সাগর, বালি, সৈকতে রক্তিম সূর্য্যের অনাবিল দৃশ্য আর সমুদ্র তরঙ্গে আছড়ে পড়া ঢেউ, সবুজ পাহাড়সহ প্রকৃতির অপার সৌন্দর্য দেখতে কার না ভালো লাগে। এই সবকিছু যদি একসঙ্গে দেখতে চান তবে নিশ্চিতে যেতে পারেন ভারতের গোয়া। জলপ্রপাত, প্রাচীন গুহা, ঐতিহাসিক গির্জা কী নেই এখানে। সৈকতে নারকেল গাছের সারি, পানকৌরি-বকসহ নানা পরিযায়ী পাখির কলতান, আর স্বচ্চ পানির ফোয়ারা দেখতে রোজ গোয়ায় ভিড় করেন হাজারো পর্যটক। কয়েক দশক ধরেই বিশ্বজুড়ে পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু গোয়া।
জানা গেছে, ভারতের পশ্চিম উপকূলে অবস্থিত এই এলাকাটি পর্তুগিজদের শাসনাধীন ছিল ১৯৬১ সালের আগ পর্যন্ত। এই রাজ্য গোয়া নামে পরিচিত হয় ১৯৮৭ সালে । সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের জন্য গোয়া আদর্শ পর্যটন স্পট। গোয়ার একটা সমৃদ্ধ ইতিহাস রয়েছে, যেখানেই যাবেন পর্তুগিজদের প্রভাব অনুভব করবেন।
প্রেমিক প্রেমিকাদের পছন্দের ডোনা পাওলা সৈকত
ভালবাসা মতো একটা হৃদয় থাকলে অবশ্যই যাবেন ডোন পাওলা সৈকতে, সৈকতের দাঁড়িয়ে আপনি অনুভব করতে পারবেন সত্যিকার ভালবাসা কেমন হয়, অতৃপ্ত ভালবাসায় কষ্ট। জনস্র্রুতি আছে সম্ভ্রান্ত পরিবারের সুন্দরী মেয়ে ডোনার সঙ্গে জেলে পরিবারের সন্তানের প্রেম হয়। ডোনা যখন বুঝতে পারলো সে তার প্রিয় জনকে পাবে না তখন সে সমুদ্যে ঝাপ দিয়ে আত্ন হত্যা করে। তখন থেকেই জায়গাটি ডোনা পাওলার নামে পরিচিতি পায়।
ডোনা পাওলায় আপনাকে যেতে হবে পানাজি থেকে ৭ কিলোমিটার দুরত্বে। গোয়া থেকে আপনি সরকারি বাস সার্ভিস কাদম্বা ট্রানপোর্ট কোরপোরেশন ( কে টি সি) এবং বেসরকারি বাস যোগেও যেতে পারেন। ইচ্ছে করলে আকাশ পথেও যেতে পারেন ডোনা পাওলা সৈকতে । ডোনা পাওলা সৈকত থেকে ৩২ কিঃ মিঃ দুরত্বে ডাবোলিম বিমানবন্দর। যেকোনো জায়গা থেকে ডাবোলিনে এসে আপনি ডোনা পাওলা সৈকতে যেতে পারেন।
রেলপথেও ডোনা পাওলা যাতায়াত করা যায়। ডোনা পাওলা সৈকতের কাছাকাছি ভাস্কোদাগামা রেলস্টশন, যেকোন জায়গা থেকে ভাস্কোদাগামা রেলস্টশনে এসে আপনি ডোনা পাওলা সৈকতে যেতে পারেন।
বার ও রেস্টুরেন্ট
ডোনা পাওলা সৈকতে বিভিন্দ ধরনের বার এবং রেস্টুরেন্ট রয়েছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য বারগুলি হলো- বার লেটিনো, হোয়াইট হাউজ বার এন্ড রেস্টুরেন্ট, লবি বার, হারবার, পোজা বার, বার আলফানসো, পেসকাডোর।
কোথায় থাকবেন
ডোনা পাওলা সৈকতের কাছাকাছি থাকার জন্য বিভিন্ন মানের রিসোর্ট এবং হোটেল রয়েছে, তার মধ্যে উল্লেখ যোগ্য ডোনা পাওলা রিসোর্ট, হোটেল ও’পেসকাডোর, এল’হোটেল ইডেন, হোটেল ভিলা সোল, হাওয়াই দা সি সাইড ভিলেজ রিট্রিয়েট, সিডেড ডি গোয়া, কাছা আমারিলা সার্ভিস সুইট, সেন্ডেলউড হোটেল এন্ড রেস্টেুরেস্ট, ভিলা দা ডোনা পাওলা, ও পাসকাডোরডোনা পাওলা বিচ রিসোর্ট, কাবানা ডেমপো, হোটেল ফেডাল গো, জিনজার গোয়া ।
বোন্ডলা অভয়ারণ্য
গোয়ার অন্যতম আকর্ষণ হলো-বোন্ডলা অভয়ারণ্য। এলাকাটি আবৃত রয়েছে অভয়ারণ্য আর্দ্র পর্ণমোচী অরণ্য এবং চিরহরিৎ গাছপালা দ্বারা। ছোট্ট অভয়ারণ্যের বিশেষ আকর্ষন একটি ক্ষুদ্র চিড়িয়াখানা, গোলাপ বাগান। এছাড়া রয়েছে সাফারি পার্ক, বোটানিকাল গার্ডেন। প্রকৃতি শিক্ষা কেন্দ্র অভয়ারন্যটি দেখার পর খানিক বিশ্রাম নেওয়ার জন্য রয়েছে পরিবেশ বান্ধব-পর্যটন কুটির।
মরজিম সৈকত
ঘুড়ি ওড়াতে চাইলে চলে যান অগভীর মরজিম সৈকতে। এই সমুদ্র সৈকতে ঘুড়ি ওড়ানো বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এছাড়া এখানে অলিভ রিডলে কচ্ছপের সংরক্ষণ ও প্রতিপালন করে যা হল একটি লুপ্তপ্রায় প্রজাতি। এই কচ্ছপ আর কাঁকড়ার দর্শন আপনার ভ্রমণের অভিজ্ঞতাকে অবিস্মরণীয় করে তুলবে। মরজিম সৈকত শৈলী, ফুল, সবুজ পরিবেশ দ্বারা প্রতিপালিত। মারজিম সৈকত দেখাতে হলে আপনাকে যেতে হবে পেরনমে। সৈকতটি টার্টল বিচ নামে সুপরিচিত।
ইমাকুলেট কনসেপশন গির্জা ও রেইস মাগোস দুর্গ
আওয়ার লেডি অফ দি ইমাকুলেট কনসেপশন গির্জাটি গোয়ার প্রথম গির্জা। এটি নির্মিত হয়ে ১৫৪১ সালে। জনশ্রুতি আছে কিছু সল্প সংখ্যক মানুষ মিলে ও তাদের সম্পদ দিয়ে ১৬১৯ সালে গির্জাটি পুনরায় নির্মিত করেন । সেই সময়ের আকষণীয় ধর্মীয় গন্তব্য ছিল এটি। দিনে এর আকর্ষন বেড়েছে , আজো অনেক লোকের সমাগম হয় গির্জায়। গোয়ার প্রথম গির্জা দেখতে চলে যান আওয়ার লেডি অফ দি ইমাকুলেট কনসেপশন গির্জায়।
মাজোরদা সৈকত
