যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশ ২০০ কোটি ডলারের বেশি পণ্য আমদানি করে থাকে। এর মধ্যে খাদ্যশস্য, বীজ, সয়াবিন, তুলা, গম, ভুট্টা, যন্ত্রপাতি, লোহা, ইস্পাত ও পেট্রোলিয়াম পণ্য রয়েছে। তবে এসব পণ্যের বাইরেও বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তিপণ্য, শিক্ষা, পর্যটনসহ নানা ক্ষেত্রে বড় বাজার রয়েছে। যেসব মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর যুক্তরাষ্ট্র কয়েক হাজার কোটি টাকা পাচ্ছে।
বিশ্বের সবচেয়ে উন্নত দেশ যুক্তরাষ্ট্র পর্যটন, পড়াশুনা, উন্নত জীবন-যাপনের জন্যে পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশীদের কাছেও পছন্দের শীর্ষে। প্রতিবছরই বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণ করে থাকেন ২০ থেকে ২৫ হাজার বাংলাদেশী, পড়াশুনার জন্যও সর্বোচ্চ সংখ্যক শিক্ষার্থী যাচ্ছে দেশটিতে। এছাড়া বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো প্রতিবছর হাজার হাজার কোটি টাকা আয় করছে। আর বিগত এক দশকের বেশি সময়ে পতিত ফ্যাসিস্ট সরকার আওয়ামী সরকারের আমলে বাংলাদেশ থেকে লাখ লাখ কোটি টাকা পাচার হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। যা ওই দেশের জমি, বাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০২৩-২০২৪ শিক্ষাবর্ষে বাংলাদেশ থেকে রেকর্ড সংখ্যক ১৭ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমিয়েছেন পড়াশুনার জন্য। তাদের জন্য প্রতি বছর বৈধ চ্যানেলে যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো হচ্ছে ৩০ কোটি ডলার। তথ্য-প্রযুক্তির এই যুগে নেতৃত্ব দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো। বিশেষ করে সময়ের জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক, ম্যাসেঞ্জার, লিংকডইন, এক্স, ইনস্ট্রাগ্রাম, সার্চ ইঞ্জিন গুগল, জনপ্রিয় সফটওয়্যার মাইক্রোসফট, ভিডিও প্ল্যাটফর্ম ইউটিউবের মতো প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশে তুমুল জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশে ফেসবুক, ম্যাসেঞ্জারসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর ব্যবহারকারীই রয়েছে ১০ কোটির বেশি। ফলে বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানগুলোও বিজ্ঞাপন, প্রচারণা (বুস্ট এর মাধ্যমে) করার ক্ষেত্রে বিপুল পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করছে এসব মাধ্যমে। ভ্যাট নিবন্ধন, বাংলাদেশে অফিস না থাকা এবং বৈধ চ্যানেলে এসব অর্থ পরিশোধ না করায় সঠিক পরিসংখ্যান জানা যায়নি। তবে তথ্য-প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের ধারণা কেবল ফেসবুকে প্রতিবছর বিনিয়োগ হচ্ছে ২ থেকে ৩ হাজার কোটি টাকা। ইউটিউবসহ অন্যান্য মাধ্যমেও একই পরিমাণ ব্যয় করছে বাংলাদেশ। যার প্রায় পুরোটায় যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রে।
অন্যদিকে বাংলাদেশি পর্যটকদের জন্য সবচেয়ে আকর্ষণীয় স্থান যুক্তরাষ্ট্র। অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশ (আটাব) এর তথ্য অনুযায়ী প্রতিবছর প্রায় ২০ থেকে ২৫ হাজার বাংলাদেশি পর্যটক যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণ করে থাকেন। যারা যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণকালে গড়ে প্রায় ৪ থেকে ৫ হাজার ডলার ব্যয় করে থাকেন।
এছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ থেকে যে বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচার হয়েছে তার সিংহভাগই পাচার করা হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। পতিত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের দেড় দশকে বাংলাদেশ থেকে দুর্নীতিবাজ রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, আর্থিক খাতের ক্রীড়নক, আমলাদের মধ্যে একধরনের অনৈতিক চক্র ঘুষ-দুর্নীতি, আর্থিক অপরাধ, মিথ্যা ঘোষণার আড়ালে বাণিজ্য, ব্যাংক থেকে চুরি করা টাকা, খেলাপি ঋণের অর্থ, রাজনৈতিক ক্ষমতার অপব্যবহার, প্রকল্পের খরচ বাড়িয়ে দেখানো, শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারি, কর ফাঁকি এসব কর্মকা-ের অর্থ পাচার করে যুক্তরাষ্ট্রে। যার পরিমাণ ১৫ থেকে ২০ লাখ কোটি টাকা। এই বিপুল পরিমাণ অর্থ সেখানে সম্পদ কেনা থেকে শুরু করে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করেছেন পাচারকারীরা।
রেকর্ড সংখ্যক শিক্ষার্থী যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রে : প্রতিবছরই বাংলাদেশ থেকে বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী উচ্চশিক্ষা গ্রহণের জন্য বিদেশে পাড়ি জমাচ্ছেন। যাদের বেশিরভাগেরই পছন্দের শীর্ষে যুক্তরাষ্ট্র। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রে পড়তে যাওয়া বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের সংখ্যা রেকর্ড সংখ্যায় পৌঁছেছে। বর্তমানে বাংলাদেশের ১৭ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়াশোনা করছেন। ২০২৪ সালের ‘দ্য ওপেন ডোরস রিপোর্ট অন ইন্টারন্যাশনাল এডুকেশনাল এক্সচেঞ্জ’-এর তথ্য অনুযায়ী, ২০২২-২০২৩ শিক্ষাবর্ষের তুলনায় ২০২৩-২০২৪ শিক্ষাবর্ষে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২৬ শতাংশ বেড়েছে। শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় বাংলাদেশ এক বছরের মধ্যে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী পাঠানো দেশের তালিকায় ১৩তম থেকে অষ্টম স্থানে উঠে এসেছে।
বাংলাদেশে অবস্থিত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে দূতাবাসের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষে যেখানে যুক্তরাষ্ট্রে পড়–য়া শিক্ষার্থী সংখ্যা ছিল ৪ হাজার ৮০২ সেটি ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৭ হাজার ৯৯ জনে। গত এক দশকে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২৫০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। শিক্ষার্থী বৃদ্ধির পাশাপাশি বাংলাদেশ থেকে বিপুল সংখ্যক অর্থও যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, প্রতিবছর বৈধভাবে (ব্যাংকিং চ্যানেলে) গড়ে ৫০ কোটি ডলার শিক্ষার্থীদের পড়াশুনার জন্য বিভিন্ন দেশে পাঠানো হয়। এর ৬০ শতাংশ, অর্থ্যাৎ ৩০ কোটি ডলারই যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রে।
