নেদারল্যান্ডসের আমস্টারডাম শহরের আকর্ষণ কম নয়। গোটা বিশ্বের পর্যটকরা সেখানে ঢু মারেন৷ মাত্রাতিরিক্ত পর্যটনের ফলে স্থানীয় বাসিন্দাদের অসুবিধা দূর করতে পৌর কর্তৃপক্ষ বেশ কিছু পদক্ষেপ নিচ্ছে।
এলাকার মেয়র হিসেবে আমেলি স্টেন্স আমস্টারডাম পৌর কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধি। তিনি জানান, ‘আমরা হোটেল নির্মাণ বন্ধ করছি।
শহরের কেন্দ্রস্থলে কোনো নতুন হোটেল নেই। ফলে আরো কম পর্যটক সেখানে থাকতে পারছেন। ২০৩০ সালের মধ্যে নদীতে ক্রুজের সংখ্যা অর্ধেকে কমানোর বিষয়ে আমরা ভাবনাচিন্তা করছি। এর ফলেও চাপ কিছুটা কমবে।
তা সত্ত্বেও পর্যটকদের সংখ্যা কমাতে শহরে আর কী করা যেতে পারে, সেটা স্থির করা কঠিন।’পৌর কর্তৃপক্ষ কেন্দ্রস্থলের বাইরে কয়েকটি ভবন অধিগ্রহণ করেছে। আমস্টারডামের যেসব বাসিন্দা কেন্দ্রস্থলে ভিড়ে ভরা এলাকায় আর যেতে চায় না, এর ফলে তাদের সুবিধা হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
আমস্টারডামে পর্যটকরা মূলত খালে ভ্রমণ করতে ভালোবাসেন, ফুলের বাজার ঘোরেন, সুন্দর ছবি তোলেন এবং অবশ্যই কফি শপ ও লাল বাতি এলাকায় ঢু মারেন।
পর্যটনের ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ কায়েম করার প্রশ্নে মতানৈক্য রয়েছে।
শহরের পথচারীদের মধ্যেও এ বিষয়ে নানা মত শোনা গেল। একজন বলেন, ‘আমার মতে পর্যটন আমস্টারডাম এবং নেদারল্যান্ডসের জন্য ভালো। আমি জানি, বার্সেলোনা এমন কিছু করার চেষ্টা করছে। এয়ারবিএনবির মাধ্যমে মানুষকে সহজে ফ্ল্যাট ভাড়া দিতে দেওয়া হচ্ছে না।
তাদের লাইসেন্স নিতে হচ্ছে। আমার ধারণা, আরো বেশি হোটেল ঘরভাড়া বাড়িয়ে পর্যটকদের আওতার বাইরে চলে যাচ্ছে। শেষ পর্যন্ত দেশটির আরো ক্ষতি হবে।’
অন্য এক পথচারী মনে করেন, স্থানীয় মানুষ যে পর্যটকদের ঢলে নিয়ন্ত্রণ চাইছে, আমরা মনে করি সেটা তিনি পুরোপুরি বুঝতে পারছেন। আরেকজনের মতে, পৃথিবীটা ছোট হয়ে আসছে। ভ্রমণ অনেক সহজ হয়ে গেছে। ফলে সুন্দর জায়গাগুলোতে খুব বেশি ভিড় হচ্ছে।ডিনখেমান কোমো ‘এনাফ ইজ এনাফ’ নামের নাগরিক উদ্যোগের সভাপতি। তিনি চান, পৌর কর্তৃপক্ষ মাত্রাতিরিক্ত পর্যটনে রাশ টানতে আরো উদ্যোগ নেবে। তিনি বলেন, ‘বিদেশ থেকে মানুষ আসে। তারা টিকটকে দেখে, এখানে বিশেষ এক ধরনের বিস্কুট পাওয়া যায়। তাই এসব মানুষ লাইনে দাঁড়িয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে অপেক্ষা করছে। এখানে অনেক যানবাহনের ভিড়। ফলে পথচারীরা নীরবে রাস্তার ওপর হাঁটতে পারছে না।’
মাত্রাতিরিক্ত পর্যটনের মোকাবেলা করতে পৌর কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যেই একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছে। বর্তমানে ছুটি কাটানোর জন্য স্বল্পমেয়াদি বাসাভাড়া অনেক বেড়ে গেছে। ইউরোপে প্রায় অন্য কোথাও রাত কাটানোর জন্য এত চড়া মূল্যের কর দিতে হয় না। শহরের কেন্দ্রস্থলে বিশাল ট্যুরিস্ট বাসের প্রবেশ নিষিদ্ধ। রেড লাইট এলাকায় বার ও নাইট ক্লাব আজকাল আগেই বন্ধ করে দিতে হয়, কিন্তু কর্তৃপক্ষ আরো পদক্ষেপ নিতে চায়।
Like this:
Like Loading...