দেশীয় এয়ালাইনস সংস্থা নভোএয়ারের ফ্লাইট চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। শুক্রবার থেকে সংস্থাটির ফ্লাইট চলাচল বন্ধ রয়েছে। কতদিন বন্ধ থাকবে, নাকি একেবারেই বন্ধ হয়ে যাবে, এ বিষয়টি নিশ্চিত করতে পারেনি নভোএয়ার। তবে, এয়ারলাইসটি একেবারে বন্ধ হয়ে যাবার গুঞ্জন রয়েছে।
নভোএয়ার সূত্র জানিয়েছে, সাময়িকভাবে ফ্লাইট চলাচল বন্ধ করা হয়েছে। কারণ সংস্থাটি তাদের বহরে থাকা পাঁচটি এটিআর বিমান বিক্রির প্রক্রিয়া শুরু করেছে। এই প্রক্রিয়াটি এই মাসেই সম্পন্ন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। শুক্রবার থেকে বিমান বিক্রির ইনসপেকশন শুরু হয়েছে।
তবে সংশ্লিস্ট সূত্র বলছে, ২০ এপ্রিল থেকে তারা টিকেট বিক্রি বন্ধ করে দেয়। এটা প্রচার হবার পর আবারও টিকেটি বিক্রি চালু করে। শুক্রবার থেকে আবারো ফ্লাইট চলাচল বন্ধ রয়েছে। অনলাইনে টিকেট কেনার অপশনটিও বন্ধ রয়েছে সংস্থাটির । এর আগে আন্তর্জাতিক রুটে ফ্লাইট পরিচালনার জন্য তাদের বহরে থাকা উড়োজাহাজগুলো বিক্রি এয়ারবাসসহ আরও উড়োজাহাজ কেনার কথা জানিয়েছিলো নভোএয়ার। তবে তারা বর্তমানে অর্থ সংকটে ভুগছে। এখনো নতুন বিনিয়োগকারীও নিশ্চিত করতে পারে নি। এটা নিয়ে আলোচনা চলছে। বিনিয়োগকারী না পেলে বন্ধ হয়ে যেতে পারে। মূলত অর্থ সংকটেই বন্ধ হয়ে যেতে পারে সম্ভবনাময় এয়ালাইন্সটি। এছাড়া তাদের বহরে থাকা ৫টি বিমান বিক্রি হয়ে গেলে নতুন বিমান না আসা পর্যন্ত বন্ধ থাকবে ফ্লাইট চলাচল।
বর্তমানে নভোএয়ার ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, সিলেট, যশোর, সৈয়দপুর এবং রাজশাহীতে প্রতিদিন অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট পরিচালনা করে। যাত্রী সংকটের কারণে গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে তাদের একমাত্র আন্তর্জাতিক রুটে কলকাতার ফ্লাইট স্থগিত করা হয়েছে।
সংস্থাটি বলছে, নভোএয়ার তার পরিকল্পনা অনুযায়ী এগুতে পারছে না। বিমান বহর ও আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণের পরিকল্পনা থাকলে বিশ্বে লিজ নেয়ার জন্য বিমানের ঘাটতি রয়েছে। এছাড়া বড় বড় বিমান সংস্থাগুলোর প্রতিযোগীতার কারণে বিমান কেনা কঠিন হচ্ছে।
এর আগে নভোএয়ারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মফিজুর রহমান গনমাধ্যমে বলেছেন, খুব শিগগিরই নভোএয়ারের বোর্ডে একজন বিনিয়োগকারী যুক্তি হবেন। তার সঙ্গে আলোচনা চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।
তিনি বলেন, যদি আমরা নতুন বিনিয়োগকারী পাই, তাহলে আমরা বিদেশি ক্রেতাদের কাছে আমাদের বিমান বিক্রি করব না। সেক্ষেত্রে, আমাদের ফ্লাইট বন্ধ হবে না। অন্যথায়, আমাদের তিন মাসের জন্য ফ্লাইট কার্যক্রম বন্ধ রাখতে হবে। তবে, বিমান সংস্থার কর্মী এবং কর্মকর্তারা এই তিন মাসে স্বাভাবিক বেতন পাবেন।
তিনি আরও বলেন, ২০১৩ সালের ৯ জানুয়ারি প্রতিষ্ঠার পর থেকে, নভোএয়ার বিমান অধিগ্রহণে ৫০ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি এবং অবকাঠামো ও সহায়ক সরঞ্জামে অতিরিক্ত ১০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে। ২০১৮-১০১৯ অর্থবছর ছাড়া বিমান সংস্থাটি প্রতি বছরই লোকসান করেছে। মহামারির কারণে বিমান সংস্থাটির উল্লেখযোগ্য ক্ষতি হয়েছে এবং ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে দাম বেড়ে যাওয়ায় ব্যবসায় বিরুপ প্রভাব পড়েছে। এছাড়া, সঙ্কুচিত অভ্যন্তরীণ বাজার এবং চাহিদা হ্রাস চ্যালেঞ্জ আরও বাড়িয়ে তুলেছে।
বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মঞ্জুর কবির ভূইয়া গণমাধ্যমকে বলেন, নভো এয়ারের ফ্লাইট চলছে না। এ বিষয়ে তাদের কর্তৃপক্ষের সাথে কথা হয়েছে। তারা বলছে অর্থনৈতিক কারনে বন্ধ রাখা হয়েছে। ২ সপ্তাহ পর আবার অপারেশনে আসবে। অর্থনৈতিক সমাধান না হলে কি হবে বলা যাচ্ছে না।