থাইল্যান্ডের পর্যটন শহর পাতায়ায় বাংলাদেশিদের খাবারের জন্য আস্থার নাম ‘রুচি রেস্টুরেন্ট’। প্রতিদিন দুপুর থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত জমজমাট থাকে এই রেস্টুরেন্ট। এখানে থাই খাবারের পাশাপাশি বাংলা, ইন্ডিয়ান ও চাইনিজ খাবার রয়েছে। তাই বাঙালিদের পছন্দের শীর্ষে এই রেস্টুরেন্ট।
নোয়াখালী জেলার কবিরহাট থানার মোহাম্মদ মহিন ১২ বছর আগে পাতায়ার সেট্রাল রোডে বিচের পাশে রেস্টুরেন্টটি গড়ে তুলেছেন। বুধবার (১৯ জুলাই) রাত ৯টায় রেস্টুরেন্টে কাস্টমারদের তেমন ভীড় লক্ষ্য করা যায়নি। তবে কিছু কিছু পর্যটককে নাস্তা করতে দেখা গেছে। আবার কেউ কেউ পার্সেলও নিয়ে যাচ্ছে। এখানে রাত ১০টার পর থেকে জমজমাট বিক্রি শুরু হয়। চলে শেষ রাত পর্যন্ত। কারণ পাতায়া দিনের বেলায় সুনসান নীরবতা।
জানা গেছে, ২০০৯ সাল থেকেই থাইল্যান্ডে রয়েছেন মহিন। ২০১১ সালে এক বন্ধুর পরামর্শে পাতায়াতে রেস্টুরেন্ট গড়ে তোলেন তিনি। পাশাপাশি আরও ব্যবসা করেন তিনি। রেস্টুরেন্টে ম্যানেজারের দায়িত্বে রয়েছেন মহিনের একই এলাকার শহিদ উল্লাহ। তিনি ছাড়া আরও ১৩ জন কর্মকর্তা, কর্মচারী রয়েছেন এই প্রতিষ্ঠানে। শহিদ ছাড়া অন্যরা নেপাল, মিয়ানমার ও থাইল্যান্ডের নাগরিক।
রুচি রেস্টুরেন্টের ম্যানেজার শহিদ উল্লাহ বলেন, আমি ২০১৭ সাল থেকে এই রেস্টুরেন্ট ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্বে রয়েছি। এখানে আসা বাংলাদেশি, ইন্ডিয়ান, ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়ার পর্যটকরা আমাদের রেস্টুরেন্টে আসেন। অনেক চায়না পর্যটকও আমাদের নিয়মিত কাস্টমার। পাতায়ায় আমরা থাই খাবারের পাশাপাশি বাঙালি খাবার তৈরি করে থাকি। বাংলাদেশি লোকজন দেখলে আমাদেরও খুব ভালো লাগে।
রেস্টুরেন্ট মালিক মোহাম্মদ মহিন জানান, বহু বাংলাদেশি পর্যটক থাইল্যান্ড ও পাতায়ায় বেড়াতে আসেন। এখানে এসে তারা বেশি সমস্যায় পড়েন খাবার নিয়ে। ইন্ডিয়ান রেস্টুরেন্টগুলোতে তারা খেয়ে তৃপ্তি পান না। এ কারণেই আমার এক বন্ধুর পরামর্শে রেস্টুরেন্ট খোলার সিদ্ধান্ত নিই। আলহামদুলিল্লাহ! বেশ ভালো সাড়া পেয়েছি। অনেকে দেশ থেকে আসার আগেই খাবারের অর্ডার দিয়ে রাখেন।
তিনি জানান, বাংলাদেশি পর্যটকদের জন্য খাবারে ১০ শতাংশ ডিসকাউন্ট রয়েছে। বছরে সব সময় ভালো বেচাকেনা করে থাকি। তবে সবচেয়ে বেশি ঝামেলা থাকে নভেম্বে, ডিসেম্বর, জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে। তখন এত বেশি চাপ থাকে দম ফেলানোর সময় পাই না। এই চার মাস প্রতিদিন প্রায় ১ লাখ থেকে ১ লাখ ২০ হাজার বাত পর্যন্ত বিক্রি করে থাকি। এমনি সারা বছর প্রতিদিন ৪০ হাজার থেকে ৫০ হাজার বাত বিক্রি হয়।
অল্পদিনের মধ্যেই রুচি রেস্টুরেন্ট বাংলাদেশিদের জন্য বাঙালি খাবারের নির্ভরযোগ্য প্রতিষ্ঠানে পরিণত হচ্ছে।
থাইল্যান্ডে বসবাস করা পাকিস্তানের নাগরিক, টেক্সিক্যাব চালক মুহুম্মদ ফয়সাল জানান, পাতায়াতে কোনো যাত্রী নিয়ে আসলে খাবারের জন্য রুচি রেস্টুরেন্টে নিয়ে আসি। এখানে খাবারগুলো রুচি সম্মত। রেস্টুরেন্ট মালিক মহিন ভাই অনেক ভালো মানুষ এবং খুবই আন্তরিক।