রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:১৬ অপরাহ্ন

পাশের দেশে ঘুরে আসুন ‘ছোট্ট স্কটল্যান্ডে’

  • আপডেট সময় শনিবার, ২৬ অক্টোবর, ২০২৪

স্কটল্যান্ডের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখে বিশ্বের সবাই মুগ্ধ হন। তবে চাইলেই তো আর যখন তখন সেখানে যাওয়া সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে খরচও অনেক। তবে যারা স্কটল্যান্ড ভ্রমণের স্বপ্ন দেখছেন তারা চাইলে পাশের দেশে গিয়েই ছোট্ট স্কটল্যান্ডে ঢুঁ মেরে আসতে পারেন। এতে আপনার চোখও জুড়াবে আবার বেশি খরচও হবে না।

বলছি ভারতের স্কটল্যান্ডের কথা। যাকে সবাই উটি নামে চেনেন। এটি ভারতের সবচেয়ে সুন্দর হিল স্টেশন, যা চা বাগানের জন্য বিখ্যাত। এখানকার সৌন্দর্য ও নৈসর্গিক স্থান সবাইকে মুগ্ধ করে। বিশেষ করে নব বিবাহিত দম্পতিরা হানিমুন সেখানে যেতে পছন্দ করেন।

এই হিল স্টেশন এতই সুন্দর যে একবার গেলে আর ফিরে আসতে ইচ্ছে করবে না। সেখানে গিয়ে নাকি স্কটল্যান্ডের মতো অনুভূতি মেলে এমনটিই প্রচলিত আছে। তাই আপনি যদি সেখানকার সৌন্দর্য উপভোগ করতে চান তাহলে উটি গিয়ে কোন কোন স্থানে ঘুরবেন তার হদিস রইলো-

অ্যাভালাঞ্চ লেক

উটির দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে একটি হলো অ্যাভালাঞ্চ লেক। উটি থেকে ২৮ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই স্থান। সেখানকার পাহাড়ের সবুজ ও প্রাকৃতিক দৃশ্য আপনাকে মুগ্ধ করবেই। এছাড়া স্থানটি ট্রাউট মাছ ধরার জন্যও বিখ্যাত।

উটি লেক

উটির দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে এটি একটি। এই কৃত্রিম হ্রদ মূলত মাছ ধরার উদ্দেশ্যে নির্মিত হয়েছিল। এই হ্রদ নৌকা ভ্রমণের জন্য জনপ্রিয়।

লেকের কাছে একটি বোটিং হাউস আছে, যেখান থেকে আপনি একটি নৌকা ভাড়া করতে পারেন। আপনি যদি আশপাশের দৃশ্য উপভোগ করতে চান তাহলে লেকের ধারে সাইকেল চালিয়ে যেতে পারেন।

ডিয়ার পার্ক

উটি লেক থেকে মাত্র ২ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই স্থান। এটি উটির এমন একটি জায়গা, যা হরিণের আবাসভূমি। সাম্বার ও চিতলের মতো বিরল প্রজাতির হরিণ আছে এই পার্কে। যা বন্যপ্রাণী প্রেমীদের জন্য একটি দুর্দান্ত জায়গা।

২২ একর এলাকাজুড়ে বিস্তৃত এই পার্ক ১৯৮৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এটি শুধু তামিলনাড়ু নয়, ভারতের অন্যতম জনপ্রিয় বন্যপ্রাণীর অভয়ারণ্য। খরগোশসহ কাছ থেকে বিভিন্ন প্রাণী দেখতে পাবেন আপনি সেখানে গেলে।

কালহাট্টি জলপ্রপাত

যেহেতু উটি একটি হিল স্টেশন, তাই এর আশপাশে আপনি অনেক জলপ্রপাতও পাবেন। এর মধ্যে কালহাট্টি হলো সবচেয়ে সুন্দর জলপ্রপাত। উটি থেকে প্রায় ১৩ কিলোমিটার দূরে, উটি-মহীশূর সড়কে এর অবস্থান।

