রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০৫ পূর্বাহ্ন

বাংলাদেশের সীমান্তে আগুন জ্বললে বিহার-ওডিশাও রক্ষা পাবে না

  • আপডেট সময় রবিবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০২৪

কয়েকদিন ধরেই ভারত বাংলাদেশ ইস্যু নিয়ে সরগরম গোটা বিশ্ব। বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন নিয়ে ভারতীয় একাধিক মিডিয়ার প্রোপাগান্ডা এখন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে উঠে আসছে। যার প্রভাব পড়েছে দুদেশের কূটনৈতিক সম্পর্কে।

এদিকে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে বাংলাদেশিদের জন্য ভিসা সেবা বন্ধ রাখে ভারত। এতে বাংলাদেশীদের খুব বেশি অসুবিধা না হলেও এদেশের পর্যটকদের অভাবে, পথে বসতে চলেছে পশ্চিমবঙ্গের ব্যবসায়ীরা। ফলে এর প্রভাব পড়েছে সেখানকার অর্থনীতিতে। অন্যদিকে চিন্ময় ও ইসকন ইস্যুতে দুদেশের মধ্যে নতুন করে সংকট তৈরি হওয়ায় চিন্তিত মন্ত্রীরা।

দেশটির কিছু নাগরিক এমন কি রাজনৈতিক দল ও বেশ কয়েকটি মিডিয়া এমনভাবে প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে, যেন দুদেশের মধ্যে লাগিয়ে দেওয়াটাই তাদের উদ্দেশ্য।

এমন পরিস্থিতিতে এবার পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় বলেছেন, বাংলাদেশ সীমান্তে আগুন জ্বললে, তা পশ্চিমবঙ্গ তো বটেই বিহার ওড়িশায়ও রেহাই পাবে না

৬ ডিসেম্বর ভারতীয় সম্প্রচার মাধ্যম নিউজ ১৮ এর ‘সোজা সাপটা’ অনুষ্ঠানে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন মমতা বন্দোপাধ্যায়। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে একটা নেতৃত্বহীন অবস্থা তৈরি হয়েছে। এই অবস্থার সুযোগ নিয়ে মাফিয়ারা সংখ্যালঘু নির্যাতনসহ অন্যান্য নেতিবাচক ঘটনা ঘটাচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলাতে চান না বলেও জানান তিনি।

মমতা বলেন,  যখন সরকার দুর্বল হয়ে যায় আর এক শ্রেণীর মাফিয়া রাজ যখন সুযোগটা পেয়ে যায় তখন এই সমস্ত ঘটনাগুলো ঘটে। মাছ কথাটা আমরা ইতিহাসে পড়েছি। তখন ছোট বড় মাছ ছোট মাছকে গিলে খায়। এই রকম অবস্থা হয়ে গেছে। একটা লিডারলেস টাইপ হয়ে গেছে। সেজন্য প্রবলেমটা হচ্ছে। বাট আই ডোন্ট ওয়ান্ট টু ইন্টারফেয়ার ইন বাংলাদেশ। ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনাল ম্যাটার ইটস ইন্টারন্যাশনাল ইস্যু এন্ড ন্যাশনাল ইস্যু। গভমেন্ট অফ ইন্ডিয়া ক্যান ডিসাইড আই ক্যান অনলি সে প্লিজ সেভ অফ পিপল।

ভারতের সংসদে শীতকালীন অধিবেশনে এ নিয়ে কেন আলোচনা হচ্ছে না আর কেনই বা সে দেশের প্রধানমন্ত্রী বা বিদেশমন্ত্রী বিবৃতি দিচ্ছেন না তা জানতে চান মমতা। সেই সাথে ভারতীয়দের সতর্ক করে তিনি বলেছেন, বাংলাদেশ সীমান্তে আগুন জ্বললে পশ্চিমবঙ্গ তো বটেই, বিহার উড়িশাও রেহাই পাবে না।

এ সময় তিনি ভারতীয় সরকারকে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে যোগাযোগের চ্যানেল খোলা রাখতে এবং নিশ্চিত করতে আহ্বান জানান। মমতা বলেন, সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হোক এবং সেখানে সবাই শান্তিতে থাকুক। ইন্ডিয়ার সাথে বাংলাদেশের একটা ইন্টার্নাল প্রবলেম হয়েছে, আপনারা সেটা নিজেরা নিজেরা বসে দেখে নিন। ইন্টারন্যাশনাল ফোরামে অনেক ফোরাম আছে। কিন্তু নেগোসিয়েশনটা বন্ধ করে দেওয়া ঠিক নয়। দুই দেশ একে অপরের সাথে কথা বলি। আমার মনে হয়, অস্থিরতা কাটিয়ে একটা সুস্থির পরিস্থিতির মধ্যে আসুক।

মমতা বন্দোপাধ্যায় আরো বলেন, সবকিছুর পরেও তিনি চান বাংলাদেশ তার কঠিন সময়ে অতিক্রম করুক। পশ্চিমবঙ্গ বাংলাদেশের সঙ্গে সাধারণ ভাষা এবং সংস্কৃতি শেয়ার করে। দুদেশের মধ্যে ভৌগোলিক সীমারেখা আছে কিন্তু হৃদয়ের কোন সীমানা নেই।

সাক্ষাৎকারে প্রতিবেশী দেশগুলোর সাথে ভারতের অস্থিরতা তার কারণ কি এবং এর পেছনে কেন্দ্রীয় সরকারের ব্যর্থতা আছে কিনা জানতে চাইলে মমতা বলেন, আমি দ্বিপক্ষীয় বিষয় নিয়ে কখনো প্রকাশ্যে কথা বলি না, এটা আমার দেশ।

এর আগে গত সপ্তাহের শুরুতে মমতা বন্দোপাধ্যায় নরেন্দ্র মোদিকে অনুরোধ করেছিলেন, জাতিসংঘের কাছে বাংলাদেশে শান্তিরক্ষী বাহিনী পাঠানোর এবং নির্যাতিত ভারতীয়দের সরিয়ে নেওয়ারও দাবি জানিয়েছিলেন। এরপর এই বক্তব্যের জন্য ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন তিনি।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com