নেপাল ও ভুটানে প্রতিবছর অনেক বাংলাদেশি ঘুরতে যান। ঝাঁকে ঝাঁকে পর্যটক নেপালে ঘুরতে যান হিমালয় দেখতে ও ট্রেকিং করতে। মন্দির ও বৌদ্ধবিহারের স্থাপনাগুলো নেপালের দর্শনীয় স্থানের মধ্যে অন্যতম। শুধু কাঠমান্ডুতেই পাঁচটি দর্শনীয় জায়গা রয়েছে। আরেক দিকে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি ভুটান। দেশটি কার্বন নেগেটিভ দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম।
পর্যটকদের ভিড় লেগে থাকা দেশটিতে বাংলাদেশিদের ভিসা লাগে না। আর তাই প্রতিবছর দেশের অসংখ্য পর্যটক ঘুরতে যান ভুটানে। দুটি দেশই এবার পর্যটকদের জন্য চালু করেছে নতুন নিয়ম। নেপাল চালু করেছে ইলেকট্রনিক ট্রাভেল অথরাইজেশন বা ইটিএ সিস্টেম। অন্যদিকে পর্যটকদের প্রতিদিনের ভ্রমণ ১০০ ডলারে নামিয়ে এনেছে ভুটান।
নেপাল বাংলাদেশি পর্যটকদের জন্য নতুন ইটিএ জারি শুরু করেছে। ২৭ আগস্ট রোববার নেপালের ঢাকার দূতাবাসের ফেসবুক পেজে এ-সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়, নেপালে যেতে আবেদনকারী সব ব্যক্তির জন্য ভিসা স্টিকার বা হাতে লেখা ভিসা প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। তবে কিছু প্রক্রিয়া আগের মতোই থাকছে। ভিসার আবেদন প্রক্রিয়া এবং অন্যান্য পূর্বশর্ত, যেমন পাসপোর্ট এবং প্রয়োজনীয় নথি বা কাগজপত্র জমা দেওয়ার পদ্ধতি অপরিবর্তিত রয়েছে। বিনা মূল্যে অন-অ্যারাইভাল ভিসার ব্যবস্থা চালু করার পর বাংলাদেশি পর্যটকদের জন্য এবার নতুন ইটিএ জারি করেছে নেপাল। বাংলাদেশি পর্যটকদের আর হাতে লেখা ভিসা দেওয়া হবে না। এই ভিসার জন্য আবেদন করার সময় দিতে হবে পাসপোর্ট সাইজ ছবি, জাতীয় পরিচয়পত্র বা বার্থ সার্টিফিকেট এবং পাসপোর্ট।
বাংলাদেশ থেকে ভুটানের দূরত্ব কম। আর ট্রানজিট ভিসার ব্যবস্থা করা গেলে সেখানে যাওয়া যায় সড়কপথেও। কম খরচে দেশের বাইরে ভ্রমণের ক্ষেত্রে পর্যটকদের অনেকের পছন্দের দেশ ভুটান। আর সার্কভুক্ত দেশ হওয়ায় বাংলাদেশিদের জন্য ভুটান ভ্রমণ আরও সুবিধাজনক। এবার ভুটানও কমিয়ে দিল পর্যটকদের কাছ থেকে নেওয়া প্রতি রাতের ফির পরিমাণ। এই ফি ২০০ ডলার থেকে কমিয়ে আনা হয়েছে ১০০ ডলারে।
২৫ আগস্ট শুক্রবার দেশটির সরকার এক বিবৃতিতে এ কথা জানায়। গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে পর্যটকদের কাছ থেকে নেওয়া প্রতি রাতের জন্য ফির পরিমাণ ৬৫ মার্কিন ডলার থেকে বাড়িয়ে ২০০ ডলারে উন্নীত করেছিল দেশটি। ‘টেকসই উন্নয়ন ফি’ হিসেবে এই অর্থ নেওয়া হচ্ছে বলে জানানো হয়। বাড়তি এই অর্থ পর্যটকদের মাধ্যমে উৎপাদিত অতিরিক্ত অর্থ কার্বন নিঃসরণ কমাতে ব্যবহৃত হবে বলে উল্লেখ করে ভুটান কর্তৃপক্ষ। এবারের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন এবং সামগ্রিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে পর্যটন খাতের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার পরিপ্রেক্ষিতে এ সিদ্ধান্ত নেয় দেশটি।
আবহাওয়া এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বিবেচনা করে সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর—এই ৩ মাস ভুটান ভ্রমণের জন্য ভালো সময়। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের বাইরে দেশটিতে পাওয়া যাবে স্থাপত্যশিল্প এবং র্যাফটিং করার মতো রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা।