বিশ্বের সর্বোচ্চ ১০টি পর্বতের ৮টিই নেপালে। হিমালয়কোলের এই দেশে পাঁচ হাজার মিটারের বেশি উচ্চতার পর্বতই আছে অর্ধশতাধিক। প্রতিবছর শরৎ ও বসন্তকালে পর্বতারোহণসহ ট্রেকিংয়ের জন্য নেপাল ভ্রমণ করেন হাজারো পর্যটক। অ্যাডভেঞ্চারের পাশাপাশি নির্মল প্রকৃতি, ঐতিহ্য, হিন্দু ও বৌদ্ধ ধর্মের পুণ্যস্থানের জন্যও পর্যটকের কাছে দেশটি অনন্য। নেপালের ভিনদেশি পর্যটকদের একটা বড় অংশই আবার সার্কভুক্ত দেশগুলো থেকে যায়।
ভারত আর চীন দিয়ে ঘেরা নেপাল আমাদেরও অন্যতম প্রতিবেশী। পঞ্চগড় থেকে ভারতের শিলিগুড়ি হয়ে মাত্র ১২ কিলোমিটার দূরত্বেই নেপালের স্থলবন্দর। কয়েক বছর আগেও ট্রানজিট ভিসায় ভারত হয়ে এই স্থলপথে নেপাল ভ্রমণে যেতেন বাংলাদেশিরা। সেই সুযোগ বন্ধ হলেও করোনা মহামারির পর নেপালে বাংলাদেশি পর্যটক দিন দিন বাড়ছেই।
নেপাল ট্যুরিজম বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে ৩৬ হাজর ৪৮৩ জন বাংলাদেশি নেপাল ভ্রমণ করেছেন। এবারও যে সেই ধারা অব্যাহত আছে, তা সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান দেখলেই বোঝা যায়। নেপালের সরকারি হিসাবে, চলতি বছরের প্রথম ৯ মাসে ৩২ হাজার ৬৪২ জন বাংলাদেশি নেপালে ঘুরতে গেছেন।
নেপাল ট্যুরিজম বোর্ড সম্প্রতি ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বিদেশি পর্যটকের তথ্য প্রকাশ করেছে। এ সময় নেপাল ভ্রমণ করেছেন ৮ লাখ ১৬ হাজার ৬৩৯ জন বিদেশি পর্যটক। তাঁদের মধ্যে বাংলাদেশি পর্যটকের সংখ্যা ৩২ হাজার ৬৪২ জন। গত নয় মাসের হিসাবে নেপালে পর্যটক আগমনে শীর্ষ পাঁচ দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান পঞ্চম।
নেপালে সবচেয়ে বেশি পর্যটক ভারতের। এ বছরের প্রথম ৯ মাসে ২ লাখ ৫৭ হাজার ৩ জন ভারতীয় পর্যটক নেপাল ভ্রমণ করেছেন। দ্বিতীয় অবস্থানে আছে যুক্তরাষ্ট্র, দেশটির ৭৭ হাজার ২১৬ জন নাগরিক নেপাল ভ্রমণ করেছেন। এরপর যথাক্রমে চীন (৭৫ হাজার ৬৪০) ও যুক্তরাজ্য (৩৬ হাজার ৩১৩)। শীর্ষ ১০–এ আরও আছে অস্ট্রেলিয়া (২৭ হাজার ৩৩৭), শ্রীলঙ্কা (২২ হাজার ৮০), থাইল্যান্ড (১৮ হাজার ৮১৭), দক্ষিণ কোরিয়া (১৮ হাজার ৭৭০) ও জার্মানি (১৮ হাজার ৫১৮)।
বাংলাদেশের পর্যটন খাত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, দেশের মানুষের মধ্যে আগের তুলনায় ভ্রমণপ্রবণতা বেড়েছে। আগাম ভিসা নিতে হয় না বলেও অনেকে নেপালে ঘুরতে চলে যান। তরুণদের মধ্যে পর্বতারোহণসহ ট্রেকিংয়ে আগ্রহ বেড়েছে বলেও অনেকে অ্যাডভেঞ্চারের জন্য নেপালে যাচ্ছেন।