প্রতি বছর হাজার হাজার লক্ষ লক্ষ ভারতীয় বিদেশ যাওয়ার স্বপ্ন দেখেন। বিদেশে গিয়ে মোটা টাকার বেতন, জমজমাট জীবনযাপন, নতুন নতুন জিনিস সবই যেন দিনরাত হাতছানি দেয়। কিন্তু অনেক দেশ আছে যেখানকার ভিসা পেতে বেশ নাকাল হতে হয়। আবার এমন কিছু দেশ আছে যারা সেই দেশে কাজ করার জন্য সহজেই ভিসা দেয়? আজ্ঞে হ্যাঁ, সেই দেশগুলি অফার লেটার না দিয়ে কর্মপ্রার্থীদের কাজের ভিসা দেয়। আপনিও যদি কাজের জন্য বিদেশি জায়গা খুঁজছেন, তাহলে চলুন জেনে নেওয়া এরকমই ৫টি দেশের কথা। এই পাঁচ দেশে যেতে গেলে কর্মপ্রার্থীর নিজস্ব পাসপোর্ট এবং মার্কশিট থাকতে হবে। তবেই তিনি কাজের ভিসার মাধ্যমে সেখানে কাজ করতে পারেন।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র : H-1B ভিসা
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বেশিরভাগ বিদেশি কর্মীকে H-1B ভিসা দেওয়া হয়। এক্ষেত্রে নির্দিষ্ট ধরনের চাকরির জন্য শুধুমাত্র যোগ্য ব্যক্তিদেরাই এই ভিসা পেয়ে থাকেন।
ক্যানাডায় কাজ করার জন্য কর্মপ্রার্থীর ওয়ার্ক পারমিটের প্রয়োজন। এটি পেতে গেলে প্রার্থীকে তাঁর কাজ এবং যোগ্যতার প্রমাণ দেখাতে হবে। অন্যদিকে এক্সপ্রেস এন্ট্রি সিস্টেমও চালু করে বিভিন্ন দেশের মানুষকে তাদের দেশের নাগরিকত্ব গ্রহণেরও সুযোগ দিচ্ছে ক্যানাডা।
অস্ট্রেলিয়া ওয়ার্ক ভিসা অফার করে। এই ভিসা আবেদনকারীকে চাকরি খুঁজতে সাহায্য করে। অন্যান্য নথির সহ পাসপোর্টের ভিত্তিতেও এই ভিসা দেওয়া হয়।
জার্মানিতে কর্মপ্রর্থীকে ৬ মাসের জন্য ভিসা দেওয়া হয়। এর জন্য ব্যক্তির বয়স ১৮ বছরের বেশি হতে হবে। ছাড়াও স্নাতক ডিগ্রি, ৫ বছরের কাজের অভিজ্ঞতা, আর্থিক স্থিতিশীলতা, প্রার্থীর সঙ্গে গত ১০ বছরে জারি করা এবং কমপক্ষে ১২ মাসের বৈধতা পাসপোর্ট থাকতে হবে, তিনটি পাসপোর্ট সাইজের ছবি, একটি কভার লেটার, শিক্ষাগত যোগ্যতার প্রমাণ, ডিগ্রির প্রমাণ, সিভি, স্বাস্থ্য বীমা এবং আধার কার্ড বা জন্ম শংসাপত্র থাকতে হবে।
অস্ট্রিয়াতে ৬ মাসের জন্য ওয়ার্ক ভিসা দেওয়া হয়। এর জন্য আবেদনকারীকে অস্ট্রিয়ার শীর্ষ স্তরে তালিকায় প্রথম ১০০ জনের মধ্যে থাকতে গেলে কমপক্ষে ৭০ শতাংশ স্কোর করতেই হবে। এতে প্রার্থীর দক্ষতা এবং যোগ্যতা যেমন পুরষ্কার, গবেষণা এবং উদ্ভাবন, অ্যাকাডেমিক ডিগ্রি, মোট বেতন এবং ভাষার দক্ষতা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। সেদেশে যেতে গেলে দরকার প্রার্থীর বৈধ পাসপোর্ট, ছবি, স্থানীয় বসবাসের প্রমাণ, স্বাস্থ্য বীমা এবং সেইসঙ্গে শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং প্রাপ্ত নম্বরের নথি।
সংযুক্ত আরব আমিরাততে ৬০, ৯০ বা ১২০ দিনের ভিসা দেওয়া হয়। এর জন্য আবেদনকারীকে অবশ্যই বৈজ্ঞানিক, প্রযুক্তিগত বা মানবিক ক্ষেত্রে একটি উচ্চপদস্থ কর্মী বা ম্যানেজারতুল্য পদে থাকতে হবে। এই যোগ্যতা থাকলে চাকরি সহজেই মেলে। দেশের শিক্ষা মন্ত্রণালয় অনুমদিত যে কোনও সেরা ৫০০টি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক হতে হবে। তবেই প্রার্থীকে কাজের অনুমোদন দেওয়া হবে। স্নাতকের শেষ দুই বছরের সময় বিবেচনা করা হবে, প্রার্থীকে অবশ্যই স্নাতক ডিগ্রিধারী হতে হবে এবং নিজের আর্থিক গ্যারান্টিও দেখাতে হবে। থাকতে হবে বৈধ পাসপোর্ট, রঙিন ছবি এবং যোগ্যতার শংসাপত্র।
আপনি যদি স্পেনে আপনার বিশ্ববিদ্যালয় স্তরের শিক্ষা শেষ করে থাকেন বা এক থেকে দুই বছরের বিশ্ববিদ্যালয় স্তরের শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকে, তাহলে এই দেশ আপনাকে চাকরি পেতে বা ব্যবসা শুরু করার জন্য ভিসা দেবে। ভিসার সময়কাল ১২ থেকে ২৪ মাস। এখানে থাকতে চাইলে অবশ্যই প্রাইভেট পাবলিক মেডিক্যাল বিমা এবং পর্যাপ্ত পরমাণ অর্থ থাকতে হবে। ইউরোপীয় যোগ্যতা ফ্রেমওয়ার্ক অনুযায়ী, বিশ্ববিদ্যালয়ে রেজাল্টে অবশ্যই ৬ বা তার বেশি শতাংশ নম্বর অর্জন করেছেন। উচ্চ স্তরের ১০০ কর্মীদের তালিকায় আপনাকে অবশ্যই ৭০ স্কোর করতে হবে, বৈধ পাসপোর্ট, ছবি, স্থানীয় বসবাসের প্রমাণ, EX01 ফর্ম, স্বাস্থ্য বীমা, আপনার যোগ্যতা বলতে পারে এমন নথি থাকতে হবে।