হানিমুনের বাংলা প্রতিশব্দ মধুচন্দ্রিমা। একান্তে সময় কাটানোর জন্য নবদম্পতির কাছে বিষয়টি পরম প্রত্যাশিত কিছু।পশ্চিমা সভ্যতার অনুষঙ্গ হলেও বর্তমানে আমাদের দেশেও নতুন বিয়ে করা নারী-পুরুষের মধ্যে এ প্রথা নিজস্বতা নিয়ে এসেছে।বিবাহ পরবর্তী ঐতিহ্যগত মধুচন্দ্রিমা বিভিন্ন দেশে ভিন্ন রকম গুরুত্ববহন করে। ইউরোপে নব দম্পতির কাছে মধুচন্দ্রিমার গুরুত্ব খুবই বেশি। তবে এ হার সবচেয়ে বেশি জার্মানিতে।
সেখানে প্রায় ৯১ শতাংশ নবদম্পতি বিয়ের পর মধুচন্দ্রিমা উদযাপনে বেড়াতে যান। হাল আমলে বাংলাদেশেও উচ্চবিত্ত তো বটেই, মধ্যবিত্তের মধ্যেও মধুচন্দ্রিমার প্রসার ছেড়িয়ে পড়ছে।বিয়ের পর অনেকেই স্বাদ ও সাধ্যের মধ্যে দেশের বিভিন্ন আকর্ষণীয় স্পটে নব বধূকে নিয়ে বেড়াতে বের হন। আর যাদের সাধ্য আছে তারা উড়ে যান বিদেশের নানা মনোমুগ্ধকর ভ্রমণ স্পটে।
ছুটিতে নবদম্পতিরা বেড়িয়ে আসতে পারেন প্রতিবেশী দেশ ভারতের বিভিন্ন হানিমুন স্পট থেকে। যা আপনার এবং প্রিয়জনের সান্নিধ্যে কাটানো সময়কে আরও স্মৃতিময় করে তুলবে।
শ্রীনগর
জম্মু ও কাশ্মিরের রাজধানী শহর শ্রীনগরকে এক কথায় স্বর্গোদ্যান বলা চলে। লাস ভ্যালি, স্পার্কলিং লেক, উঁচু পাহাড় এবং ছবির মতো দৃশ্য আপনার মধুচন্দ্রিমাকে পরিপূর্ণ করে দেবে।
গোয়া:
সূর্য, বালি আর সাগর- এই তিনের সমযাত্রী গোয়া ভারতের শীর্ষ মধুযামিনী গন্তব্যস্থলগুলোর মধ্যে একটি। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে যুগলরা তাদের ভালো ও স্মৃতিময় সময় কাটাতে যান সেখানে।
গোয়ার প্রাচীন সৈকত, মোহনীয় পরিবেশ এবং উষ্ণ আবহাওয়া যুগলদের হাতছানি দিয়ে ডাকছে। যেতে পারেন আপনিও।
কুর্গ, কর্নাটক
দক্ষিণ ভারতের মনোমুগ্ধকারী ছোট্ট শহর কুর্গ। কর্নাটক রাজ্যের এই শহরটিকে ভারতের স্কটল্যান্ড হিসেবে পরিচিত। এখানকার কমলা বাগান, সতেজ কফির সুবাস এবং সবুজ শ্যামলিমার বেষ্টনীতে সুখকর মধুচন্দ্রিমা যাপনে উত্তম জায়গা
নৈনিতাল, উত্তরাখন্ড
মনোরম এবং রোমান্টিক হিল স্টেশন উত্তরাখন্ডের শহর নৈনিতাল। পর্বতবেষ্টিত নাশপাতি আকারের একটি হ্রদের উপত্যকায় গড়ে উঠেছে শহরটি। পর্বতের চূড়া থেকে দৃশ্যমান ভূ-দৃশ্যাবলী অসাধারণ।
আর দক্ষিণে রয়েছে বিস্তীর্ণ সবুজ সমভূমি, উত্তরে তাকালে দেখা যাবে বরফাবৃত হিমালয়ের কেন্দ্রীয় পর্বতের সারি (নন্দা দেবী, ত্রিশূল এবং নন্দা কোট)। যা মধুযায়ীদের সময়কে আরও আনসুখকর করে তোলে।
জয়সালমের, রাজস্থান
কোনো রাজকীয় জায়গায় হানিমুন করতে চাইলে, যান রাজস্থানের জয়সালমেরে। রাজ্যটির একটি আড়ম্বরপূর্ণ শহর জয়সালমের। ঐতিহাসিক পুরাকীর্তির পাশাপাশি হাতি কিংবা উটেও চড়ে বেড়ানো যায়।
এছাড়া রাজস্থানের জয়পুর, জোদপুর, উদয়পুর, বিকানের এবং মাউন্ট আবুও বেশ জনপ্রিয়।
সিমলা, হিমাচল
সিমলা দীর্ঘ সময় ধরে মধুচন্দ্রিমার জন্য বেশ আকর্ষণীয়। সুউচ্চ পর্বত শ্রেণী ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অবলোকনের জন্য একটি আদর্শ স্থান।
লাক্ষাদ্বীপ
অসংখ্য দ্বীপ নিয়ে ভারতের দক্ষিণ-পশ্চিমে আরব সাগরের বুকে এ দ্বীপের অবস্থান। ক্ষুদ্রতম কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল লাক্ষাদ্বীপে অধিকাংশ বিদেশি এবং বসতিহীন সৈকত রয়েছে। এসব সৈকতে নীলাভ-সবুজ আমেজ এবং সাদা বালি পর্যটকদের বেশ আকৃষ্ট করেছে।
উটি, তামিলনাড়ু
তামিল ভাষায় উটি। নীলগিরি পাহাড়ি এলাকায় অবস্থিত উটি সবচেয়ে সুপ্রসিদ্ধ পাহাড়ি অঞ্চল। রোমান্টিক মধুচন্দ্রিমার চন্দ্র শহরটিতে অনেক জায়গা রয়েছে। এরমধ্যে বোটানিক্যাল গার্ডেন, গোলাপ বাগান উটি লেক উল্লেখযোগ্য।
দার্জিলিং
মধুচন্দ্রিমার জন্য সবচেয়ে সুন্দর ও আকর্ষণীয় জায়গা পাহাড়-সমতলের দার্জিলিং। এখানকার ঠাণ্ডা আবহাওয়া আর চা চাষের পাহাড় হতে পারে আপনার হানিমুনের আইস কেক!
কেরেলা
ঈশ্বরের নিজের দেশ হিসেবে পরিচিত কেরেলা। যা মধুচন্দ্রিমার জন্য একটি স্বর্গোদ্যান। এ অঞ্চলের হ্রদ, খাল ও নদী সৌন্দর্যের অন্যতম অনুসঙ্গ।
ভাড়ায় ভাসমান নৌকায় করে কেরলার ঐতিহ্যবাহী ধরনে উদযাপন করতে পারেন আপনার মধুযামিনী।
কীভাবে যাবেন
বাংলাদেশ থেকে সড়ক ও আকাশ পথে যাওয়া যায়। সেখান থেকে ট্রেনে অথবা প্লেনে এসব ভ্রমণ স্পটে ছুটে যেতে পারেন। তবে এর আগে অবশ্যই ভিসা করে নিতে হবে। রয়েছে বিভিন্ন ট্রাভেল এজেন্সির নানা প্যাকেজও।