মালয়েশিয়ায় ১ মার্চ থেকে শুরু হয়েছে অভিবাসী প্রত্যাবাসন কর্মসূচি। এ কর্মসূচির মাধ্যমে নিজ দেশে ফিরতে আটদিনে দেশটির অভিবাসন বিভাগে আবেদন করেছেন ৫ হাজার ৯৮৩ জন অবৈধ অভিবাসী। যার মধ্যে ১ হাজার ৮৬৪ জন তাদের নিজ দেশে ফিরেছেন।
শুক্রবার (৮ মার্চ) এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন, দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাইফুদ্দিন নাসুশন ইসমাইল।
তিনি বলেন, প্রত্যাবাসন কর্মসূচিতে ৩ হাজার ১১৫ জন সবচেয়ে বেশি নিবন্ধিত হয়েছে ইন্দোনেশিয়ান নাগরিক। তারপরে বাংলাদেশের ৮৪৬ জন এবং ভারতের ৭০০ জন।
এছাড়া অন্যান্য দেশ থেকে রেকর্ডকৃত অভিবাসীদের মধ্যে রয়েছে পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, নেপাল, মিয়ানমার, ফিলিপাইন, ইয়েমেন, সিরিয়া, মিশর, নাইজেরিয়া, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম এবং চীন। তবে বাংলাদেশি নিবন্ধিতদের মধ্য থেকে কতজন দেশে ফিরেছেন তা জানা যায়নি।
প্রত্যাবাসন কর্মসূচির মাধ্যমে চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে স্বেচ্ছায় নিজ দেশে ফিরে যেতে হবে। এমনটি বলেছেন, অভিবাসন বিভাগের মহাপরিচালক, দাতুক রুসলিন জুসোহ। এই কর্মসূচির মাধ্যমে নথিপত্রবিহীন বিদেশিরা যারা আত্মসমর্পণ করবে তাদের বিরুদ্ধে কোনো বিচার ছাড়াই তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হবে।
প্রত্যাবাসন কর্মসূচি সফলের লক্ষ্যে সংবাদ সম্মেলন করেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাইফুদ্দিন নাসুশন ইসমাইল। ছবি- সংগৃহীত
তবে অভিবাসন অপরাধের জন্য তাদের জরিমানা দিতে হবে। নতুন কর্মসূচির আওতায় কোনো রকম নথিপত্র ছাড়া মালয়েশিয়া প্রবেশ করে থাকলে তাদের ৫০০ রিঙ্গিত আর ভিসার মেয়াদ শেষ হয়েছে খুব বেশি দিন হয়নি এমন অবৈধ অভিবাসীদের জন্য জরিমানা দিতে হবে ৩০০ রিঙ্গিত।
তবে, যাদের আটক করা হচ্ছে, রিমান্ডে নেওয়া হচ্ছে এবং চার্জ করা হচ্ছে তারা পিআরএম প্রোগ্রামে অংশগ্রহণের যোগ্য নয় বলে জানিয়েছেন, ইমিগ্রেশন মহাপরিচালক রুসলিন জুসোহ।
দেশে ফিরতে ইমিগ্রেশন অফিসে যে নথিগুলো আনতে হবে তা হলো, ফ্লাইট টিকিট, বৈধ ভ্রমণ নথি (পাসপোর্ট), পাসপোর্ট না থাকলে নিজ দূতাবাস থেকে ইস্যুকরা ট্রাভেল পারমিট যাকে বলা হয় ট্রাভেল পাস।
রুলিন বলেন, পিআরএম প্রোগ্রাম সফল করতে ইন্দোনেশিয়া এবং বাংলাদেশসহ বিদেশি দূতাবাসগুলোর সহযোগিতা চাইতে শিগগিরই দূতাবাসগুলোর সঙ্গে আলোচনা অব্যাহত রয়েছে।
টিকিটসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে ইমিগ্রেশন অফিসে আত্মসমর্পণ করার পর অভিবাসীদের ১৪ দিনের মধ্যে দেশ ত্যাগ করতে হবে। ১৮ বছরের কম বয়সীদের জরিমানা দিতে হবে না।
জরিমানা পরিশোধের বিষয়ে রুসলিন বলেন, বিভাগ বা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পিআরএম বাস্তবায়নে কোনো এজেন্ট নিয়োগ করেনি। শুধু ক্রেডিট কার্ড, ডেবিট কার্ড বা টাচ ‘এন গো ই-ওয়ালেটের মতো ইলেকট্রনিক পেমেন্ট মোডগুলো জরিমানা পরিশোধের জন্য গৃহীত হবে। দালালদের খপ্পরে না পড়ে সরাসরি ইমিগ্রেশনে যোগাযোগ করতে অভিবাসীদের সতর্ক করছে সংশ্লিষ্ট বিভাগ।
এদিকে দূতাবাস থেকে ট্রাভেল পারমিট নিতে বাংলাদেশিদের কোন কোন কাগজপত্র দিতে হবে তা জানিয়ে কুয়ালালামপুর বাংলাদেশ হাইকমিশনের ফেসবুক পেজে একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে।