1. [email protected] : চলো যাই : cholojaai.net
পৃথিবীর পাঁচটি ভুতুড়ে জায়গা
শনিবার, ২৩ অগাস্ট ২০২৫, ০৩:৩৭ পূর্বাহ্ন
Uncategorized

পৃথিবীর পাঁচটি ভুতুড়ে জায়গা

  • আপডেট সময় শনিবার, ১২ জুন, ২০২১

পৃথিবীতে ভূত বলে আদৌ কোনো কিছুর অস্তিত্ব আছে কিনা তা নিয়ে বিতর্কের শেষ নেই। তারপরেও ভূতের ভয় পায় না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। বিজ্ঞান কখনই ভূতের অস্তিত্বকে স্বীকার করে না। তারপরেও মানুষ ভূতে ভয় পায়, কেউ কেউ তো আবার নিজে ভূত দেখেছে বলেও দাবি করে থাকে।

পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে এমন অনেক জায়গা আছে যেখানে গেলে ভয়ে আপনার গা ছমছম করে উঠবে। যেসব জায়গার সাথে মিশে আছে ভুতুড়ে সব ঘটনা আর এইসব ঘটনার রহস্য এখনো বিজ্ঞান দিতে পারেনি। তেমনি কয়েকটি জায়গার কথা আজ আপনাদের জানাবো।

বোরলে রেকটরি

বোরলে রেকটরি ইংল্যান্ডের সবচেয়ে ভৌতিক জায়গা হিসেবে পরিচিত। এটি যুক্তরাজ্যের বোরলে গ্রামে অবস্থিত। ১৮৬৩ সালে Reverend Henry Dawson Ellis Bull এর জন্য এটি নির্মাণ করা হয়। পুরনো একটি গল্প প্রচলিত আছে যে, এক নান বোরলে সম্প্রদায়ের এক সন্ন্যাসিনীর প্রেমে পড়েন। তারা দুজনে পালিয়ে বিয়ে করতে চেয়েছিলেন। এ জন্য তারা পরিকল্পনা করে পালিয়েও যান। কিন্তু পথে তারা ধরা পড়েন। এই ঘটনার বিচারে প্রেমিকা সন্ন্যাসিনীকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করা হয় এবং নানকে এই বাড়ির সুউচ্চ প্রাচীর থেকে ফেলে দিয়ে হত্যা করা হয়। মতান্তরে নানকে এই বাড়িতে পুড়িয়ে মারা হয়। এরপর থেকেই বাড়িটি ঘিরে অদ্ভুত সব কাণ্ড ঘটতে দেখা যায়। ১৯৪৪ সালে ‘লাইফ’ ম্যাগাজিন এ বিষয়ে একটি ফিচার প্রকাশ করে। এটি করতে গিয়ে ম্যাগাজিনের ফটোগ্রাফারের ক্যামেরায় এমন কিছু বিষয় ধরা পড়ে যেগুলোর কোনো ব্যাখ্যা পাওয়া যায় না। যেমন ফটোগ্রাফার যখন বাড়ির ছবি তুলতে যান তখন বাড়ির ভেতরে দরজার আড়াল থেকে তার দিকে ইটের টুকরো ছুঁড়ে মারা হয়। কিন্তু অনেক খুঁজেও পরে আর সেখানে কাউকে পাওয়া যায়নি। এ ঘটনা পত্রিকায় প্রকাশ হলে বাড়িটি নিয়ে কৌতূহলী মানুষের আগ্রহ বেড়ে যায়। এক পর্যায়ে সেই কৌতূহল ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বময়।

হাইগেট সমাধিক্ষেত্র, উত্তর লন্ডন, ইংল্যান্ড

১৮৩৯ সালে এই হাইগেট নামক শ্মশানটি  তৈরি হয়। শ্মশানটি লন্ডনের সবচেয়ে ভৌতিক জায়গা বলে পরিচিত। লোকমুখে শোনা যায়, শ্মশানটিতে প্রায়ই এক মহিলার ছায়া দেখা যায়। গভীর রাতে সেই ছায়াকে দৌড়াতে দেখা যায়, খুন হতে দেখা যায়। এছাড়াও লম্বা এক ব্যক্তিকে ওভারকোট পরে এই এলাকায় ঘুরতে দেখা যায়। লোকজনের কাছে লম্বা লোকটা ড্রাকুলা নামে পরিচিত। সব চাইতে ভয়ের ব্যাপার হলো এই স্থানের তাপমাত্রা বাইরের যে কোনো স্থানের তুলনায় অস্বাভাবিক ভাবে কম। এই সমাধিক্ষেত্রে কার্ল মার্কসের সমাধি রয়েছে।

