শীতকালে অরুণাচলের প্রশাসনিক সদর শহর তাওয়াং-এ গেলে মনে হবে যেন তিব্বতে বেড়াতে এসেছেন। যদিও এখানে প্রায় সারা বছরই বেড়াতে যাওয়া যায়। স্ফটিক নীলের মতো জলের হ্রদ নিজের চোখে দেখতে গেলে এখান চলে আসুন। এছাড়াও ট্রেকিং, রাফটিং সবই করতে পারবেন এখানে। তাওয়াং মনাস্ট্রি, যশবন্ত গড়, জং জলপ্রপাত, সঙ্গেতসর হ্রদ, তাওয়াং ওয়ার মেমোরিয়াল ঘুরে নিতে পারেন। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় সাড়ে তিন হাজার উঁচুতে অবস্থিত তাওয়া শহরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য আপনাকে মুগ্ধ করবে। এখান থেকে ইন্দো-চিন সীমানা দেখতে পাওয়া যায়। গুড়পি এবং চং-চুগমি পর্বতমালা, তাওয়াং চু নদী এবং তাওয়াং উপত্যকা এক কথায় অপূর্ব। অসম এবং অরুণাচল প্রদেশের রাজধানী থেকে তাওয়াং পৌঁছোনো যায়। জুন থেকে অক্টোবরের মধ্যে তাওয়াং যাওয়া ভালো। এই সময়ের মধ্যে অরুণাচলের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক এবং ধর্মীয় উৎসব অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়। (Photo credit: istock.com)
দিল্লি থেকে ৪১৭ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত উত্তরাখণ্ডের পাহাড়ি গ্রাম কৌশানি। কৌশানি শব্দটি এসেছে কুমায়নি শব্দ থেকে। কৌশানি থেকে ত্রিশূল শৃঙ্গের সৌন্দর্য্য ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। উত্তরবঙ্গে গিয়ে সবাই যেমন কাঞ্চনজঙ্ঘা দেখে মুগ্ধ হন তেমনই কৌশানি থেকে দেখতে পাওয়া ত্রিশূল শৃঙ্গও সকলকে মুগ্ধ করবে। এখানকার আবহাওয়া সারা বছরই মনোরম। এই অঞ্চলের এক শ্রেণির মানুষ আজও সংস্কৃত ভাষায় কথা বলে থাকেন। পাহড়া, হ্রদ, আশ্রম মন্দিরে এই গ্রামটি পরিপূর্ণ। (Photo credit: istock.com)
বাংলার যেমন দার্জিলিং তেমনই হিমাচলের জনপ্রিয় পর্যটনস্থল হল কুলু-মানালি। হিমাচলপ্রদেশের কুলু জেলার অপূর্ব সুন্দর শৈলশহর এই মানালি। হিমালয়ের কোলে বসবাসকারী কুলু-মানালির রাস্তাঘাট, অরণ্য, পর্বত, গাছপালা সবই অপূর্ব সুন্দর। পকেট এবং ছুটি দুটোই ভর্তি থাকলে ঘুরে আসতে পারেন মানালি থেকে। ঠান্ডা আবহাওয়ায় বন্ধু বান্ধবের সঙ্গে এখানে আনন্দ করার অভিজ্ঞতাই আলাদা। পরিবারের সঙ্গে খুব ভালো সময় কাটানো যায় এখানে। মানালির অপূর্ব সুন্দর পাহাড় এবং জঙ্গলের কোনও তুলনা হয় না। অ্যাডভেঞ্চারপ্রেমীরা মানালিতে প্যারাগ্লাইডিং, র্যাপেলিং, রিভার রাফটিং, কোয়াড বাইকিং, ট্রেকিং, ওয়াইল্ড লাইফ স্পটিং করতে পারেন। ঘুরে বেড়াতে পারেন কুলুর অচেনা গ্রামগুলিতে। নানা বাজেটের হোটেল যেমন পাবেন, তেমনই তাঁবু এবং শীতকালে ইগলু হোটেল পেয়ে যাবেন এই স্থান। (Photo credit: istock.com)
