দুইদিনের আয়োজন
পুরনো ঢাকাবাসীর প্রাণের এ উৎসবের জন্য নতুন বছরের শুরু থেকেই ব্যাপক প্রস্তুতি থাকে। সাকরাইনের এই আয়োজন থাকে দুইদিন ব্যাপী- ১৪ এবং ১৫ জানুয়ারি। সাধারণত ১৪ জানুয়ারিতেই সাকরাইন পালন করতে দেখা যায়। তবে এলাকাভেদে দুইদিনের ভেতর যেকোন একদিন সাকরাইনের জন্য নির্ধারণ করা থাকে। হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন পঞ্জিকা অনুসারে পরদিন পালন করে থাকে। ধর্মীয় দিকের চাইতে সাকরাইন আয়োজনে প্রাধান্য পায় মূলত এলাকার অবস্থান।
ঘুড়ির হরেক নাম
ঘুড়ির আছে নানা বাহারি নাম। পানদার, বলদার, দাবাদার, ল্যাঞ্জাদার, পতঙ্গ প্রভৃতি। পৌষ সংক্রান্তি, সংক্রান্তি বা সাকরাইন যেভাবেই বলা হোক না কেন এ উৎসবের এ প্রস্তুতি চলে ঘটা করে। তবে এবারের সাকরাইনে করোনার প্রভাব নিয়ে কমবেশি সবাই চিন্তিত।
কাটাকাটির খেলা
প্রায় সব বাড়ির ছাদে দিনভর চলে ঘুড়ি ওড়ানো আর কাটাকাটির খেলা। এক সময় ঘুড়ি, নাটাই আর মাঞ্জাতে সীমাবদ্ধ থাকলেও সাকরাইনের পরিসর এখন ব্যাপক। দিনের প্রথম পর্বে চলে ঘুড়ি কাটাকাটির প্রতিযোগিতা। সঙ্গে নাচ-গান আর শীতের পিঠাপুলি খাওয়া। সন্ধ্যা নামতেই চোখ ধাঁধানো আতশবাজির প্রদর্শনী। লেজার শো আর ‘ডিস্কো লাইট’ এর পাশাপাশি কেউ কেউ কেরোসিন মুখে মশালে ফুঁ দিয়ে অগ্নিকুণ্ড তৈরি করে। সন্ধ্যার আকাশে ঘুড়ির জায়গা নেয় রঙিন ফানুস । আলোর ঝলকানিতে ঢেকে যায় পুরনো ঢাকার সম্পূর্ণ আকাশ। শাঁখারিবাজার, তাঁতিবাজার, কলতাবাজার, শিংটোলা, কাগজীটোলা, সূত্রাপুর, লক্ষীবাজার, বাংলাবাজার, আইজি গেট, আরসিন গেট, গেন্ডারিয়া প্রভৃতি এলাকা সাকরাইনের দিনে যেন নতুন প্রাণ পায়।
সাকরাইন পেলো প্রাতিষ্ঠানিক রূপ
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি) এবার প্রথমবারের মতো সাকরাইন তথা ঘুড়ি উৎসব আয়োজন করতে যাচ্ছে। কর্পোরেশনের ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক বিষয়ক স্থায়ী কমিটির উদ্যোগে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন আগামী ১৪ জানুয়ারি এই উৎসব আয়োজন করছে। ‘এসো ওড়াই ঘুড়ি, ঐতিহ্য লালন করি’ স্লোগানে প্রথমবারের মতো আয়োজিত এই উৎসব একযোগে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৭৫টি ওয়ার্ডে আয়োজন করা হবে। দুপুর ২টা থেকে শুরু হয়ে উৎসব চলবে রাত ৮টা পর্যন্ত।