1. [email protected] : চলো যাই : cholojaai.net
নিত্য তোমার যে ফুল ফোটে ফুল বনে
বুধবার, ০৬ অগাস্ট ২০২৫, ০৭:৪০ পূর্বাহ্ন
Uncategorized

নিত্য তোমার যে ফুল ফোটে ফুল বনে

  • আপডেট সময় শুক্রবার, ২১ মে, ২০২১

চেরি ফুলের ওপার সৌন্দর্য যেন আকাশের গায়ে লেখা এক একটি প্রেমের কবিতা। আমেরিকার চেরি ব্লসম মুগ্ধ করে সকলকে।

তখন ফাগুন মাস। সময়টা মার্চের শেষ এপ্রিলের শুরু। আবার ঠিকানা বদল। প্রবাসে আমার নতুন বাস ক্যালিফোর্নিয়ার ক্যাপিটাল সিটি, সাক্রামেন্টো উপত্যকার অন্তর্ভুক্ত এক ছবির মতো শহর, এল্ক গ্রোভ। শীতে পাহাড়ে যখন বরফ পড়ে তখন স্যানফ্রান্সিস্কো বে থেকে কিছুটা দক্ষিণের এই উপত্যকায় বৃষ্টি হয় যখন তখন। চৈত্র শেষের ওই অহরহ বর্ষণ আর শিরশিরে হাওয়াকে বিদায় দিয়ে ঋতুরাজ জাঁকিয়ে বসেছে। ধীরে ধীরে আমার চারপাশের প্রকৃতি শীত ঘুম থেকে আড়মোড়া ভেঙে, ন্যাড়া গাছগুলিতে নতুন প্রাণ সঞ্চার করে চলেছে। পত্রবিহীন ডালগুলো ফেটে কুঁড়ি বেরিয়েছে সবে। আধফোঁটা মুকুলগুলি অধীর প্রতিক্ষায় আছে পরিপূর্ণ প্রস্ফুটনের।

শেষ শীতের সেই বিনা কারণে বৃষ্টি থেমে গেছে,তাই ঠান্ডা কিছুটা কমতেই আবার একদিন বিকেলে পথে বেরিয়ে চোখ জুড়ল আমার। দেখলাম হালকা গোলাপি আভায় ফুটে ওঠা সহস্র ফুলের সমাহার! ডাল ছাপিয়ে এগাছ থেকে সে গাছে গোলাপি আবেশ ভরা শত ফুলের শামিয়ানা। প্রত্যক্ষ করলাম পল্লবহীন ডালে ফুঁটে ওঠা ফাগুনের প্রথম পসরা, বন্য চেরি ফুল। চেরি ফুলের ওই ওপার সৌন্দর্য যেন আকাশের গায়ে লেখা এক একটি প্রেমের কবিতা।

হালকা গোলাপি, সাদা… এ যেন এক রঙের ঢেউ, একের পর এক আসছে মিলিয়ে যাচ্ছে আবার আসছে। বহু যুগের ওপার থেকে যেন বয়ে নিয়ে আসছে কোন বসন্তের বার্তা। আকাশের নীল ক্যানভাসে গোলাপি, সাদায় প্রকৃতির আঁকা অনিবর্চনীয় এক ছবি! মার্চের শুরুতে রাস্তার ধারে নীরবে দাঁড়িয়ে থাকা গাছগুলির নিরাবরণ রূপ চোখকে বেশ অস্বস্তিতে ফেলেছিল। সেই নিরাভরণ কঙ্কালসার গাছগুলির দৈন্য দশা ঘুচে গেল কয়েক দিনের মধ্যে। নির্দয় শীতকালের নিদ্রাভঙ্গ যেন। হেমন্তের অভিশাপে যে কানন একদিন রিক্ত নিঃস্ব ছিল বসন্তে তার দৈন্যদশা ঘুচল।

