পরিশ্রম তো মানুষের সাধ্যের মধ্যেই রয়েছে। সেই পরিশ্রম ও হার না মানা মানসিকতার জোরেই পুরো বিশ্ব জয় করতে পারে মানুষ। এমনই একজন মানুষ আমেরিকার নিক মকুটা। একদিন যিনি মার্কিন মুলুকের রাস্তায় শুয়ে রাত কাটিয়েছেন, আজ তিনিই কোটি কোটি টাকার মালিক।
কোনো বাম্পার লটারি নয়, ৩৭ বছর বয়সী নিক পরিশ্রম ও মগজাস্ত্রের জোরেই নিজের জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছেন। তিনি মাত্র ২১ বছর বয়সে রোমানিয়া থেকে আমেরিকায় এসেছিলেন। সেই সময় হাতে ছিল দাদির দেওয়া ৫০০ ডলার। যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৪৩ হাজার টাকা।
প্রথমে তিনি ভেবেছিলেন, এই অর্থে কিছুদিন হয়তো কেটে যাবে। আর সেই সময়েই মধ্যেই একটি কাজ জুটিয়ে নেবেন। অল্প সময়েই নিকের ভুল ভেঙে যায়, যখন ট্যাক্সিতে উঠে ১০০ ডলার ভাড়া হিসেবে মেটাতে হয়। ভালো ইংরাজিও তখন বলতে পারতেন না নিক। মাত্র ৩৪ হাজার টাকা নিয়ে আমেরিকার রাস্তায় রাস্তায় কাজের আশায় ঘুরতেন। আর রাত কাটত রাস্তার ধারে বা পাবলিক পার্কের কোনো বেঞ্চে শুয়ে।
নিক কোনো মতে পার্কিং লটে গাড়ি রক্ষণাবেক্ষণের কাজ জোগাড় করেছিলেন। তা দিয়ে দিনের খাবার জুটে যেত। তাও আধপেটা। দোকানে গিয়ে বার্গারে চিজ দিতে বারণ করতেন নিক, যাতে বেশি টাকা না দিতে হয়। গাড়ি রক্ষণাবেক্ষণ করতে করতেই ভালো ইংরাজি ভাষা শিখে নেন নিক। রিয়েল এস্টেট এজেন্ট হিসেবে লাইসেন্স জোগাড় করে ফেলেন। তাতেও খুব বেশি রোজগার হচ্ছিল না।
তারপর ২০১৩ সালে পরিচিত কয়েকজনকে দেখে অনলাইনে ইলেক্ট্রনিক সামগ্রী বিক্রি করতে শুরু করেন। তাতেই হয় লক্ষ্মীলাভ। প্রথম মাসেই প্রায় তিন লাখ টাকা আয় করেন নিক। এখন তিনি প্রায় ৩০০ কোটির মালিক। আমেরিকায় একাধিক ফ্ল্যাট কেনা নিকের। চারটি বিলাসবহুল গাড়ি রয়েছে। বাড়ি থেকেই কাজ করেন আর কোটি কোটি আয় করেন। ব্যর্থতাকে ভয় না পাওয়া এবং হার না মানা মানসিকতাই তাকে এতদূর নিয়ে এসেছে বলে মনে করেন নিক।