গোয়ার এক অপূর্ব সমুদ্র সৈকত মাজোরদা সৈকত। গোয়ার এক অন্যতম জনপ্রিয় সৈকত মাজোরদা সৈকত। গোয়ার মাজোরদা সৈকতের একটি জোরালো প্রভাব রয়েছে ভারতীয় পুরাণের উপর। একদা ভগবান রামকে শৈশবকালে অপহরণ করে এই মাজোরদা সৈকতে আনা হয়েছিল এমনটাই জানা যায় পৌরাণিক কাহিনী অবলম্বনে । এটাও বলা হয়ে থাকে যে স্ত্রী সীতার সন্ধানে ভগবান রাম এই সৈকতে এসেছিলেন। তিনি কাবও-দি-রামেও এসেছিলেন বলে মানা হয় যা এই সৈকতের দক্ষিণে অবস্থিত।
মিরামার সৈকত
আরব সাগরের চমৎকার ঝলক দেখতে চলে যান গোয়ার মিরামার সৈকতে ।পর্তুগিজ শব্দ ‘মিরামার’ কথার অর্থ হল ‘সমুদ্র পরিদর্শন’। নারকেল গাছের সারির সুবর্ণ সৈকত মিরামার। গোয়ার মিরামার সৈকতের সীমানা শুরু হয়েছে উপসাগরীয় অঞ্চল থেকে এবং সীমানা শেষ হয়েছে এমারেল্ড কোস্ট পার্কওয়েতে । সান্ধ্য পদচারনার একটি আদর্শ স্থান এই সৈকতের কোমল বালি ।
মিরামার সৈকত দেখতে হলে আপনাকে যেতে হবে মান্দোভী নদী এবং আরব সাগরের সঙ্গম থেকে ১ কিলোমিটার দূরত্বে অথবা ডোনা পাউলার দিকে গোয়ার রাজধানী শহর পাঞ্জিম থেকে প্রায় ৩ কিলোমিটার দূরত্বে। গোয়ার মিরামার সৈকত ‘গাসপার ডাইয়াস’ নামে পরিচিত।
মোবর সৈকত
রোমাঞ্চকর কার্যকলাপ করতে চাইলে চলে যান মোবার সৈকত। রোমাঞ্চকর কার্যকলাপের জন্য মোবর সৈকত একটি আদর্শ স্থান। পর্যটকদের রোমাঞ্চকর ক্রীড়াকলাপের জন্য জনপ্রিয় সমুদ্র সৈকত মোবার। ইচ্ছাপূরণের জন্য রয়েছে ওয়াটার স্কিইং, ওয়াটার সার্ফিং, জেট স্কি, ব্যানানা এবং বাম্প রাইড এবং প্যারাসেলিং। এখানে ভ্রমণের সেরা সময় হল সেপ্টেম্বর এবং মার্চ মাসের মাঝামাঝি।
সিঙ্কেরিম সৈকত
প্রাচীনতম সংরক্ষিত সমুদ্র সৈকত সুদৃশ্য সিঙ্কেরিম সৈকত । যা সাতারুদের জন্য আদর্শ জায়গা । এছাড়া এখানে রয়েছে দীর্ঘ বর্ধিত বালুময় ভুখন্ড। শীতল জল আর কোমল বালি আপনাকে দেবে এক অন্যরকম অনুভূতি।
আগুয়াদা দুর্গ
গোয়ার বিশেষ আকর্ষন বিখ্যাত আগুদা দুর্গ। এটি ইতিহাসের সবচেয়ে সুপরিচিত অধ্যায়। দুর্গটি পর্তগিজরা ১৭ শতকের গোড়ার দিকে ১৬১২ সালে নির্মান করেছিল। দুর্গটি ব্যবহার করা হতো বিদেশি আক্রমণের হাত থেকে নিজেদের রক্ষা করার জন্য বিশেষ করে মারাঠা এবং ওলন্দাজদের আক্রমন থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য এবং মান্দোভি নদীর মাধ্যমে অনুপ্রবেশকারীদের প্রবেশ নিয়ন্ত্রণের জন্য। বিশাল দুর্গটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হিসেবে দায়িত্ব পালন পর্তুগিজদের গুরুত্বপূর্ণ কার্যকলাপের জন্য।
