ইউরোপের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও শিল্প-সংস্কৃতির এক অনন্য তীর্থভূমি ইতালি। প্রাচীনকালে এখানে ছোট্ট জনপদ গড়ে উঠেছিল, যাকে গ্রিকরা ‘ইতালিয়া’ বলে ডাকতো। প্রাচীন সভ্যতা ও আধুনিকতার পাশাপাশি মনোরম সমুদ্র সৈকত, আলপাইন লেক, আল্পস পর্বতমালার সমন্বয়ে গঠিত ইতালি এককথায় মনোমুগ্ধকর। ইতালির ঐতিহ্যবাহি প্রাচীন শহর হচ্ছে রোম। প্রতি বছর এই শহরে অনেক পর্যটক ঘুরতে আসে।
এখানে এসে পর্যটকরা কোথায় ঘুরবেন, কীভাবে ঘুরবেন চলুন দেখে নেওয়া যাক
রোমে রয়েছে ১৭০০ বছরের প্রাচীন স্টেডিয়াম কলোসিয়াম। গ্ল্যাডিয়েটররা যুদ্ধ করতেন এখানেই। বছরের যে কোনও সময়ে বেড়ানোর জন্য আদর্শ এই জায়গাটি। তবে বৃষ্টি হলে সাবধানে পা ফেলতে হবে। কারণ প্রাচীন আমলের পাথরের রাস্তার উপর দিয়ে হাঁটতে হবে আপনাকে। কলোসিয়ামের টিকিট কিনুন প্যালাটিন হিল থেকে। কলোসিয়ামের সামনে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়ানোর প্রয়োজন নেই৷
> এখানে রয়েছে আইকনিক ট্রেভি ফাউন্টেন নামের ঝর্ণাধারা। এই মাস্টারপিস সারা বিশ্বের ঝর্ণাধারার মধ্যে অন্যতম। লা ডলচে ভিটা সিনেমায় এই ঝর্ণা দেখেছেন নিশ্চয়ই। রোমের অন্যতম প্রাচীন এই জলধারার পানি পান অবশ্য বর্তমানে নিরাপদ নয়। সৌভাগ্য ঘিরে থাকবে এমন বিশ্বাস থেকে এ ঝর্ণায় পয়সা ফেলেন কেউ কেউ ৷
> এখানে স্থাপিত সমসাময়িক শিল্পের প্রথম জাতীয় সংগ্রহশালা প্রমাণ করে যে, এই শহর শুধু প্রাচীন স্থাপত্যে থেমে নেই৷ জাহা হাদিদ আর্কিটেক্টস সংস্থা নির্মিত এই সংগ্রহশালা দেখতে খানিকটা কৌণিক। ২০১০ সালে এটি পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হয়। আধুনিক ঐতিহ্যের অন্যতম নিদর্শন এটি।
> এখানে এসে কেউ পিৎজা, কেউ বা সুস্বাদু জেলাটো খেতে চান। কিন্তু পাস্তা কাচো-ই-পেপে না খেলে হবে? এটা যে রোমের বহু পুরনো একটা পদ!
> রোমের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত ভ্যাটিকান বিশ্বের ক্ষুদ্রতম শহর। তবে সেখানে যেতে পাসপোর্ট লাগবে না। এই শহরে থাকেন পোপ। বিশ্বের অন্যতম ক্ষমতাবান ব্যক্তি তিনি। এখানে এলে ভ্যাটিকান সেনার উর্দি, সুইস রক্ষীদের অসামান্য পোশাক এবং সেন্ট পিটার ব্যাসিলিকারের সামনে চিত্তাকর্ষক প্লাজাটি দেখতে ভুলবেন না যেন।
> ভ্যাটিকানের সিলিংয়ে রেনেসাঁ যুগের শিল্পী মিকেলাঞ্জেলোর আঁকা ছবি দেখা যাবে। গিনেস বুকের কাহিনি আঁকা রয়েছে সেখানে। বতিচেল্লি, কারাভাজ্জোসহ একাধিক কিংবদন্তি শিল্পীদের আঁকা ছবি রয়েছে ভ্যাটিকান মিউজিয়াম কমপ্লেক্সে। তিন হাজার বছরের সপ্রাচীন সে ছবি দেখতে হলে সংগ্রহশালার ওয়েবসাইটে টিকিট প্রি-বুকিং করুন৷
> রোমের তৃতীয় বৃহত্তম উদ্যানে হেঁটে বেড়ানোর পাশাপাশি গালেরিয়া বরগেজে যান। কিংবদন্তি শিল্পীদের আঁকা ছবি রয়েছে সেখানে। শাস্ত্রীয় সংগীত শুনতে পারেন এখানে। রয়েছে শেক্সপিয়ারের গ্লোব থিয়েটারের প্রতিলিপিও।
> পৃথিবীর অন্যতম রোম্যান্টিক শহরে হেঁটে বেড়ান। আলতো হাওয়ার স্পর্শ সঙ্গে নিয়ে প্রিয়জনের পাশে দাঁড়িয়ে পন্টে সিস্টো কিংবা পন্টে সান্ট’আঞ্জেলোতে যান সূর্যাস্ত দেখতে। ট্রাস্টেভেরের পাশে কোনও পানশালায় গেলে স্ন্যাকসের সঙ্গে খাবারের আগে একটা বিশেষ পানীয় দেয়, তার আস্বাদও নিতে পারেন।
সূত্র: ডয়েচে ভেলে