ভ্রমণে শুধু জায়গা কিংবা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যেই মুগ্ধ হতে হবে তা কিন্তু নয়। প্রতিদিনের একঘেয়ে জীবন ছেড়ে কিছুটা আয়েশীজীবনযাপন, প্রকৃতিরমাঝেই সুন্দরভাবে দুটো দিন কাটিয়ে দেয়া এমনটাও থাকে অনেকের উদ্দেশ্য। তাই দেশের বিভিন্নস্থানেগড়ে উঠেছে প্রাকৃতিক সান্নিধ্যে বিলাসবহুলসব রিসোর্ট। এমনই কিছু রিসোর্টের কথা জেনে নেই
শ্রীমঙ্গলে অবস্থিত গ্র্যান্ড সুলতান টি-রিসোর্ট অ্যান্ড গলফ বাংলাদেশের অন্যতম পাঁচতারকা মানের রিসোর্ট। এখানে রয়েছে ‘রোশনি মহল’ ও ‘নওমি মঞ্জিল’ নামে ১০০০ জনের সুবিধা সমৃদ্ধ ব্যাঙ্কোয়েট হল। আছে ফোয়ারা ডাইন, শাহী ডাইন ও অরণ্য বিলাস নামের ৩৩০ আসন বিশিষ্ট ৫ তারকা মানের রেস্টুরেন্ট। আরো রয়েছে গলফ পাহাড়িকা, পুল ডেক ও ক্যাফে মঙ্গল নামে তিনটি দুর্দান্ত ক্যাফে। অত্যাধুনিক ও সুসজ্জিত জিমনেশিয়ামসহ রিসোর্টে আরো রয়েছে স্পা, সনা, জ্যাকুজি ও ম্যাসাজ পার্লার। গ্র্যান্ড সুলতানের ওয়েবসাইট ঘুরে বিস্তারিত ধারণা পাওয়া যেতে পারে।
সাজেক রিসোর্ট
খাগড়াছড়ির সাজেক বাংলাদেশের মানুষের অন্যতম ট্র্যাভেল ডেস্টিনেশন জায়গায় পরিণত হয়েছে গত কয়েক বছরে। তবে ট্যুরিস্ট স্পট হিসেবে জনপ্রিয় হলেও ফ্যামিলি গ্যাদারিংয়ের জন্য এখনো ততটা জনপ্রিয় হয়ে উঠতে পারেনি ভালো হোটেল আর রিসোর্ট না থাকার জন্য। সেই হিসেবে সাজেক রিসোর্টে মাত্র ৫টি ফ্যামিলি থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। সবার জন্য উন্মুক্ত থাকলেও সামরিক বাহিনীর জন্য অগ্রাধিকার আছে। তবে আর যা হোক, সাজেকের সকাল বেলার সূর্যোদয় আর সূর্যাস্তের মনোমুগ্ধকর দৃশ্য সব দুঃখ নিমিষে ভুলিয়ে দিতে বাধ্য! বুকিং এবং বিস্তারিত জানার জন্য যেতে পারেন সাজেক রিসোর্টের সাইটে।
‘এক্সপেরিয়েন্সিং দ্য একজটিক নেচার’-এই ট্যাগলাইন নিয়ে শ্রীমঙ্গলের চা বাগানের সান্নিধ্যে গড়ে উঠেছে এই রিসোর্টটি এবং খুব কম সময়ের মধ্যেই প্রকৃতিপ্রেমীদের পছন্দের জায়গায় পরিণত হয়েছে। পিকনিক ও পার্টি গ্যাদারিংকে উৎসাহিত না করে যারা প্রকৃতির মাঝে কিছুটা নিরিবিলি সময় কাটাতে চায়, চা বাগানের পথে হেঁটে যান্ত্রিক জীবনের ব্যস্ততা ভুলতে চায়, হানিমুনে এসে নিজেদের মতো করে একান্তে সময় কাটাতে চায় তাদের জন্যই আদর্শ এই দুসাই রিসোর্ট! ছবির মতো সুন্দর এই রিসোর্টের আদ্যোপান্ত জানতে ঢুঁ মারতে পারেন রিসোর্টের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে।
ফয়’স লেক
চট্টগ্রাম শহরের মাঝেই একটুখানি সবুজের ছোঁয়া, আনন্দের আবহ নিয়ে তৈরি হয়েছে ফয়’স লেক রিসোর্ট। লেক ভিউ এবং চারপাশে সবুজ প্রাকৃতিক পরিবেশ আর শহরের একেবারে কাছে হওয়াতে অনেকেই পছন্দ করেন এই রিসোর্টটি। ফয়’স লেক রিসোর্ট সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চাইলে দেখা যেতে পারে তাদের ফেসবুক পেজ কিংবা ওয়েবসাইট।
