1. [email protected] : চলো যাই : cholojaai.net
প্রতারক হতে সাবধান
রবিবার, ০৩ অগাস্ট ২০২৫, ০২:৫৭ অপরাহ্ন
Uncategorized

প্রতারক হতে সাবধান

  • আপডেট সময় মঙ্গলবার, ১৮ মে, ২০২১

ইমিগ্র্যান্ট, বিশেষ করে নথিপত্রহীন, যাদের আমরা চলতি কথায় ‘অবৈধ ইমিগ্র্যান্ট’ বলে থাকি, তাদের জন্য ইমিগ্রেশনের বিষয়টি অত্যন্ত নাজুক এবং স্পর্শকাতর। যারা অবৈধ, তাদের হাজারো চিন্তা। তার মধ্যে প্রধান চিন্তাÑবৈধ হওয়ার সুযোগ মিলবে কবে। অনেকেই ৩০/৩৫ বছর বাস করেও কাগজপত্র করতে পারেননি, লাশ হয়ে দেশে গেছেন। অনেকে হতাশ হয়ে দেশে ফিরে গেছেন শূন্য হাতে। যাদের কাগজপত্র হয়েছে, তাদের মধ্যেও কত রকম চিন্তাÑইমিগ্রেশনের আইনকানুন কখন কী পাল্টে যায় এবং শেষ পর্যন্ত কূলে এসে না তরী ডোবে। স্ত্রী-সন্তান, বাবা-মা, ভাই-বোন দেশে রয়েছেÑতাদের আনা যাবে কবে? আজকের আইন কাল থাকবে তো? এ রকম আরও কত চিন্তা!

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সময় কী ভীষণ চিন্তার মধ্যেই না সময় পার করতে হয়েছে, বিশেষ করে অবৈধ তকমাধারী ইমিগ্র্যান্টদের। আজ এ আইন, কাল সে আইন। সবই ইমিগ্র্যান্ট-বিরোধী। অথচ প্রচলিত আছে, ইমিগ্র্যান্টদের বৈধতাদানের ক্ষেত্রে রিপাবলিকানরাই বেশি উদার। ট্রাম্প সেই ধারণার বিপরীতে ইমিগ্র্যান্টদের জন্য ভয়ংকর প্রতিপক্ষ হয়ে দাঁড়ান। ইমিগ্র্যান্টদের বিরুদ্ধে কত কী করা যায়Ñঅষ্টপ্রহর সেই চিন্তাতেই ট্রাম্প মগ্ন থাকতেন। ট্রাম্প অনেকটা ঘুম হারাম করে দিয়েছিলেন ইমিগ্র্যান্টদের।

কট্টর ইমিগ্র্যান্টবিরোধী সেই ট্রাম্পকে হারিয়ে বাইডেন যখন আমেরিকার ৪৬তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন, তখন ইমিগ্র্যান্ট কমিউনিটি এতটাই উল্লসিত এবং আশাবাদী হয়ে ওঠে যে, মনে হয় তারা যেন অলরেডি বৈধতার কাগজপত্র পেয়ে গেছেন! বাইডেনের কথাবার্তা এবং গৃহীত নানা কর্মসূচিতে অবৈধদের মধ্যে দারুণ একটা আশার সঞ্চার হয়। ইমিগ্র্যান্ট-বান্ধব ইমিগ্রেশন আইন সংস্কারেরও উদ্যোগ নিয়েছেন তিনি। যে কারণে সবাই আশাবাদী হয়ে উঠেছেন, এবার বুঝি অবৈধদের ভাগ্যে শিকে ছেঁড়ে! আর ইমিগ্র্যান্টরা অতীতে যখনই একটু স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন, একশ্রেণির প্রতারক চক্র ফাঁদ পাতে। তাদের ফাঁদে পড়ে অনেকের স্বপ্নই কেবল চুরমার হয়ে যায় না, সর্বস্বান্তও হন। এ যেন সৌভাগ্যের পিছু পিছু দুর্ভাগ্যের পদধ্বনি।

নথিপত্রহীন ইমিগ্র্যান্টরা যেন প্রতারকচক্রের ফাঁদে পড়ে সর্বস্বান্ত না হন, সে জন্যই ঠিকানার এই আগাম সতর্কতা। বর্তমান সময়ে সংবাদটির গুরুত্ব অপরিসীম। করোনার এই অতিমারির সময়ে মানুষের এমনিতেই কত রকম দুর্ভোগ-দুশ্চিন্তা। এর মধ্যে যদি তারা সুযোগসন্ধানী প্রতারকদের খপ্পরে পড়ে, তবে তা হবে তাদের জন্য ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’র মতো। এটাই একটি সংবাদপত্রের দায়িত্ববোধ। মানুষকে বিপদ সম্পর্কে সতর্ক করে দেওয়া। কমিউনিটি-বান্ধব পত্রিকা হিসেবে ঠিকানা সব সময় এই দায়িত্ব পালন করে আসছে। সে কারণেই ঠিকানার স্থান আজও সবারই মনের মণিকোঠায়। এ দায়িত্ববোধ নিয়েই ঠিকানার আত্মপ্রকাশ এবং সততার সঙ্গে সে দায়িত্ব পালন করে আসায় ঠিকানা সব শ্রেণির পাঠক, পৃষ্ঠপোষক, শুভানুধ্যায়ীদের কাছে আজও সমান প্রিয় এবং আস্থার প্রতীক।