আঞ্জুনা সৈকত
গোয়ার পশ্চিম উপকূল এবং আরব সাগর সহ ৩০ কিলোমিটার সম্প্রসারিত সৈকত তটরেখার অংশ অাঞ্জুনা সৈকত। এই সৈকত বিখ্যাত হওয়ার অন্যতম কারণ তার কোমল সাদা বালি এবং নারকেল গাছের সারিসহ তার অত্যাশ্চর্য প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। সমুদ্রের পাশেই রয়েছে অাঞ্জুনা গ্রাম, গ্রামটি আরব সাগর এবং পার্বত্যময় সৈকতের মধ্যে পাঁচ বর্গ মাইল এলাকা নিয়ে অবস্থিত।
আরভালেম জলপ্রপাত
জলপ্রপাত দেখতে চাইলে যেতে পারেন আরভালেম জলপ্রপাত। এটি গোয়ার এক আশ্চর্যকর জলপ্রপাত। জলরাশি ঝরে পরছে পর্বতের পাথুরে ভুখন্ড থেকে যার উচ্চাত ৭০ মিটার । ঝরে পরা এক চমৎকার জলরাশি সত্যিই এক বিস্ময়কর দৃশ্য। আরভালেম জলপ্রপাত দেখতে হলে আপনাকে যেতে হবে উত্তর গোয়ার বিচোলিম থেকে প্রায় ৯ কিলোমিটার দুরত্বে। আরভালেম জলপ্রপাতটি হারভালেম জলপ্রপাত নামে সুপরিচিত,
আরভালেম গুহা
গোয়া একটি প্রাচীন রাজ্য হওয়ায় এখানে অপূর্ব সৈকত এবং জলপ্রপাত ছাড়াও গোয়া একটি ঐতিহ্যবাহী স্থাপত্যের গন্তব্যস্থল। আমাদের পৌরাণিক কাহিনী সম্পর্কে জানার সুযোগ দেয়, উত্তর গোয়ার বিচোলিম শহরে অবস্থিত এটি একটি শিলা কাটা প্রাচীন গুহা। গুহার উৎপত্তি হয় ষষ্ট শতকে। ঐতিহাসিক নিদর্শনের সুন্দর উদাহরণ হল আরভালেম গুহা বা “পান্ডব গুহা”। আরভালেম গুহা দেখতে হলে আপনাকে যেতে হবে উত্তর গোয়ার বিচোলিম শহরে।
কান্দোলিম সৈকত
গোয়ার একজন মুক্তিযোদ্ধা এবং সন্মোহনবিদ্যার জনক আব্বা ফারিয়ার জন্মস্থান হিসাবে বিখ্যাত কান্দোলিম সৈকত । সৈকতটি আগুদা দুর্গ থেকে শুরু হয়ে চাপোরা সৈকতে গিয়ে শেষ হয় যা। কান্দোলিম সৈকত দেখতে হলে আপনাকে যেতে হবে গোয়া রাজ্যের উত্তর পানাজি থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরত্বে।
কোলভা সৈকত
২৫ কিমি সূক্ষ্ম চূর্ণ সাদা বালি আর উপকূল বরাবর নারকেল গাছ দেখতে যেতে পারেন কোলভা সৈকত। সূক্ষ্ম চূর্ণ সাদা বালি এবং উপকূল বরাবর নারকেল গাছ উত্তরে বগমোলা থেকে দক্ষিণে কাবো-দি-রাম এবং দক্ষিণ গোয়ায় উপকূলরেখা বরাবর প্রসারিত। এটি বৃহত্তম এবং দক্ষিণ গোয়ায় সবচেয়ে দর্শনীয় সমুদ্র সৈকত।