কয়েক সপ্তাহ আগে যে গাছগুলি পথের ধারে দাঁড়িয়ে ছিল রিক্ত নিরাভরণ আজ তার সারা শরীরে গোলাপি ফুলের গয়না। এই গাছগুলিতে একটাও সবুজ পাতা দেখতে পাবেন না এপ্রিলের শুরুতে। যদিও ফুলের এই আভরণ ক্ষণিকের! মাত্র কয়েক সপ্তাহের। তারপরেই একটু একটু করে ঝরে যায় ফুলগুলি। সাদা ফুলের পাঁপড়িতে ঢেকে যায় পথ। চেরি ফুলের পাপড়ি বিছানো পথে চলতে গিয়ে থমকে দাঁড়াই। আমার মতোন কোন ভিনদেশি পথিকের মনে পড়ে যায় বাংলার বকুল বিছানো পথ। নতুন পথের সন্ধানে যে পথ ফেলে এসেছি অনেক দূরে। এই পথের নাম ফ্র্যাঙ্কলিন রোড। এই দিকটা এই ছোট্ট শহরতলির সীমানা। অফিস ফেরতা গাড়ি গুলোর বাড়ি ফেরার তাড়া তখন। মোড়ের সিগনালে খানিকক্ষণ দাঁড়াতেই দেখলাম পাশের পার্কে হয়ে রয়েছে অপূর্ব সব ল্যাভেন্ডার আর লায়লাক ফুল। পশ্চিমের সূর্য তখন প্রাণ ঢেলে আশীর্বাদ করছিল ওই নববধূর মতো মাথা নোয়ানো লাইলাক ফুলের ঝোপটাকে। ‘একি  লাবণ্যে পূর্ণ প্রাণ প্রাণে এস হে’… দুরে নীল পাহাড়টা যেন ওপাশে যাওয়ার নীরব হাতছানি। ওই পাহাড়ের গা দিয়েই বয়ে চলেছে সাক্রামেন্টো রিভার। জলোচ্ছাস নেই চুপচাপ বয়ে চলেছে এঁকেবেঁকে। এই জায়গাটাকে বলে সাক্রামেন্টো ভ্যালি। ওই শীর্ণ অলস নদীটার ডেল্টা শোর ব-দ্বীপ, তারই মাঝে এই ছোট্ট শহরতলি এল্ক গ্রোভ। পিচ ঢালা চওড়া গাড়ির রাস্তার পাশ দিয়ে লম্বা চলে গেছে পায়ে হাঁটার পথ। দুই পাশে পাইন, স্প্রুস, দেবদারু জুনিপার গাছের সারি মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। কিছু মেপলের সারি, একটা দুটো রডোডেনড্রন মধ্যে দিয়ে এঁকেবেঁকে পথ।

রাস্তায় কোন ধুলো ময়লা নেই এখানে। প্রতিটি পাড়ায় আছে গাছপালা ঘেরা নিজস্ব পার্ক। রক্ষণাবেক্ষণ হয় নিখুঁত ভাবে। সারমেয়দের জন্য আছে পার্কের  মধ্যেই বেড়া ঘেরা আলাদা ডগ পার্ক। কুকুর নিয়ে অনেকেই বেড়াতে বেরোন। পোষ্যরা নোংরা করলে মালিক হাতে গ্লাভস পরে তুলে নিয়ে ট্র্যাশ করেন নির্ধারিত জায়গায়। আমার চলার পথের দু ধারে  বিশাল পাচিলের ভিতরে কয়েকটা বাড়ির ব্যাক ইয়ার্ড দেখা যাচ্ছে। এদেশে এই ব্যাক-ইয়ার্ডই পরিবার নিয়ে এক নিশ্চিন্ত অবসরের জায়গা। সবুজ ঘাস আর কিছু বুনো ফুলের ছোট ঝোপঝাড়ও আছে এই দিকটা। আমেরিকার অন্যান্য সব শহরে প্রতিবছর সমান করে সবুজ ঘাস থাকাটা আমার চক্ষুসওয়া হয়ে গিয়েছে। কিন্তু ক্যালিফোর্নিয়া এসে এই ঘাস মাঝে মধ্যে একটু আধটু অগোছালো মনে হল। আসলে ক্যালিফোর্নিয়াতে পেস্টিসাইড বা কেমিক্যাল ব্যবহারের অনেক বিধিনিষেধ আছে। অনেক ক্ষেত্রেই অর্গানিক সার দেওয়া হয়। সব জায়গায় ঘাস একেবারে সবুজ নয়।

বহুতল আর স্প্যাগেটির মতো প্যাচানো হাইওয়ে,গাড়ি ঘোড়ায় ব্যস্ত জনবহুল রাস্তা ঘাট… এটাই কিন্তু আসল আমেরিকা নয়। প্রকৃতিপ্রেমী এই দেশের মানুষগুলো মাটির কাছেই থাকতে ভালবাসে। গ্রাম বাংলার মতোনই গাছ গাছালি ভরা শান্ত সুনিবিড় ছোট ছোট পাড়াগুলিতে ছোট বড় মাঝারি সব ধরণেরই বাড়ি নিয়ে মার্কিনিরা থাকেন। শহরের সর্বত্র রয়েছে সবুজের সমারোহ। শীতের সময় প্রকৃতি ঝিমিয়ে পড়লেও এপ্রিলের শুরু থেকে আবার শীত ঘুম ভেঙে জেগে ওঠে নতুন জীবনীশক্তি নিয়ে। গৃহস্থের বাড়ির সামনে, রাস্তার পাশে, মলের পার্কিং লটে থরে থরে গোলাপ হাওয়ায় হেলেদুলে ফাগুনের সৌরভ ছড়ায়। ক্যালিফোর্নিয়ায় এত ফুল ফোটে ফাগুনে যে, তা শুনলাম নাকি দেখা যায় মহাকাশ থেকেও! প্রকৃতি এই দেশটাকে উজাড় করে দিয়েছে আর মানুষগুলি প্রকৃতির কাছে নতজানু।

