এই বিমানবন্দরটি দক্ষিণের বরিশাল শহরের বাবুগঞ্জ উপজেলার রহমতপুর এলাকায় অবস্থিত। মোট ১৬৩ একর জায়গার উপর এই বিমানবন্দরটি দাঁড়িয়ে আছে।
১৯৬৩ সালে এখানে দুই হাজার ফুটের একটি রানওয়ে নির্মাণ করা হয়। আকাশ থেকে শস্যখেতে কীটনাশক ছিটানোর জন্য প্ল্যান্ট প্রোটেকশন বন্দর হিসেবে এটি নির্মাণ করা হয়। মুক্তিযুদ্ধের পর এটিকে ১৯৮৫ সালে পূর্ণাঙ্গ বিমানবন্দর হিসেবে গড়ে তোলা হয়। এই নির্মাণে ব্যয় করা হয়েছিল ৪ মিলিয়ন টাকা। এর নির্মাণের জন্য স্থানীয়রা অনেক আন্দোলন করেছিলেন।
১৯৮৫ সালে নির্মাণ করা করা হলেও এখানে বিমান চলাচল শুরু হয় ১৯৯৫ সাল থেকে। ১৯৯৫ সালের তেসরা ডিসেম্বর তৎকালীন রাষ্ট্রপতি আবদুর রহমান বিশ্বাস এই বিমানবন্দরের উদ্বোধন করেছিলেন। ১৯৯৫ সালের ১৭ জুলাই থেকে এই বিমানবন্দরে ঢাকা-বরিশাল রুটে বিমান চলাচল শুরু হয়। এরও বেঙ্গল এয়ারলাইন্স নামের একটি বেসামরিক বিমান সংস্থা সবার প্রথমে এখানে ফ্লাইট চালু করে। এরপর নভেম্বর মাস থেকে বিমান বাংলাদেশ এখানে তাদের বিমান চলাচল শুরু করে।
কার্যক্রম
এই বিমানবন্দরটি থেকে শুধু ঢাকা-বরিশাল রুটে বিমান চলাচল করে। এখানকার বিমানগুলো ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়ন করে এই বিমানবন্দরে এসে অবতরণ করে। ১৯৯৫ সাল থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত এই বিমানবন্দরটিতে প্রায় ১,৫৮,৯৮৭ জন যাত্রী চলাচল করেছে এবং ২০,০০০ এর বেশি বিমান উঠানামা করেছে এখানে। এসকল বিমানের মধ্যে ছিল যাত্রী বিমান, প্রশিক্ষণ বিমান, কার্গো বিমানসহ আরও অন্যান্য বিমান। এই বিমানবন্দরে সবচেয়ে বেশি বিমান উঠা-নামা করেছে ২০০০ সালে।
বর্তমানে এই বিমানবন্দরে থেকে তিনটি বিমানসংস্থা নিয়মিত তাদের ফ্লাইট পরিচালনা করছে। এই তিনটি বিমানসংস্থা হল বাংলাদেশ বিমান এয়ারলাইন্স, ইউ-এস বাংলা এয়ারলাইন্স এবং নভোএয়ার। শুধুমাত্র ঢাকা- বরিশাল রুটেই এই বিমানগুলো চলাচল করে। এই তিনটি বিমান সংস্থা মিলে এখানে প্রতি সপ্তাহে গড়ে ১৮টির মতো ফ্লাইট পরিচালনা করছে। তার মধ্যে নভোএয়ার ও ইউ এস বাংলা এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট প্রতিদিনই চলাচল করছে। এই বিমানবন্দরে সেবার মান বেশ উন্নত। আর এই কারণে এখানে প্রতিনিয়তই যাত্রীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এই বিমানবন্দরটিতে আছে টার্মিনাল ভবন, আরও আছে ৬,০০০ ফুট দীর্ঘ ও ১০০ ফুট প্রস্থ রানওয়ে ও সীমানা প্রাচীর। এই বিমানবন্দরে যাত্রীদের জন্য বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা ও সেবা রয়েছে। এখানে উন্নত গাড়ি পার্কিং সুবিধা, প্যাসেঞ্জার লাউঞ্জ, ভিআইপি লাউঞ্জ, লাগেজ ট্রলি, কার্গো সার্ভিস, হুইল চেয়ার, প্রাথমিক চিকিৎসা, নামাজের ঘর, বিশুদ্ধ পানি, ওয়াইফাইসহ আরও নানা সুযোগ-সুবিধা রয়েছে।
এই বিমানবন্দরের আশেপাশে বেশকিছু ভালো মানের হোটেল রয়েছে। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল: হোটেল গ্র্যান্ড পার্ক, হোটেল চারু রেসিডেন্সিয়াল, হোটেল সেডোনা, হোটেল এরেনা ইত্যাদি।
যোগাযোগ এয়ারপোর্ট ম্যানেজার, বরিশাল ফোন: +880 2 55061662
সেল: +880 1708167315
ফ্যাক্স: +880 2 55061662
ইমেইল: apmbarisal @caab.gov.bd AFTN : VGBRYDYX
কন্ট্রোল টাওয়ার: +880 2 55061673 ভিআইপি লাউঞ্জ: +880 2 55061623
যেভাবে আসা যাবে বরিশাল বিমানবন্দরে
বরিশালের যেকোনো প্রান্ত থেকে বাস, মাইক্রো, প্রাইভেট কার , রিক্সা-ভ্যান যোগে বিমানবন্দরে আসা যায়। বরিশাল উপজেলা সদর থেকে মাত্র ১০ থেকে ১৫ মিনিটের মধ্যেই বিমানবন্দরে পৌঁছানো যায়।