এই গ্রামের সুন্দর ঘর ও ভিলা গুলি ঔপনিবেশিক রাজত্বের বিলাসবহুল জীবনধারার কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। মারগাঁওয়ের উচ্চ সমাজের ব্যাক্তিদের বিশ্রামের এলাকা হিসাবে ব্যবহৃত হত । উচ্চ সমাজের ব্যাক্তিরা ছুটি কাটানো জন্য কোলভা পরিদর্শনে আসতেন। কোলভা সৈকত দেখতে হলে আপনাকে যেতে হবে পশ্চিমে মারগাঁও থেকে প্রায় ৬ কিলোমিটার দুরত্বে।
পালোলেম সৈকত
আপনার পাশে কুমারী থাক বা না থাক দেখে আসতে পারেন কুমারী সৈকত। গোয়ার এক অন্যতম কুমারী সৈকত পালোলেম সৈকত । সৈকত থেকে উপভোগ করতে পারেন সৃর্যোদয় এবং সূর্যাস্ত । কয়েক বছর নিভৃতে থাকর পর আবারো পর্যটকদের পদার্পনে এই এলাকা ক্রমান্বয়ে উন্নত হচ্ছে।
পালোলেম সৈকত দেখতে হলে আপনাকে যেতে হবে দক্ষিণ গোয়ার কাণকোণ জেলার চৌদি, চৌদি থেকে থেকে পালোলেম সৈকতের দুরত্ব ২ কিলোমিটার পশ্চিমে । পালোলেম সৈকত ‘প্যারাডাইস বিচ’ নামে সুপরিচিত।
বাগা সৈকত
গোয়া যেতে চাইলে আমাদের সর্বপ্রথমে যেটা মনে পরে যায় তা হল অতি রোমাঞ্চকর বাগা সৈকত। যারা একবার গোয়ার সোন্দর্য উপভোগ করেছে তারা বাগা সৈকতের সৌন্দর্যের কথা বলতে বলবেই।
বেতালবাতিম সৈকত
শান্ত ও নির্জন স্থানে সময় কাটাতে চাইলে যেতে পারেন বেতালবাতিম সৈকতে, শুধু শান্তিপূর্ণই নয় এটি অত্যন্ত পরিস্কার ও পরিছন্ন সৈকত। বেতালবাতিমের সূর্যাস্তের সোন্দর্য্য আপনার কল্পনাকেও হার মানাবে। বেতালবাতিম সৈকতে যেতে চাইলে আপনাকে মাজোরদা সৈকতের দক্ষিণে । গোয়ার ‘সূর্যাস্ত সৈকত’ হিসাবে সুপরিচিত।
ভাগাতোর সৈকত
সস্তায় রিসোর্টে থাকতে চাইলে যেতে পারেন ভাগাতোর সৈকতে যা একটি স্বচ্ছন্দ সৈকত । ভাগাতোর তুলনামুলক কম জনাকীর্ণ এবং একটু ভিন্নধাচের সৈকত। এখানে দেখতে পাবেন সাদা বালি, সারি সারি নারিকেল গাছ এবং কালো লাভা পাথর । সৈকতটি ৫০০ বছর পুরানো পর্তুগিজদের দুর্গের নিকটে অবস্থিত হওয়ায় পর্যটকদের মনে করিয়ে দেয় ৫০০ বছরের পুরানো স্মৃতি এবং চাপোরা দুর্গের লাল প্রাচীরের একটি সুন্দর দৃশ্য প্রদান করে। ভাগাতোর সৈকতে যেতে হলে আপনাকে যেতে হবে সৈকত রাজ্যের রাজধানী পানাজি থেকে ২২ কিমি দূরে অবস্থিত যা পর্তুগিজদের দুর্গের নিকটে যা উত্তর গোয়ার মাপুসা রোডের কাছাকাছি অবস্থিত ।
ভারকা সৈকত