এবার আমরা প্রকাশিত সংবাদটির দিকে নজর ফেরাই। বাইডেনের আমলে ইমিগ্রেশন আইন সংস্কারের কারণে খুব আশা করা হচ্ছে যে এবার বিপুল সংখ্যক অবৈধ ও নথিপত্রহীন ইমিগ্র্যান্ট বৈধ হওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। প্রায় ১১ মিলিয়ন নথিপত্রহীন অভিবাসী লিগ্যাল হচ্ছেনÑএ কথা এখন সর্বত্র আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। নতুন আইন আসছেÑএ রকম ধারণাই মানুষকে আশাবাদী করে তুলেছে। এই আশাবাদ আবার আশঙ্কারও কারণ। সৌভাগ্যের পেছন পেছন হাঁটে দুর্ভাগ্য। এ রকম সংবাদে মানুষ যেমন আশায় বুক বেঁধে প্রস্তুতি নিচ্ছে বৈধ হওয়ার, পাশাপাশি একটি মহল এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে অন্যের ভাগ্যকে প্রতারিত করে নিজেদের ভাগ্য গড়ার পাঁয়তারা করছে।

খবরটিতে বলা হয়েছে, ‘এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত আইন না হলেও হাউস ও সিনেটে বিভিন্ন বিল পাসের অপেক্ষায় রয়েছে। কোনো বিল সিনেটে পাস এবং প্রেসিডেন্টের স্বাক্ষর না হওয়া পর্যন্ত কার্যকর হবে না। তবে যুক্তরাষ্ট্রে বৈধ হওয়ার অপেক্ষায় আছেন অনেক মানুষ। তারা যোগাযোগ করছেন নানাজনের সাথে। অবস্থা জানতে কেউ কেউ আইনজীবীর সঙ্গেও যোগাযোগ করছেন। নিজ নিজ অবস্থা বর্ণনা করে কে কোন ক্যাটাগরিতে আবেদন করতে পারবেন, তা নিশ্চিত হতে চাচ্ছেন। অভিজ্ঞ আইনজীবীরা স্পষ্ট করেই বলে দিচ্ছেন, বাইডেনের আমলে নথিপত্রহীনদের নথিপত্র দেওয়া হবে। কিন্তু এ জন্য এখনো কোনো আইন পাস হয়নি। হাউসে অনেক বিল পাস হলেও সিনেটে তা পাস না হওয়া পর্যন্ত আশান্বিত হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আইনজীবীরা সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, এ অবস্থায় কেউ যেন কারো গ্রিন কার্ড, কাজের অনুমোদন কিংবা ভিসা পাইয়ে দেওয়ার কথায় প্রলুব্ধ না হন। এ ধরনের ফাঁদে কেউ পা দিলে নিশ্চিত প্রতারিত হবেন বলে তারা জানান। আইন পাস না হওয়া পর্যন্ত প্রতারণার ফাঁদ থেকে সাবধান থাকতে হবে। ইমিগ্রেশন-সংক্রান্ত সব বিষয়ে আইনজীবী বা ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিসের অনুমোদিত ব্যক্তিদের কাছ থেকে পরামর্শ নিলে প্রতারিত হওয়ার আশঙ্কা থাকবে না। জালিয়াতির হাত থেকে বাঁচার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে নিউইয়র্কের মেয়র অফিসের ইমিগ্র্যান্ট অ্যাফেয়ার্স থেকে। বলা হয়েছে, ইমিগ্রেশন-সংক্রান্ত আইনি উপদেশের প্রয়োজন হলে একজন আইনজীবী অথবা মার্কিন ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিসের স্বীকৃত কোনো সংস্থার কাছে যেতে হবে। স্বীকৃত পরিষেবা প্রদানকারীদের তালিকাও পাওয়া যাবে ডিওজে থেকে। এ ছাড়া নিজ নিজ ভাষায় বিনা মূল্যে এবং নিরাপদে অভিবাসন আইন পরিষেবা পেতে ৩১১ নম্বরে ফোন করে অ্যাকশন এনওয়াইসি বললেও যথার্থ পরিষেবা পাওয়া যাবে।

সুতরাং, যারা প্রতারক চক্রের হাত এড়াতে চান, তাদের জন্য ঠিকানার প্রতিবেদনটি খুবই সহায়ক হবে। মনে রাখবেনÑআপনার চারপাশেই হয়তো প্রতারকেরা ফাঁদ পেতে আছে বন্ধুবেশে। আগে কিছুই বুঝতে পারবেন না তাদের মিষ্টি কথা শুনে। প্রতারিত হওয়ার পর দেখবেন, যে ক্ষতি হয়ে গেছে, তা আর পুষিয়ে নেওয়া সম্ভব নয়। তাই সাবধান! খুবই সাবধান!!

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Developed By ThemesBazar.Com