চাঙ্গি বীচ, সিঙ্গাপুর

চাঙ্গি বীচ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্যবহৃত একটি জায়গা। ‘সোক চিং’ যুদ্ধ সংঘটিত হবার সময় জাপানিরা নিজেদের বিরোধী ভেবে অনেক নিরীহ চীনা নাগরিককে হত্যা করে। তারপর তাদেরকে এখানে কবর দেয়। আর সেই থেকে এই জায়গাটি হয়ে ওঠে ভুতুড়ে। এখানে রাত হলে শুরু হয় ভুতুড়ে সব কাজ কারবার। মনে হয় দূর থেকে কিছু মানুষ কান্না করতে করতে সামনের দিকে এগিয়ে আসছে। অনেক পর্যটক কিছু না জেনে এখানে রাতের বেলা ঘুরতে আসে। আর ফেরার সময় নিয়ে যায় অদ্ভুত এক অভিজ্ঞতা। এখন পর্যন্ত প্রায় হাজার খানেক মানুষ এমন কান্নাকাটি শোনার কথা স্বীকার করেছে। রাতের বেলায় স্থানীয় কেউ এখানে ভুল করেও আসে না।

স্ট্যানলি হোটেল

ভুতুরে এই হোটেলের অবস্থান যুক্তরাষ্ট্রের কলোরাডো রাজ্যের এস্টেস পার্ক শহরে। ১৯০৯ সালে হোটেলটি নির্মাণ করেন ফ্রিলান অস্কার স্ট্যানলি। স্বামীর গড়া হোটেলের মায়া যেন কাটাতে পারছেন না স্ত্রী ফ্লোরা স্ট্যানলি। তাই তো ফ্লোরার মৃত্যুর পরও অনেকেই দাবি করেন ফ্লোরার ভূত ঘুরে বেড়ায় স্ট্যানলি হোটেলের বিভিন্ন কামরায়। ফ্লোরা স্ট্যানলি ভালো পিয়ানো বাজাতে পারতেন। হোটেলে রাত কাটিয়ে আসা অনেকেই দাবি করেন গভীর রাতে পিয়ানো বাজানোর শব্দ শুনেছেন তারা।

হোটেলটিতে একবার রাত কাটান বিখ্যাত লেখক স্টিফেন হকিং। তিনি তাঁর স্ত্রীসহ হোটেলটির ২১৭ নম্বর কামরায় ওঠেন। সারা রাত অদ্ভুত সব আওয়াজ, চিৎকার আর পায়ের শব্দ শুনতে পেয়েছিলেন তিনি। শেষ রাতে ঘুমিয়ে মারাত্মক দুঃস্বপ্ন দেখেন। এই বাস্তব অভিজ্ঞতাই তিনি ফুটিয়ে তুলেছেন উপন্যাসের পাতায়। ২০০৬ সালে টেলিভিশন শো ঘোস্ট হান্টারের একটি পর্ব নির্মাণ করা হয় স্ট্যানলি হোটেলের ওপর। এখনো স্ট্যানলি হোটেলে প্রতি বছর হাজারো অতিথি এসে ভিড় জমায়।

ভাঙ্গার দুর্গ, ইন্ডিয়া

ভারতের রাজস্থানের পাশে অবস্থিত এই ভাঙ্গার দুর্গ। স্থানীয়দের কাছে শোনা যায়, জায়গাটির ওপর নাকি অভিশাপ আছে। কথিত আছে , সিঙ্ঘিয়া নামক কালো জাদুর তান্ত্রিক বহুযুগ আগে এই দুর্গের বাসিন্দাদের অভিশাপ দিয়েছিলেন যে মৃত্যুর বহুকাল পর পর্যন্ত তাদের আত্মা এই দুর্গে বন্দী থাকবে। এই জায়গার সব চাইতে আশ্চর্যজনক আরেকটি ঘটনা হচ্ছে, এখানকার কোনো বাড়ির ছাদ নেই।

কারণ কোনো বাড়িতে ছাদ তৈরি করা হলে তা সঙ্গ সঙ্গেই ভেঙে পড়ে। যতো টুরিস্ট এই জায়গায় ভ্রমণে আসেন সকলেই জানান তারা প্রতিটি মুহূর্ত উদ্বেগ ও অস্থিরতার মধ্যে কাটিয়েছেন। সন্ধ্যার পর এই দুর্গে যারা গিয়েছেন তারা আজ পর্যন্ত কেউ ফিরে আসেন নি। তাই সরকার সূর্যাস্তের পর দুর্গ এবং দুর্গের আশেপাশের বেশ খানিকটা জায়গায় যাওয়া নিষিদ্ধ করে দিয়েছেন।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Developed By ThemesBazar.Com