শুধু ভূরাজনৈতিক কারণ নয়, বরং জলবায়ু পরিবর্তন ও পর্যটনের জন্য আলোচনার কেন্দ্রে বারবার উঠে আসছে আর্কটিক অঞ্চল। এখানকার বরফাচ্ছন্ন প্রান্তরগুলো এখন নতুন পর্যটন হটস্পটে পরিণত হয়েছে।
আলাস্কা থেকে ল্যাপল্যান্ড পর্যন্ত আর্কটিক সার্কেলের বিভিন্ন অংশে ভ্রমণ দ্রুত বাড়ছে। এ কারণেই আরো বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে স্থানীয় বিমানবন্দর। বলা যায়, বিশ্বের সবচেয়ে উত্তরের বিমানবন্দর স্ভালবার হলো এখানকার লাইফলাইন।তবে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বেশকিছু চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হচ্ছে বিমানবন্দরটিকে।
সম্প্রতি পারমাফ্রস্ট গলতে শুরু করায় বিমানবন্দরের অবকাঠামো অস্থিতিশীল হয়ে পড়ছে। যে কারণে নানামুখী রক্ষণাবেক্ষণের মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে নরওয়ে কর্তৃপক্ষকে।
পারমাফ্রস্ট হলো এমন এক ধরনের মাটি বা ভূস্তর, যা কমপক্ষে দুই বছর ধরে একটানা হিমায়িত অবস্থায় রয়েছে। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে অনন্য প্রাকৃতিক পরিবেশ সুরক্ষার প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করছে নরওয়ে। এরই ধারাবাহিকতায় স্ভালবার বিমানবন্দরের জন্য নতুন বায়োগ্যাস চালিত বিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়ে তোলা হচ্ছে।
আগামী বছরের মধ্যে চালু হবে কেন্দ্রটি। মূল ভূখণ্ডে নবায়নযোগ্য জ্বালানির মাধ্যমে তৈরি হবে এ বিদ্যুৎ। এটি সামগ্রিকভাবে কম কার্বন নিঃসরণে ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে। স্ভালবারে কয়লার যুগ প্রায় শেষ। তাই এখন এর নতুন অর্থনীতির ভিত্তি হলো পর্যটন। গ্রীষ্মে ক্রুজ জাহাজে চড়ে দর্শনার্থীরা আসেন বরফে ঢাকা প্রাকৃতিক দৃশ্য ও স্থানীয় প্রাণিজগৎ দেখতে।
শীতকালে পর্যটকদের আকর্ষণ করে অরোরা বা নর্দার্ন লাইটস, আর বসন্তে থাকে কুকুরের টানা স্লেজিং কার ও স্নোমোবাইলে রোমাঞ্চকর ট্যুর। অ্যাডভেঞ্চারপ্রিয়দের জন্য তাই অবশ্যম্ভাবী গন্তব্য হয়ে উঠেছে অঞ্চলটি। তবে অতিরিক্ত পর্যটনের চাপ এড়াতে এখনো আবাসন সংখ্যা ৫০০-তে সীমাবদ্ধ রাখা হয়েছে। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি সত্ত্বেও পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখতে এ সিদ্ধান্ত স্থানীয় প্রশাসন ও ব্যবসায়ীদের।