কাশ্মীরের হেমিস জায়গাটি জাতীয় উদ্যান এবং সেখানকার স্নো লেপার্ডের জন্য বিশ্ববিখ্যাত। পরিকাঠামোর অভাব এবং যাতায়াতের অসুবিধার কারণে এই স্থানে পর্যটকদের সমাগম হয় না বললেই চলে। এখানে একটু কষ্ট করেই যেতে হয়। তবে প্রকৃত প্রকৃতিপ্রেমী এবং অ্যাডভেঞ্চার প্রেমীরা অনেক কষ্ট স্বীকার করেও সেখানে পৌঁছোনোর চেষ্টা করে। যদিও সেই সংখ্যাটা হাতে গোনা। স্নো লেপার্ড ছাড়াও এই অরণ্যে পাবেন তিব্বতি নেকড়ে, ইউরেশিয়ান বাদামি ভাল্লুক এবং লাল খেঁকশেয়াল। সঙ্গে সেখানকার অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য তো আছেই এবং সবচেয়ে বড় কথা স্থানটি একেবারে নিরিবিলি। (Photo credit: TOI.com)
পার্টি, হই হুল্লোড় পছন্দ হলে গোয়ার থেকে ভালো জায়গা আর কিছুই হতে পারে না। গোয়ায় পৌঁছে অনেক নতুন বন্ধু পেয়ে যাবেন। সকালে অফিসের কাজ সেরে সন্ধ্যায় তাঁদের সঙ্গে পার্টি করুন। গোয়ায় নানা বাজেটের হোটেল, হোমস্টে রয়েছে। খাবার এবং পানীয় সেখানে বেশ সস্তা। সময় পেলেই গাড়ি, স্কুটার কিংবা জিপে চড়ে সারাদিন গোয়া ট্যুর করে ফেলতে পারেন। ডিস্কো, পাব, পার্টি, নাচ-গান সব কিছুরই অঢেল জোগান রয়েছে সেখানে।
ওয়াটার স্পোর্টস্ ছাড়াও বাইক রাইডিং, ডলফিন স্পটিং এনজয় করা যায়। রাতে গোয়ার জীবন অন্যরকম। তেমনই পাল্লা দিয়ে রয়েছে সেখানকার জিভে জল আনা সি ফুড। ইচ্ছে হলে গোয়ার বাগা, ক্যান্ডোলিন, কালাঙ্গুতে সৈকতে চাইলে ঘুরে আসতে পারেন। ছুটির দিন ঘুরে আসুন গ্র্যান্ড আইল্যান্ড, দুধসাগর জলপ্রপাত, অগুয়াদা দুর্গ, টিটো স্ট্রিট সহ প্রায় সমস্ত জনপ্রিয় জায়গাগুলি থেকে। রোম্যান্স এবং ঘোরা দুইই হবে। মনও ভালো থাকবে। (Photo credit: Economic.com)
সোনারকেল্লার টানে বাঙালিরা যেমন রাজস্থানের জয়সলমীর দুর্গের উদ্দেশে ছুটে যান, তেমনই সোনার শহর জয়সলমীরের টানে এই শহরে পা রাখেন বিদেশি পর্যটকরা। হলদে পাথরের তৈরি এই শহরের বাড়ি, কেল্লা কিংবা ইমারতে সূর্যের আলো পড়লে মনে হয় যে সোনার তৈরি। এই কারণেই বিশ্বের স্বর্ণ শহরের তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে জয়সলমীর। জয়সলমীরের দুর্গ, বাড়িঘর, রাস্তা, রাজাদের সাত মহলা অট্টালিকা, মন্দির, দেখতে প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ বিদেশি পর্যটক এখানে উপস্থিত হন। এখানে আছে প্রায় এক হাজার পুরোনো একটি গ্রন্থাগার। এর পোশাকী নাম জ্ঞান ভাণ্ডার। সপ্তদশ শতকের নানা পাণ্ডুলিপিও এখানে যত্ন সহকারে রাখা আছে। (Photo credit: TOI.com)
হাজার দশেক টাকার মধ্যে বেড়াতে যাওয়ার আরেকটি অসাধারণ জায়গা হল কেরালার আরবসাগরের তীরের বরকালাতে চলে যান। বরকালার আরেক নাম ‘পার্ল অফ আরেবিয়ান সি’। এটির খোঁজ হাতে গোনা পর্যটকই রাখেন। এখানকার সমুদ্র সৈকতে মনোরঞ্জনের যাবতীয় উপকরণ রয়েছে। প্যারাগ্লাইডিং, প্যারাসেইলিং, জেট স্কিইং কী চান? আর সবচেয়ে বড় কথা গোটা এলাকাই পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন।
প্রকৃতির কোলে বসে থেকেও অত্যাধুনিক জীবনযাপন করার দারুণ ডেস্টিনেশন এটি। সমুদ্রের তীরে অবস্থান করলেও বরকালা শহরে সবুজ পাহাড়, হ্রদ, দুর্গ, লাইটহাউজ, ঝরনা সবই পাবেন। মনের সুখে মাছ ধরার সুযোগও পাবেন এখানে। বিদেশি প্রকৃতিপ্রেমীদের কাছে এই স্থানটি বেশ জনপ্রিয়। শীতে তো বটেই গরমেও এখানকার আবহাওয়া অসাধারণ সুন্দর। (Photo credit: pexels.com)