চৈতী দিনের বৃষ্টি ভেজা শিরশিরে মন খারাপের বিকেল গুলো বিদায় দিয়ে ‘ফুল ফাগুনের মরসুম’ এখন মার্কিন মুলুকে। ভোরে পাখির কলতান, গোলাপ বাগানে প্রজাপতির আনাগোনা, অজস্র মরসুমি ফুলের বাহার আর অনিন্দ্য সুন্দর চেরি ফুলের শুভ্রতার সমাহার.. দেখে বিভোর প্রবাসী মন।

বসন্তের দূত এই চেরি ফুলকে জাপানিরা সাকুরা বলে। প্রেম আর ভক্তির এক র্মূত প্রতীক এই সাকুরা। জাপানের মাটিতে জন্মানো এই গাছগুলোর প্রকৃত নাম প্রনাস সেরুলতা। প্রাণবন্ত জীবনের প্রতীক চেরি ফুল। প্রায় দেড় হাজার বছর ধরে জাপানিরা এই ফুলটিকে নিয়ে উৎসব পালন করে আসছে, যাকে ‘হানামি’ উৎসব বলা হয়। হানামি জাপানি শব্দ, এর অর্থ পুষ্প দর্শন বা ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করা। অষ্টম শতাব্দীতে জাপানীরা সর্বপ্রথম চেরি ব্লসম ফেস্টিভ্যাল শুরু করে। জাপান, চিন এবং দক্ষিণ কোরিয়া তিন দেশের লোকেরাই এর প্রেমে পাগল। এই তিনটি দেশেই বসন্তকালে সাদা ও গোলাপি রঙের চেরি ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করা এক জাতীয় প্রবণতা। উৎসবের দিনটি এক মিলনমেলায় পরিণত হয়। হানামি মানে সাধারণ ভাষায় চেরি গাছের নীচে বসে পিকনিক আর চেরির সৌন্দর্য উপভোগ করা। চেরির সৌন্দর্য ক্ষণস্থায়ী, এক দু’সপ্তাহের মাথায় পাপড়িগুলো ঝরে পড়া শুরু হয়। ক্ষণস্থায়ী মানব জীবনের যৌবনও বেশিদিনের নয়। ক্ষণস্থায়ী জীবনে সব সময় সুন্দর থাকার চেষ্টা করা, এই দর্শন জাপানিরা নাকি চেরির কাছ থেকেই পেয়েছেন।

প্রচলিত হানামি প্রথা অনুযায়ী জলাশয়ে প্রতিফলিত প্রস্ফুটিত চেরি ফুল সবচেয়ে বেশী উপভোগ্য আর ঠিক একারণেই ওয়াশিংটন ডিসির পটোম্যাক নদীর কিনারা ঘেঁষে অসংখ্য চেরী ফুল গাছ লাগানো হয়েছে।

১৯১২ সালের ২৭ মার্চ আমেরিকার সঙ্গে বন্ধুত্বের সম্পর্ক জোরদার করতে ওয়াশিংটনের মেয়রকে চেরি গাছ উপহার দিয়েছিলেন টোকিওর মেয়র। তাই ওয়াশিংটন ডিসি জুড়ে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে অসংখ্য চেরি গাছ, বসন্তে সেখানে ফোটে হাজার হাজার চেরি ফুল। নদীর ধারে পুষ্পশোভিত চেরি গাছগুলির প্রতিফলন প্রবাহমান জলের মধ্যে তৈরি করে অপরূপ প্রতিবিম্ব। প্রতি বছর ডিসি-তে তিন হাজার চেরি গাছ নিয়ে হয় চেরি ব্লসম ফেস্টিভাল। ২২ মার্চ থেকে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত উৎসব চলে। প্রকৃতির চমৎকার এই নান্দনিক দৃশ্য দেখতে অগণিত পর্যটক ডিসিতে আসেন।

