কিশোরগঞ্জের নিকলী বেড়িবাঁধে হাওরের সৌন্দর্য উপভোগ করতে ভিড় করেছেন হাজারো পর্যটক। বিশাল জলরাশি ও হাওরের দিগন্ত ছোঁয়া অপরূপ দৃশ্য দেখে মুগ্ধ সবাই।
শুক্রবার (১২ জুলাই) দুপুর থেকে নিকলীর বেড়িবাঁধ এলাকায় পর্যটকদের ঢল দেখা গেছে। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ ছুটে এসেছেন হাওরের মনোমুগ্ধকর সৌন্দর্য উপভোগ করতে।
বিগত বেশ কয়েক বছর ধরেই বর্ষায় পর্যটকদের আগমন ঘটে নিকলী হাওরে। তারই সুবাদে উপজেলার কয়েক হাজার মাঝিসহ বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার মানুষের জীবনমানেরও উন্নয়ন ঘটছে।
২০০০ সালের দিকে কিশোরগঞ্জ জেলার নিকলী উপজেলা সদরকে বর্ষায় ভাঙনের কবল থেকে রক্ষায় সরকার সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এ বেড়িবাঁধ নির্মাণ করে।
এছাড়া উপজেলার ছাতিরচর গ্রামের ভাঙনরোধে রোপণ করা হয় হাজারো করচগাছ। হাওরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগের জন্য সারাদেশের মানুষ বর্ষা মৌসুমে ছুটে আসে নিকলী হাওরে। তাই নিকলীকে বর্তমানে হাওর পর্যটনকেন্দ্র বলা হয়ে থাকে।
শুক্রবারে দেখা যায়, দলবেঁধে হাজারো পর্যটককে বেড়িবাঁধের রাস্তায় ও নৌকায় ঘুরাঘুরি করতে দেখা গেছে। প্রতি বছর বর্ষাতে নিকলী বেড়িবাঁধে দেশের বিভিন্নস্থান থেকে আসা হাজার হাজার পর্যটকের আগমন ঘটে। এতে স্থানীয় নৌকার মাঝি ও হোটেল-রেস্তুারার মালিকদের ব্যবসাও ভালো হয়।
ট্রলারের মাধ্যমে পর্যটকদের হাওরে ঘুরিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন কাশেম আলী। তিনি বলেন, ‘সারা বছরই আমরা এই বর্ষার অপেক্ষায় থাকি। কখন হাওরে পানি ও পর্যটকদের আগমন ঘটবে।’
‘পর্যটকদেরকে হাওরের বিভিন্ন স্থান ঘুরিয়ে আমার মতো কয়েক হাজার মাঝি ও মালিকের জীবিকার ব্যবস্থা হয়। ঈদের পর থেকে হাওরে ছুটির দিনে হাওরের পর্যটকরা আসতে শুরু করেছে। আজকে পর্যটকদের হাওরে ঘুরিয়ে আমার ভালো আয় হয়েছে।’
গাজীপুর থেকে পরিবারের সঙ্গে ঘুরতে আসা রূপা আক্তার বলেন, ‘পরিবারে সঙ্গে নিকলী হাওরে ঘুরতে এসেছি। ট্রলারে করে হাওর ঘুরলাম। অনেক আনন্দ পেয়েছি। পরিবেশটাও বেশ ভালো লেগেছে। তবে হাওড়ে ঘুরতে আসা মানুষদের জন্য নিরাপত্তা আরও বাড়াতে হবে।’
উপজেলা আওয়ামী লীগের কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক আল-আমিন বলেন, ‘বর্ষা মৌসুমে বিশেষ করে ছুটির দিনে কয়েক হাজার পর্যটক নিকলী বেড়িবাঁধ সংলগ্ন হাওরে ঘুরতে এসে। তাদের আগমনে আমরা খুবই আনন্দিত।’
‘উপজেলার প্রায় ১৫-২০ হাজার মানুষ বর্ষা মৌসুমে পর্যটনকেন্দ্রীক জীবিকা নির্বাহ করে। পর্যটকদের জন্য যেন হাওরের সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারে সেদিকে স্থানীয় সামাজিক, রাজনৈতিক ও প্রশাসন সজাগ দৃষ্টি রাখেন।’
নিকলী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোশারফ হোসেন বলেন, ‘বেড়িবাঁধে আসার আগে দুটি স্থানে চেকপোস্টের ব্যবস্থা করা হয়েছে।’
‘বেড়িবাঁধ এলাকায় সিভিল ও পোশাকধারী পুলিশ সদস্যরা সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা দিচ্ছেন। নিরাপদে ও নির্বিঘ্নে ভ্রমণের জন্য নিরাপত্তা সংক্রান্ত সব ধরনের সুবিধা পুলিশের পক্ষ থেকে দর্শনার্থীদের দেওয়া হচ্ছে।’