ফেসবুকের ব্যবসা ২-৩ হাজার কোটি টাকা : দেশে বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারকারী ১০ কোটির বেশি। এর সিংহভাগই ফেসুবক ব্যবহারকারী। এর বাইরে এক্স, ইনস্টাগ্রাম এবং লিংকডইনের মতো আরো বেশ কয়েকটি মাধ্যম রয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবস্থাপনার প্ল্যাটফর্ম নেপোলিয়নক্যাটের ২০২৪ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বাংলাদেশে ফেসবকু ব্যবহারকারীর সংখ্যা ছিল ৬ কোটি ৩৯ লাখ ৫৫ হাজার ১০০ জন। যা দেশের মোট জনসংখ্যার ৩৬ শতাংশেরও বেশি। এরমধ্যে ১৮ থেকে ২৪ বছর বয়সী ব্যবহারকারী ৩ কোটি ১৪ লাখেরও বেশি। তাদের মধ্যে পুরুষ ২৯ দশমিক ১ শতাংশ এবং নারী ২০ শতাংশ। আর ২৫ থেকে ৩৪ বছর বয়সীদের মধ্যে ২১ দশমিক ৯ শতাংশ পুরুষ এবং ৯ দশমিক ৫ শতাংশ নারী। ওই সময়ে দেশে ইনস্টাগ্রাম ব্যবহারকারী ছিল ৬৮ লাখ ১৩ হাজার। ফেসবুকের মেসেঞ্জার ব্যবহারকারী ৫ কোটি ৭২ লাখ ৬৫ হাজার ৮০০ জন। ২০২৪ সালে লিংকডইন ব্যবহারকারী ছিল ৮০ লাখ ১৮ হাজার।
তথ্য-প্রযুক্তি বিশ্লেষকদের মতে, ব্যবহারকারীর দিক দিয়ে ফেসবুক, ইউটিউবসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর জন্য বাংলাদেশ বড় মার্কেট। তবে বিজ্ঞাপনী বাজার হিসেবে বাংলাদেশ অনেক পিছিয়ে। তবে তারপরও বিভিন্ন মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর কেবল ফেসবুকই ২ থেকে ৩ হাজার কোটি টাকা আয় করছে। বাংলাদেশ থেকে বৈধ ব্যাংকিং চ্যানেলে বিজ্ঞাপনী বিল পরিশোধ না করায় সঠিক পরিসংখ্যান পাওয়া যায় না। একই অবস্থা, গুগল, মাইক্রোসফট, ইউটিউবের ক্ষেত্রেও। এসব প্রতিষ্ঠান প্রতিবছরই বিপুল অর্থ আয় করছে বাংলাদেশ থেকে।
যদিও দুই বছর আগে বাংলাদেশে ভ্যাট পরিশোধ করতো এসব প্রতিষ্ঠান। সে সময় বৈধ চ্যানেলে বিজ্ঞাপনের বিল থেকে সবচেয়ে বেশি ভ্যাট পরিশোধ করে ফেসবুক। প্রতিষ্ঠানটি ২০২২ সালে সরকারকে ভ্যাট দিয়েছিল প্রায় ৩৩ কোটি টাকা। সার্চ ইঞ্জিন গুগল দিয়েছিল ২২ কোটি টাকা। সে সময় এইচটিটিপুল নামে একটি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে অনিবাসী হিসেবে নিবন্ধন নেয়ার পর ভ্যাট পরিশোধ করে। তবে ২০২২ সালের পর থেকে তারা তাদের কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। ফলে এর পরবর্তীতে প্রতিষ্ঠানগুলোর আয় সম্পর্কে কোন ধারণা পাওয়া যায় না এবং তাদের কাছ থেকে কোন ভ্যাটও পাচ্ছে না বাংলাদেশ সরকার। ২০২২ সালে এনবিআরের তথ্যমতে, সে সময় বৈধ চ্যানেলে ফেসবুক ব্যবসা করে প্রায় ২১৮ কোটি টাকা। বিজ্ঞাপন থেকে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আয় করে গুগল, গুগল ১৪৭ কোটি টাকা, মাইক্রোসফট ৩১ কোটি টাকা। এদিকে জনপ্রিয় ভিডিও প্ল্যাটফর্ম ইউটিউবে বিপুল বিজ্ঞাপন দেয় বাংলাদেশের বিভিন্ন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান। অভিযোগ রয়েছে, ইউটিউবে দেয়া বিজ্ঞাপনের বিল পরিশোধিত হয় হুন্ডিতে। যার ফলে ভ্যাট পায় না সরকার। ইউটিউবকে নিবন্ধনের আওতায় আনা গেলে বিপুল পরিমাণ ভ্যাট পাওয়া যাবে বলে জানান এনিবআরের কর্মকর্তারা।
বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সাবেক সভাপতি ও তথ্য-প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ ফাহিম মাশরুর বলেন, ইউজারের দিক দিকে বাংলাদেশ সামাজিক যোগাযোগ প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য বড় মার্কেট। তবে বিজ্ঞাপনী বাজার হিসেব করলে অনেক ছোট। তারপরও এখানে ফেসবুকের আয় বছরে প্রায় ২ থেকে ৩ হাজার কোটি টাকা। যদিও এই হিসেবটি কোন প্রাতিষ্ঠানিক না। কারণ এখানে ফেসবুকের অফিস না থাকায় এবং বৈধ চ্যানেলে বিল পরিশোধ না করায় সঠিক পরিসংখ্যান জানা যায় না।
সাড়ে ১২ কোটি ডলার যাচ্ছে পর্যটনে : বাংলাদেশি পর্যটকদের জন্য সবচেয়ে আকর্ষণীয় স্থান যুক্তরাষ্ট্র। অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশ (আটাব) এর তথ্য অনুযায়ী প্রতিবছর প্রায় ২০ থেকে ২৫ হাজার বাংলাদেশি পর্যটক যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণ করে থাকেন। যারা যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণকালে গড়ে প্রায় ৪ থেকে ৫ হাজার ডলার ব্যয় করে থাকেন। অ্যাসোসিয়েশন অব ট্রাভেল এজেন্টস অব বাংলাদেশ (আটাব) এর সভাপতি আব্দুস সালাম আরেফ বলেন, প্রতিবছর বাংলাদেশ থেকে ২০ থেকে ২৫ হাজার যাত্রী যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণ করে থাকেন। এর মধ্যে অনেকে পর্যটক, শিক্ষার্থী, গ্রিনকার্ডধারী রয়েছেন। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণকারীগণ যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণকালে প্রত্যেকে গড়ে ৪ থেকে ৫ হাজার ডলার ব্যয় করে থাকেন। সে হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণে বাংলাদেশি পর্যটকদের বছরে ব্যয় ১২ কোটি ৫০ লাখ ডলার।
পাচারের সিংহভাগ যুক্তরাষ্ট্রে : বিগত আওয়ামী সরকারের আমলে ২০০৯ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে ২৩ হাজার ৪০০ কোটি ডলার বিদেশে পাচার হয়েছে। বাংলাদেশি টাকায় এর পরিমাণ ২৮ লাখ কোটি টাকা। এই হিসাবে প্রতিবছর গড়ে ১ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা পাচার হয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলের দুর্নীতিগ্রস্ত রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, আর্থিক খাতের রাঘববোয়াল (ক্রীড়নক), আমলা ও মধ্যস্বত্বভোগীরা এই পরিমাণ অর্থ পাচার করেছেন। অর্থনীতি নিয়ে তৈরি শ্বেতপত্র প্রতিবেদনে এই তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, টাকা পাচারের জন্য দুর্নীতিবাজ রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, আর্থিক খাতের ক্রীড়নক, আমলাদের মধ্যে একধরনের অনৈতিক চক্র গড়ে ওঠে। ঘুষ-দুর্নীতি, আর্থিক অপরাধ, মিথ্যা ঘোষণার আড়ালে বাণিজ্য, ব্যাংক থেকে চুরি করা টাকা, খেলাপি ঋণের অর্থ, রাজনৈতিক ক্ষমতার অপব্যবহার, প্রকল্পের খরচ বাড়িয়ে দেখানো, শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারি, কর ফাঁকি—এসব কর্মকা-ের অর্থ পাচার করা হয়। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, সংযুক্ত আরব আমিরাত, হংকং, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, ভারতসহ করের অভয়ারণ্য নামে পরিচিত ছোট ছোট দেশে বাংলাদেশ থেকে টাকা পাচার হয়েছে। মূলত বাড়ি কিনে এবং ব্যবসায় বিনিয়োগ করে টাকা পাচার করা হয়।