সৈকতে নির্জনে সময়কাটতে চাইলে যেতে পারেন গোয়ায় অতি জনপ্রিয় ভারকা সৈকতে। সাদা বালি আর পরিচ্ছন্নতার জন্য বিখ্যাত ভারকা সৈকত । এটি অত্যন্ত চমৎকার ও সুন্দর সমুদ্র সৈকত । ভারকা সৈকতে যেতে হলে আপনাকে যেতে হবে বেনালিম থেকে প্রায় ২ কিলোমিটার দুরত্বে । এই সৈকত মৎস্যজীবীদের কাঠের নৌকার জন্য সুপরিচিত।
মঙ্গেশি মন্দির
আধুনিক এবং ঐতিহ্যবাহী হিন্দু স্থাপত্যের একটি সংমিশ্রণ, গোয়ার মঙ্গেশি মন্দির। মন্দিরটি উৎসর্গীকৃত করা হয়েছে শিবের অবতার, প্রভু মঙ্গুয়েশিকে । কিংবদন্তীরা বলেছেন যে, এখানে পূজিত শিব লিঙ্গটি প্রভু ব্রহ্মা নিজে পবিত্রীকৃত করেন। এই অধিষ্ঠাত্রী দেবতার মূর্তিটি প্রতি সোমবার শোভাযাত্রার দ্বারা বাইরে নিয়ে যাওয়া হয়।
কেনাকাটা
সারা রাজ্যে প্রচুর সরকারি এম্পোরিয়া এবং ব্যাক্তিগত দোকান রয়েছে । কেনাকাটার জন্য বিখ্যাত মাপুসার ফ্রাইডে মার্কেট এবং অঞ্জুনার ওয়েডনেসডে মার্কেট। সৈকতের পার্শ্ববর্তী স্টল গুলি শামুখ এবং পাথরের কারুশিল্প, শুকনো মাছ এবং মশলা কেনাকাটার জন্য মধ্যে খুবই জনপ্রিয়। এখানে আপনি পেতে পারেন ঝিনুকের খোলসের তৈরি পণ্য। বাঁশের কাজ করা পণ্য।
কোথায় থাকবেন
গোয়ায় প্রচুর হোটেল এবং রিসর্ট রয়েছে। নিজের বাজেট অনুযায়ী পছন্দসই হোটেল অথবা রিসর্ট বেছে নিতে পারবেন। হোটেল এবং রিসর্টগুলি পর্যটকদের প্রতিটি চাহিদা মেটানোর জন্য খুব ভালো ভাবে সুসজ্জিত ও সুপরিকল্পিত হলেও পর্যটকদের কাছে গোয়ার রিসর্টগুলি অত্যন্ত জনপ্রিয়। অগ্রিম হোটেল বুক না করলে এখানে হোটেল কক্ষ পাওয়া খুবই কষ্টকর। এখানে ভাল রেস্তোরাঁর কোন অভাব নেই ইচ্ছে করলে বিচের কাছা কাছি বাড়িতেও খোজ নিয়ে দেখতে পারেন পর্যটন মৌসুমে এই এলাকার অনেকেই নিজের বাড়িকে হোটেলের মত ভাড়া দেন।
ভ্রমণ সহযোগী প্রতিষ্ঠান
ভ্রমণ যেমন আনন্দময় তেমনি ভ্রমণে অনেক ঝক্কি ঝামেলাও আছে। বাসের টিকেট কাটা, বাস ভাড়া করা, হোটেল বুকিং, গাইডের ব্যবস্থা-এমনতর অনেক কাজ রয়েছে। এসব ঝক্কি ঝামেলা সামলানো যাদের পক্ষে সম্ভব নয়। তারা ট্যুও অপারেটরের সাহায্য নিতে পারেন। কোনো ট্যুর অপারেটর আপনার ভ্রমণের দায়িত্ব নিলে কোনো কিছু নিয়েই আপনাকে ভাবতে হবে না। আপনার ভ্রমণ হবে বাংলাদেশের বিশ্বস্থ কয়েকটি ভ্রমণ সহযোগী প্রতিষ্ঠান হচ্ছে- দি গাইড ট্যুরস লিমিটেড, ফোন: ৮৮ ০২ ৯৮৯৬৯৮৩; রিভার এন্ড গ্রীণ ট্যুরস, ফোন: ৮৮ ০২ ৮৮২৯৬৯২; টাইগার ট্যুরস লিমিটেড, ফোন: ৮৮ ০২ ৮৮৩৪৬৫৩।