চলমান বন্যার কারণে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে পরিবহন যোগাযোগ ব্যবস্থা ব্যাহত হওয়ায় চাহিদা বেড়েছে এই রুটে চলাচলকারী স্থানীয় এয়ারলাইন্সগুলো। টিকিটের চাহিদা বাড়ায় এয়ারলাইন্সগুলো তাদের ফ্লাইটের সংখ্যাও বৃদ্ধি করেছে।
তবে বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের অনুরোধ উপেক্ষা করে ঢাকা-চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার রুটে চলাচলকারী বিমানের টিকিটের দাম ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
যদিও এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। তারা জানায়, এই রুটে সর্বোচ্চ এক হাজার টাকা পর্যন্ত ভাড়া বাড়ানো হয়েছে।
এয়ার অ্যাস্ট্রা এয়ারলাইন্স সাধারণত ঢাকা-চট্টগ্রাম-ঢাকা রুটে প্রতিদিন ৪টি করে ফ্লাইট পরিচালনা করে। তবে গত শুক্রবার তারা এই রুটে পাঁচটি এবং শনিবার ছয়টি ফ্লাইট পরিচালনা করেছে।
এয়ার অ্যাস্ট্রার ডেপুটি ম্যানেজার সাকিব হাসান শুভ দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে বলেন, “চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় আমরা ফ্লাইট বাড়িয়েছি। কিন্তু বিমান ভাড়া অপরিবর্তিত রয়েছে।”
রুটে সর্বনিম্ন বিমান ভাড়া ৫,৫০০ টাকা এবং সর্বোচ্চ ১১,০০০ টাকা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “৭০টি আসনের মধ্যে প্রায় ৪০ শতাংশ আসন সর্বনিম্ন ভাড়ায় বিক্রি হয়েছে।”
সাধারণত ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার রুটে দুটি ফ্লাইট পরিচালনা করে নভো এয়ার; তবে এই সময়ে চট্টগ্রাম রুটে প্রতিদিন তিনটি ফ্লাইট পরিচালনা করছে এয়ারলাইনটি।
যোগাযোগ করা হলে নভো এয়ারের বিক্রয় ও বিপণন বিভাগের প্রধান মেসবাহ-উল-ইসলাম টিবিএসকে বলেন, “বন্যার কারণে যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে তা বিবেচনা করে তারা বিমান ভাড়া বাড়ায়নি। “ভাড়া এখনও যুক্তিসঙ্গত। এটি স্বাভাবিক বিমান ভাড়ার চেয়ে সর্বোচ্চ ৫০০-১,০০০ টাকা বেশি হবে।”
ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স বর্তমানে এ রুটে প্রতিদিন সাত থেকে আটটি ফ্লাইট পরিচালনা করছে। প্রতিষ্ঠানটির জনসংযোগ বিভাগের মহাব্যবস্থাপক কামরুল ইসলাম জানান, বিমান ভাড়া আগের মতোই রয়েছে।
অনলাইন টিকিটিং প্ল্যাটফর্ম ‘গো জায়ান’ অনুযায়ী, ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে স্থানীয় বাহকদের সিঙ্গেল বা ওয়ানওয়ে (একমুখী) টিকিটের মূল্য চাহিদার উপর নির্ভর করে ৩,৫০০ টাকা থেকে ১০,০০০ টাকা পর্যন্ত ওঠা-নামা করছে। রাউন্ড ওয়ে ফ্লাইটের জন্য যাত্রীদের গুনতে হচ্ছে ৭,০০০ থেকে ২০,০০০ টাকা পর্যন্ত।
বিমানের টিকিট রিসিডিউল করার জন্য গুনতে হচ্ছে না বাড়তি টাকা
বন্যা পরিস্থিতির কারণে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেটগামী ফ্লাইটে ইকোনমি ক্লাসের ওয়ানওয়ে (একমুখী) ভাড়া সর্বোচ্চ ৫,৪০০ টাকা নির্ধারণ করেছে। রিটার্ন ফ্লাইটের জন্যও এই ভাড়া ধরা হচ্ছে।
এছাড়া, বন্যা কবলিত এলাকার কোনো যাত্রী যদি নির্ধারিত তারিখে ভ্রমণে ব্যর্থ হন বা ফ্লাইট মিস করেন, সেক্ষেত্রে খালি আসন থাকা সাপেক্ষে বিমান বাংলাদেশ বাড়তি টাকা ছাড়াই যাত্রীদের ফ্লাইট রিশিডিউলের সুযোগ দিচ্ছে বলে জানানো হয়েছে এক বিজ্ঞপ্তিতে।
প্রেস রিলিজে বিমান বাংলাদেশ জানিয়েছে, এই ধরনের পরিস্থিতি তৈরি হলে যাত্রীদের সংশ্লিষ্ট টিকিট প্রদানকারী সংস্থা, বা বিমানের নিকটতম বিক্রয় কেন্দ্র বা হেল্পলাইনে কল সেন্টারে (১৩৬৩৬) যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে।
বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়া পর্যন্ত এই সুবিধা চালু থাকবে বলে জানানো হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।
এছাড়া, দেশে চলমান বন্যা পরিস্থিতির কারণে ফ্লাইটের টিকিট কেটেও যেসব যাত্রী শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আসতে পারেননি, তাদের টিকিট বিনামূল্যে রি-ইস্যু বা রি-বুক করার সুযোগ দেওয়ার নির্দেশনা দিয়ে ৩৯টি এয়ারলাইনসকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
শুক্রবার (২৩ আগস্ট) হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ এক চিঠিতে এই নির্দেশনা দেয়।