উত্তর ও দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়ার শহরতলিতে, সিয়াটল, সালেম, ব্রুকলিন, ডালাস, সেন্ট লুইস, বস্টন, ম্যাকন, ন্যাশভিল, ট্রাভার্স সিটি, ট্রয় মিশিগান, কেটি এই সমস্ত আমেরিকান সিটি ও শহরতলিতে ১৫ই মার্চ থেকে ১৫ই এপ্রিলের মধ্যে এলেই ঠিক দেখা পেয়ে যাবেন চেরি ব্লসমের। যত্নে লাগানো গাছগুলো প্রতি বসন্তে শোভা ছড়িয়ে চলেছে। জাপানিদের মতো মার্কিনিরাও এই ফুলের রূপে মুগ্ধ। জাপান ছাড়া এই ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে হলে ফোঁটার মরসুম অনুযায়ী মার্চের শেষ থেকে এপ্রিলের দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যে আমেরিকার এইসব জায়গায় এলে এই ফুল উপভোগ করা যায়।
এই ফুলের সৌন্দর্য দেখতে হলে কলকাতা থেকে যেকোন আমেরিকাগামী ফ্লাইটে মার্চের শেষে চলে আসুন মার্কিন মুলুকের নামকরা চেরি উৎসবের শহরগুলিতে। ইন্টারনেটে গুগল করে দেখে নিন ওয়াশিংটন ডিসি বা অন্যান্য শহরের উৎসবের দিন ক্ষণ ও ম্যাপ।

পৃথিবী সেরা চেরি ফুলের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়া রাজ্যের ম্যাকন শহর বিশেষ খ্যাতি অর্জন করেছে। ওয়াশিংটন ডিসির থেকেও প্রায় শত গুন বেশি,সাড়ে তিন লক্ষ পিঙ্ক চেরি গাছ আছে এখানে। বসন্তের শুরুতে চেরির এই প্রস্ফুটন পাল্টে দেয় আমেরিকার রাজধানীসহ অন্যান্য শহরের দৃশ্যপট। পৃথিবীর বুকে এক সুন্দর স্বর্গ রাজ্য নেমে আসে যেন।

‘সব ঠাঁই মোর ঘর আছে’… মনে পড়ে পঁচিশ বছর আগের কথা। যেবার প্রথম পাড়ি দিয়েছিলাম মার্কিন মুলুকে। সেদিন সেখানেও ছিল বন্য চেরি ফুলের ছাদনা তলা! পথের পাশে ফুটে উঠা ওই মে-ফ্লাওয়ারের শুভ্র রূপে মুগ্ধ মন সেদিন গেয়েছিল ‘নিত্য তোমার যে ফুল ফোটে ফুল বনে’। কবি বলতেন এই বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডের মধ্যে লুকিয়ে আছে জীবনের পরম সত্য। সৃষ্টিকর্তার খোঁজ পেয়েছিলেন তিনি এই প্রকৃতির মাঝে। তার সেই পরম উপলব্ধির প্রতিফল আজ আমার ভাবনায় আবার নতুন করে দেখা দিল। পথে বেরিয়ে প্রকৃতির সেই অজানা শক্তিকে অনুভব করলাম। সৃষ্টি সুখে মত্ত প্রকৃতির রূপে বিভোর হল মন।

তাপমাত্রা তখন ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস, সূর্য ডোবার আগে তাই ঠান্ডায় কেঁপে কুল, আলুথালু চুল। পশ্চিমের আকাশে তখন সূর্য দেবের রঙিন রুল। ঘড়িতে প্রায় সাতটা। সেদিন থেকে ডেলাইট সেভিংস শুরু, অর্থাৎ সময় এগিয়ে যাবে আস্ত একটি ঘণ্টা। দিন শেষের ওই আলোটুকু তড়িঘড়ি সেভ করলাম আমিও। আমার স্মৃতির ব্যাঙ্কে নিঃসন্দেহে এক বড় সেভিংস ওই মোহময়ী মুহূর্তটুকু। আমার নতুন ঠিকানায় তখন ফাগুন মাস। ক্যালিফোর্নিয়ার রাজধানী শহরের ‘অজানা কোন পথের ধারে যেখানে ফুল ফুটেছে ভারে ভারে।

আমেরিকায় কোন শহরে আসবেন

জর্জিয়ার ম্যাকনে, সিয়াটলের ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটির ক্যাম্পাস, ওয়াশিংটন ডিসি, সালেম, পোর্টল্যান্ড, ওরেগন, ডালাস, বোস্টন, সেন্ট লুইস, মিসৌরির বোটানিক্যাল গার্ডেন, ন্যাশভিল, টেনেসি, নিউ ইয়র্ক সিটির ব্রুকলিনের বোটানিক্যাল গার্ডেন।

ফুল ফোটার সময়

মার্চের মাঝ থেকে এপ্রিলের মাঝামাঝি।

-জয়া ঘোষ

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Developed By ThemesBazar.Com