রাঙ্গামাটি ওয়াটার ফ্রন্ট
নামে রাঙ্গামাটি বলে মনে হলেও এই রিসোর্ট কিন্তু ঢাকার অদূরেই গাজীপুরের চন্দ্রায় অবস্থিত। এই রিসোর্টটি মূলত পারিবারিক ও করপোরেট পিকনিকের জন্য বিশেষভাবে তৈরি। কামিনি, যামিনি, বিজ ফিল্ড ও অ্যাম্ফিথিয়েটার নামে ৪ রকমের সুবিধাসম্পন্ন পিকনিক স্পট রয়েছে এখানে! পুরো রিসোর্টের চারপাশেই রয়েছে ঘন শালবনের বাহার। নিরিবিলি পরিবেশে লেকে নৌ-ভ্রমণের ব্যবস্থা। ওয়েবসাইট থেকে দেখে নিতে পারেন রিসোর্ট বুকিংয়ের আদ্যোপান্ত।
সায়মান বিচ রিসোর্টের সুখ্যাতির কারণ তাদের ইনফিনিটি সুইমিংপুল! সুইমিংপুলে বসে থেকেই যদি এক গ্লাস কফি বা জুসের সঙ্গে দিগন্ত বিস্তৃত সমুদ্রের আড়ালে লুকিয়ে যাওয়া সূর্যাস্ত উপভোগ করা যায় আর কী লাগে! তবে সুইমিংপুলের পাশাপাশি অন্যান্য সুযোগ-সুবিধাও রয়েছে ষোলআনা! লাইফস্টাইল জিম আর মার্কো পোলো গেমস রুমের পাশাপাশি বিচ সারপ্রাইজ নামে মজার একটি সার্ভিস রয়েছে এই রিসোর্টের। এই সার্ভিস গ্রহণ করলে স্থানীয় মানুষের সাহায্য নিয়ে সেই ব্যক্তির বন্ধু-বান্ধব, পরিবার বা প্রেয়সীর অগোচরেই বিচে যে কোনো কিছু একটা সারপ্রাইজের ব্যবস্থা করবে। এই ব্যাপারে আরো বিস্তারিত জানতে ঘুরে আসতে পারেন রিসোর্টে আর বুকিং দিতে পারেন এই ওয়েব অ্যাড্রেস থেকে।
দ্যা বেস ক্যাম্প, বাংলাদেশ
রিসোর্ট বলতেই আরাম-আয়েশে ছুটির দিন কাটানোর যে চিত্র আমাদের সামনে ফুটে ওঠে গাজীপুরে অবস্থিত দ্যা বেস ক্যাম্প তার থেকে সম্পূর্ণ ভিন্নই বলতে গেলে। এখানে রুম নিয়ে প্রকৃতির সান্নিধ্য উপভোগ করার পাশাপাশি জয়েন করতে পারবেন বিভিন্ন অ্যাডভেঞ্চারমূলক কার্যক্রমে। রয়েছে বোটিং, কায়াকিং, ফুটবল, আর্চারি, ক্রিকেট, ব্যাডমিন্টন, জাঙ্গল ট্রেকিং, ক্যাম্প ফায়ার, ট্রেজার হান্ট, সাইক্লিংয়ের সুযোগ! স্কুলের বাচ্চাদের জন্য রয়েছে স্পেশাল জোন ও আলাদা প্যাকেজ। এছাড়াও রয়েছে ফ্যামিলি, ফ্রেন্ডস ও করপোরেট গ্রুপদের জন্য আলাদা প্যাকেজ বাছাইয়ের সুযোগ। সবচেয়ে চমকপ্রদ ব্যাপার হলো এই রিসোর্টে রাতের বেলা ক্যাম্প ফায়ার করে ক্যাম্পে রাতযাপনের সুযোগও রয়েছে। আরো বিস্তারিত জানা যাবে ওয়েবসাইট থেকে।
দ্যা প্যালেস
হবিগঞ্জের দ্যা প্যালেস লাক্সারি রিসোর্ট গত কয়েক বছরে ভ্রমণপিয়াসুদের পছন্দের গন্তব্যস্থলে পরিণত হয়েছে। ১৫০ একরের ওপর গড়ে ওঠা দ্যা প্যালেসে আছে মোট ২৩টি ভিলা, যেগুলোতে আছে ওয়ান বেড থেকে শুরু করে থ্রি বেড। আছে টেনিস ও বাস্কেটবল খেলার আলাদা কোর্ট, ট্রেকিংয়ের ব্যবস্থা ও লেকে মাছ ধরার মতো সুযোগ-সুবিধা, বাচ্চাদের জন্য আলাদা কিডস জোন, সিনেপ্লেক্স ও গেম জোন। আছে সায়গন, নস্টালজিয়া, অলিভ, রেভ্যুলেশন ও অ্যারাবিয়ান লাউঞ্জ নামের ভিন্ন ভিন্ন থিমের ৫টি রেস্টুরেন্ট। এই রিসোর্ট সম্পর্কে জানতে ও বুকিং দিতে ঘুরে আসতে পারেন ওয়েবসাইট থেকে।