ধারণা করা হয়, একসময় মহান হিন্দু ঋষি অগস্ত্য বাস করতেন সেখানে। উটি ভ্রমণের সময় এই স্থানে ঢুঁ মারতে ভুলবেন না। এর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আপনাকে অবশ্যই মুগ্ধ করবে।

মুদুমালাই জাতীয় উদ্যান

উটি থেকে ৪৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত মুদুমালাই জাতীয় উদ্যান প্রকৃতিপ্রেমীদের কাছে স্বর্গের চেয়ে কম নয়। সেখানে আপনি গাছপালাসহ অনেক বন্য প্রাণী দেখতে পাবেন।

আরও পড়ুন: অবিশ্বাস্য ‘লাল নদী’ দেখলেই জুড়াবে চোখ

পার্কটি প্রায় ৫০টি বাঘের আবাসস্থল, তাই এটিকে টাইগার রিজার্ভ হিসেবেও ঘোষণা করা হয়েছে। এখানে পর্যটকদের জন্য অনেক গেস্ট হাউস আছে।

রোজ গার্ডেন

৪ হেক্টর জুড়ে বিস্তৃত উটির রোজ গার্ডেন জনপ্রিয় এক স্থান। এই বাগানে ২০ হাজারেরও বেশি গোলাপ আছে। হাইব্রিড চা গোলাপ, রংব্লার ও ফ্লোরিবুন্ডা গোলাপসহ বিভিন্ন প্রজাতির গোলাপ পাবেন সেখানে।

বাগানটি এলকে পাহাড়ের একটি ঢালে তৈরি করা হয়েছে। যেখান থেকে পর্যটকরা চারপাশের মনোমুগ্ধকর দৃশ্য দেখতে পারেন।

কীভাবে যাবে উটি?

আকাশপথে: সেখানকার নিকটতম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হলো কোয়েম্বাটোর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, যেটি উটি থেকে প্রায় আড়াই ঘণ্টার পথ।

কোয়েম্বাটুর বিমানবন্দর এয়ার অ্যারাবিয়া, এয়ার ইন্ডিয়া, ইন্ডিগো, জেট কানেক্ট ও স্পাইস জেটের মাধ্যমে দিল্লি, কোঝিকোড, মুম্বাই, আহমেদাবাদ, ব্যাঙ্গালোর, চেন্নাই ও হায়দ্রাবাদের মতো শহরগুলোর সঙ্গে ভালোভাবে সংযুক্ত।

রেলপথে: উটির নিজস্ব রেলওয়ে স্টেশন রয়েছে যার নাম উটি রেলওয়ে স্টেশন। এটি তামিলনাড়ুর প্রধান শহরগুলোর সঙ্গে ভালোভাবে সংযুক্ত।

এটি প্রধান নতুন দিল্লি-কোয়েম্বাটোর রেললাইনের উপর অবস্থিত ও এটি নতুন দিল্লি, ব্যাঙ্গালোর, কোয়েম্বাটোর, চেন্নাই, কোচি, মহীশূর, লাখনউ, চেন্নাই, কন্যাকুমারী, পুরী, আহমেদাবাদ ও জয়পুরের মতো শহরগুলোর সঙ্গে সংযুক্ত।

বাই রোডে: উটি কুনুর থেকে ১৯ কিলোমিটার, মেট্টুপালায়ম থেকে ৫২ কিলোমিটার, কোয়েম্বাটোর থেকে ৮৪ কিলোমিটার, তিরুপুর থেকে ১০৪ কিলোমিটার, পোল্লাচি থেকে ১২৭ কিলোমিটার, পালাক্কাদ থেকে ১৩৬ কিলোমিটার, ধারাপুরম থেকে ১৫৪ কিলোমিটার ও উটি থেকে ১৫৯ কিলোমিটার।

সূত্র: প্রেসওয়্যার ১৮

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com