রঙ-বেরঙের হাজারো ফুল দোল খেলছে সুনামগঞ্জের ফ্লাওয়ার লেকে। শহুরে একগুঁয়েমি ও ক্লান্তি ভুলতে চিত্ত বিনোদনের আশায় ফুলের মোহে সৌন্দর্য উপভোগ করতে জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে কৃত্রিম এই বাগানে ছুটছেন হাজারো প্রকৃতিপ্রেমী।
সুনামগঞ্জ-তাহিরপুর সড়কের পূর্বপাশে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার গৌরারং ইউনিয়নের লালপুর এলাকায় ৩ একর পরিত্যক্ত জায়গা ভাড়া নিয়ে ফ্লাওয়ার লেক নামের একটি দৃষ্টিনন্দন ফুলের বাগান তৈরি করেছেন এলাকার ৮ উদ্যোক্তা। লালপুর গ্রামের যুবক রুবেল, নুরুল আমীন, রতন, আব্দুর রশীদ, আবু বক্কর, আরিফুল, মিজান, ইসমাইল এই ৮ জনের যৌথ উদ্যোগে গড়ে তোলা হয়েছে বাগানটি। লেখাপড়া আর জীবিকার পাশাপাশি অর্থ সঞ্চয়ে নয়নাভিরাম বাগানটি তৈরি করেন তারা।
বাগানটিতে রয়েছে পিটুনিয়া, সেলবিয়া, সিলোসিয়া, ডালিয়া, গেজিনিয়া, গাঁদা, গোলাপ, কসমস, চন্দ্রমল্লিকাসহ মোট ২৫ ধরনের ফুল। লাল, হলুদ, সাদাসহ বিভিন্ন রঙের এসব ফুল বাগানের সৌন্দর্য বাড়িয়েছে কয়েকগুণ। এ বাগান তৈরি ও পরিচর্যায় ৪ লাখ টাকারও বেশি খরচ হয়েছে বলে জানিয়েছেন উদ্যোক্তারা।
এদিকে, দর্শনার্থীদের সুবিধার কথা ভেবে নির্মাণ করা হয়েছে ওয়াশরুম, ক্যান্টিন, লেকের উপরে বাঁশের সেতু, শিশুদের দোলনাসহ ছবি তোলার বিভিন্ন কর্নার। ২০ টাকার টিকিটের বিনিময়ে প্রতিদিন বাগানে ঘুরতে আসেন অসংখ্য দর্শনার্থী। ছুটির দিনে জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে বাগান দেখতে ভিড় করেন কর্মব্যস্ত হাজারো মানুষ। শহুরে জীবনের ক্লান্তি ভুলে স্বস্তির নিঃশ্বাস নিতে ফ্লাওয়ার লেকের সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসেন বিভিন্ন বয়সের দর্শনার্থী।
দর্শনার্থীরা বলছেন, শিশুদের বিনোদনকেন্দ্র কিংবা মনোরম পরিবেশে সময় কাটানোর স্থান না থাকায় এই বাগানে আসছেন তারা।
এনামুল কবির নামের এক দর্শনার্থী বলেন, ফেইসবুকে দেখে বাগানে এসেছি। বাস্তবে বাগানের সৌন্দর্য উপভোগ করে ভালোই লাগছে। শহরে সময় কাটানোর ভালো জায়গা নেই। শহরের একটু অদূরে এমন আয়োজনের ব্যবস্থা করায় আয়োজকদের ধন্যবাদ জানান তিনি।
শারমিন নামের আরেকজন বলেন, আমি আর আমার স্বামী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। সপ্তাহের ছুটির দিনে ঘুরানোর ফুরসৎ নেই। ছোট বাচ্চাকে নিয়ে ফ্লাওয়ার লেকে এসে ভালোই লাগছে। একটি সুন্দর বিকেল কাটাতে পেরেছি।
দর্শনার্থীদের মনোরঞ্জন ও বিনোদন দিতে ফুলের বাগান তৈরি করে সাড়া পাওয়ায় খুশি উদ্যোক্তারা। উৎপাদন ব্যয় কাটিয়ে লাভের প্রত্যাশা করছেন তারা।
মো. রুবেল নামের একজন উদ্যোক্তা বলেন, ২০২২ সালেও ফুলের বাগান করেছিলাম আমরা। সে বছরের চেয়ে এবার আরও বৃহৎ পরিসরে বাগান করেছি। আমাদের বাগানে ২৫ প্রজাতির ফুল রয়েছে। প্রতিদিনই অসংখ্য মানুষ বাগান দেখতে আসছেন। ছুটির দিনগুলোতে একটু বেশি দর্শনার্থী আসেন। বাগান করতে যে ব্যয় হয়েছে, আশা করছি তা উঠিয়ে লাভবান হবো। প্রতিবছর এর ধারা অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন এই উদ্যোক্তা।