2007 সালে ইমগ্রান্ট হয়ে আমি আর আমার husband কানাডার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলাম একটা Airlines এ করে। বিমানটা ভাসছিল শূন্যে মহাশূন্যে বিভিন্ন মহাসাগর পাড়ি দিয়ে। জানালার ফাঁকা দিয়ে বাইরেটা দেখার চেষ্টা করছিলাম শুধু মেঘে ঢাকা আকাশ চোখ পড়ছিল। বহু ঘণ্টা এমনভাবে মহাকাশে ভাসার পর বিরতি হিসেবে লন্ডনের Heathrow Airport এ নামতে হলো।
সেখান থেকে কানেক্টিং ফ্লাইটে সরাসরি কানাডার টরন্টোতে আসতে হবে। Heathrow Airport থেকে আমাদের সঙ্গে করে আনা লাগেজগুলো সব ম্যানেজ করতে হবে। আমরা দাঁড়ালাম লাগেজ কালেকশনের লাইনে। কিন্তু কোথায় পাওয়া গেল না সেগুলো। মোট কথা চারটা বড়ো বড়ো লাগেজ মিসিং হয়ে গেছে। ওখানে বসে থাকা সুন্দরী রমনীর কাছে লাগেজের বর্ণনা দিলাম। এতটুকুই । সঙ্গে ছোট ছোট হ্যান্ডব্যাগগুলো ছিল। ঐ সুন্দরী রমনী আমাদের হাতে লন্ডনের কারেন্সির দুইশো pound ধরিয়ে দিল। কারণ আমাদের লাগেজ হারিয়েছে আমাদের কানাডায় পৌঁছে সমস্যা হতে পারে। তাই ঐ মানিটা দিয়েছিল এয়ারপোর্ট কর্তৃপক্ষ।
আমরা টরন্টোতে পৌঁছালাম। একজন পরিচিত ভাইয়ের বাসায় রাতে কয়েক ঘণ্টা রেস্ট নিয়ে সকালে ভাড়া করা এপার্টমেন্টে ওঠে গেলাম। দুই দিন পরে ঐ ভাইয়ের বাসায় আমাদের লন্ডন এয়ারপোর্টে হারিয়ে যাওয়া লাগেজগুলো ঠিকঠাকমতো চলে আসল। আমরা খুবই স্বস্তি ফিরে পেয়েছিলাম। এই যে হারিয়ে যাওয়া লাগেজগুলো সহজে লন্ডন থেকে কানাডায় আমাদের খুঁজতে খুঁজতে চলে আসল, কপাল মন্দ হলে তো নাও আসতে পারত। সবই তো আল্লাহই করেছেন। আমরা তো তাঁরই রহমতের অপেক্ষায় ছিলাম। প্রতিটা পদক্ষেপে আল্লাহ জীবনের আঁকাবাঁকা গলি সোজা করে দিয়েছেন যা আজও সমুদ্রের তরঙ্গের মতো বহমান! অন্তর দিয়ে বিশ্বাস করি এটা।
লন্ডনের কারেন্সির দুইশো pound কানাডিয়ান ডলারে ভালো একটা এমাউন্ট হয়েছিল।
এই যে লাগেজ হারিয়ে গিয়েছিল, অজানা একটা দেশে এসে পড়লাম, যেখানে নেই কোনো পরিচিত-পরিজন বা আত্মীয়, সঙ্গে ছিল না কোনো মজবুত আর্থিক সাপোর্ট সবকিছু মিলিয়ে তখন কিন্তু জীবনের মানে খুঁজে পাওয়া খুব সহজ ছিল না। কিন্তু লাগেজ হারানোর মতো হোপটা হারিয়ে যায় নি। একটা গন্তব্যে এসেছি আজ না হোক কাল টানেলের শেষে আলো দেখা যাবে ইনশাআল্লাহ্।
তাই পথ চলা শুরু করেছিলাম দুই জন মিলে যা আজও চলমান। কখনোই থেমে থাকি নি। জীবনের সংযোগ হয়েছে অনেক কিছু। আগেকার জীবন আর এখনকার জীবনে ফারাক বিস্তর। দিন চলে যাচ্ছে দ্রুতগতিতে। কষ্ট করতে হয় নি বা হয় না এমন কোনো দিন জীবনের ক্যালেন্ডারের পাতায় নেই। তবে শান্তিটা নিজেদের তৈরি করে নিতে হয়েছে। জীবনে যা কিছুই ঘটেছে বা হয়েছে তাতেই খুব সন্তুষ্টি থাকার চেষ্টা শান্তির মূল মন্ত্র। ভালো থাকুক জগতের প্রতিটা প্রাণী।