ঈদুল আজহা উপলক্ষে নতুন করে সেজেছে পর্যটন নগরী রাঙামাটি। প্রস্তুত স্থানীয় আবাসিক হোটেল, মোটেল, রেস্টুরেন্ট, পর্যটনকেন্দ্র ও রিসোর্টগুলো। ঈদের টানা ছুটিতে পর্যটকের ঢল নামবে—এমনটাই আশা পর্যটন ব্যবসায়ীদের। ইতোমধ্যে আবাসিক হোটেলগুলোর বেশিরভাগ কক্ষ বুকিং হয়ে গেছে।
পর্যটন ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, এবার ঈদের ছুটি টানা পাঁচ দিন। দীর্ঘ ছুটিতে পর্যটকদের বরণ করতে প্রস্তুত তারা। ইতোমধ্যে শহরের হোটেল-মোটেলের ৫০ শতাংশ কক্ষ বুকিং হয়ে গেছে। দেশের পরিস্থিতি ও আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ঈদের ছুটিতে পর্যটকের ঢল নামবে। কারণ প্রতি ঈদে হ্রদ-পাহাড়ের অপরূপ সৌন্দর্য দেখতে ছুটে আসেন দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ভ্রমণপিপাসুরা। এবারও ব্যতিক্রম হবে না। ইতোমধ্যে পর্যটনকেন্দ্রগুলোর পরিচ্ছন্নতার কাজ শেষ হয়েছে। এখন পর্যটকদের বরণ করে নেওয়ার অপেক্ষায় তারা।
স্থানীয় সূত্র জানায়, বর্ষা মৌসুমে পাহাড় সাজে ভিন্ন রূপে। কোথাও মেঘের লুকোচুরি, কোথাও প্রকৃতির সতেজ রূপ। যেন মায়াবি ক্যানভাস। এরই মধ্যে বৃষ্টিতে প্রাণ ফিরে পেয়েছে শুভলং ও ধুপপানিসহ জেলার সবগুলো ঝরনা। সেই রূপ উপভোগ করতে ছুটে আসছেন পর্যটকরা। এবার ঈদের ছুটিতে চাপ বাড়বে কয়েকগুণ। সবুজ পাহাড় ও ঝরনার জলে গা ভেজাবেন তারা। তাতেই দূর হবে শহুরে জীবনের ক্লান্তি।
এখানে আকর্ষণীয় স্পটের মধ্যে রয়েছে—ঝুলন্ত সেতু, শুভলং ঝরনা, রাজবন বিহার, জেলা প্রশাসনের বাংলো, কাপ্তাই হ্রদ, পলওয়েল পার্ক, বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফের সমাধিসৌধ, কাপ্তাই-আসামবস্তি সড়ক ইত্যাদি। এ ছাড়া শহরের বাইরে রয়েছে বাঘাইছড়ির সাজেক ভ্যালি, কর্ণফুলী নদী, কাপ্তাই বিদ্যুৎকেন্দ্র, কর্ণফুলী পেপার মিলস ও কাপ্তাই জাতীয় উদ্যান।
এদিকে, ঈদের ছুটিতে পর্যটকদের সেবা দিতে বাড়তি প্রস্তুতি চলছে সবখানে। হোটেল, মোটেল, রেস্টুরেন্ট, পর্যটনকেন্দ্র ও রিসোর্টগুলোতে চলচে বুকিং। পর্যটকদের কাছে বাড়তি মনোযোগ পাচ্ছে প্রকৃতির কোলে গড়ে ওঠা ইকো কটেজ ও হাউজবোটগুলো। ইতোমধ্যে দেড় শতাধিক রিসোর্ট ও ৯টি হাউজ বোটের ৭০ শতাংশ বুকিং হয়ে গেছে। পাশাপাশি শহরের থেকে নিরিবিলি দ্বীপে সময় কাটাতে চাইলে রিসোর্টে থাকার সুযোগ থাকছে। আবাসনের ক্ষেত্রে পর্যটকদের পছন্দের তালিকায় আছে ইকো কটেজ। পর্যটকদের ভ্রমণ নিরাপদ করতে নিরাপত্তা জোরদার করেছে ট্যুরিস্ট পুলিশ।
পর্যটক বরণের প্রস্তুতির কথা জানিয়ে নীলাঞ্জনা বোট ক্লাবের ম্যানেজার মিন্টু চাকমা বলেন, ‘ঈদ উপলক্ষে ২৭ জুন থেকে ৬ জুলাই পর্যন্ত রিসোর্ট ও হাইজ বোটে বুকিং চলছে। ইতোমধ্যে অনেক রুম বুকিং হয়ে গেছে। আশা করছি, এবারের মৌসুমটা ভালো কাটবে।’
রাঙ্গাদ্বীপ রিসোর্টের ম্যানেজার মো. আলমাস খান বলেন, ‘রাঙাদ্বীপের পূর্বাশয় এলাকায় ২২টি রুম আছে। এর মধ্যে ঈদের দিন থেকে ৮ জুলাই পর্যন্ত প্রায় ৭০ শতাংশ রুম বুকিং হয়ে গেছে। আশা করছি, বাকি রুমও বুকিং হয়ে যাবে। আমরা পর্যটকদের বরণে পুরোপুরি প্রস্তুত আছি।’
রাঙামাটি সরকারি পর্যটন কমপ্লেক্সের ব্যবস্থাপক আলোক বিকাশ চাকমা বলেন, ‘মোটেলের ৫০ শতাংশ কক্ষ বুকিং হয়েছে। এবার ঈদের ছুটিতে রেকর্ডসংখ্যক পর্যটক আসবেন বলে আশা করছি।’
পর্যটকদের জন্য থাকছে তিন স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা উল্লেখ করে ট্যুরিস্ট পুলিশের রাঙামাটি জোনের এসআই মো. আইয়ুব আলী বলেন, ‘সবগুলো স্পটে থাকবে ট্যুরিস্ট পুলিশ। ভ্রমণ নিরাপদ করতে ট্যুরিস্ট পুলিশের পাশাপাশি জেলা পুলিশের সদস্যরাও বিভিন্ন স্পটে দায়িত্বপালন করবেন।’