরতে পারবেন, তেমনই আবার সুবিশাল ইন্ডোর স্পেসও রয়েছে।
আপনি যদি সমুদ্রের ধারে সূর্যাস্তকে সাক্ষী রেখে নিজের বিয়ের স্বপ্ন দেখে থাকেন, তা হলে সেই স্বপ্নকে সত্যি করে তুলতে পারে গোয়ার পার্ক হায়াত। সমুদ্র তীরবর্তী সুবিশাল লন, মনোমুগ্ধকর বনের ল্যান্ডস্কেপ এবং সুন্দর করে সাজানো মার্জিত রুচিসম্পন্ন বোটহাউস… সব কিছুর মধ্যেই পার্ক হায়াত একটি স্বপ্নময় গন্তব্য হয়ে উঠেছে। বিয়ে করতে যান বা প্রাণের প্রিয় সঙ্গীকে নিয়ে হনিমুনে যেতে চান… গোয়ার পার্ক হায়াত আপনার বিশেষ দিনগুলিকে চির স্মরণীয় করে রাখবে।
হায়দরাবাদের ফলাকনুমা প্রাসাদ ভারতের সবচেয়ে সুন্দর এবং বাজেট ফ্রেন্ডলি ওয়েডিং ডেস্টিনেশনগুলির মধ্যে অন্যতম। হায়দরাবাদ শহর থেকে ২০০০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত এই ঐতিহাসিক প্রাসাদটি আপনাকে নিজাম আমলের কথাও মনে করিয়ে দেবে। এ ছাড়াও এই দুর্দান্ত প্রাসাদটি ৩২ একর জমির উপরে বিস্তৃত যেখানে ৬০টিরও বেশি কক্ষ এবং থাকার জন্য বিলাসবহুল স্যুট রয়েছে। এটি একটি ফাইভ স্টার রেটেড বিলাসবহুল হোটেল যা ১০০ বছরেরও বেশি সময় আগে তৈরি করা হয়েছিল। আপনার প্রয়োজনীয় কক্ষের সংখ্যার উপর নির্ভর করে এই প্রাসাদের দাম মাত্র ২০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে পাঁচ লক্ষ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।