শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৫৮ পূর্বাহ্ন

নিউজিল্যান্ডে উচ্চশিক্ষা: স্কলারশিপ

  • আপডেট সময় সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

নিউজিল্যান্ডের বিশ্বমানের বিদ্যাপীঠ ও শিক্ষার্থীবান্ধব দেশটিতে উচ্চশিক্ষায় আগ্রহী অনেকের কাঙ্ক্ষিত গন্তব্য। দেশটিতে উচ্চশিক্ষায় আবেদনের পদ্ধতি, স্টুডেন্ট ভিসা, স্কলারশিপ ও আনুষঙ্গিক খরচ সম্বন্ধে জেনে নেওয়া যাক।

*কেন নিউজিল্যান্ড অন্যতম সেরা গন্তব্য

বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতির আশ্রয়স্থল নিউজিল্যান্ড বিশ্বব্যাপী নিরাপদ দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম। বিশ্বের শান্তিপূর্ণ দেশগুলোর তালিকায় দেশটি চতুর্থ। ইংরেজি ভাষাপ্রধান দেশ হওয়ায় নিমেষেই এখানকার পরিবেশের সঙ্গে অভ্যস্ত হয়ে যেতে পারেন আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা। নিউজিল্যান্ডের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ডিগ্রি বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত। বিশেষ করে পরিবেশবিজ্ঞান, কৃষি ও বায়োটেকনোলজির মতো ক্ষেত্রগুলোয় গবেষণার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বিশ্বজুড়ে সুপরিচিত। সেগুলোর মধ্যে ইউনিভার্সিটি অব অকল্যান্ড কিউএস বিশ্ব র‍্যাঙ্কিংয়ে ৬৫তম অবস্থানে রয়েছে।

সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ের পাশাপাশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো নিজ উদ্যোগেও উন্নয়নশীল দেশগুলোর মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য স্কলারশিপের সুযোগ দিয়ে থাকে। সব মিলিয়ে বাংলাদেশসহ বিশ্বের নানা দেশের মেধাবীদের ক্যারিয়ার গঠনের জন্য সমূহ সম্ভাবনার দেশ নিউজিল্যান্ড।

*সেরা বিশ্ববিদ্যালয়

ইউনিভার্সিটি অব অকল্যান্ড, ইউনিভার্সিটি অব ওটাগো, ম্যাসি ইউনিভার্সিটি, ভিক্টোরিয়া ইউনিভার্সিটি অব ওয়েলিংটন, ইউনিভার্সিটি অব ক্যান্টারবেরি, ইউনিভার্সিটি অব ওয়াইকাটো, লিংকন ইউনিভার্সিটি, অকল্যান্ড ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি প্রভৃতি।

*পড়াশোনার সেরা বিষয়গুলো

*বিজ্ঞান (জীববিজ্ঞান, রসায়ন, পদার্থবিদ্যা)

*ইঞ্জিনিয়ারিং (সিভিল, ইলেকট্রিক্যাল ও মেকানিক্যাল)

*ব্যবসা ও অর্থনীতি

*কলা ও মানবিক (ইংরেজি সাহিত্য ও ইতিহাস)

*আইন

*মেডিসিন ও স্বাস্থ্যবিজ্ঞান

*কম্পিউটার সায়েন্স

*তথ্যপ্রযুক্তি

*ট্যুরিজম ও হোটেল ম্যানেজমেন্ট

*কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা

*আর্কিটেকচার।

আবেদনের উপায়

কিউই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভর্তির কার্যক্রম সাধারণত বছরের দুটি সময়ে শুরু হয়ে থাকে। একটি হচ্ছে বসন্তে তথা ফেব্রুয়ারি থেকে মার্চ এবং শরতে অর্থাৎ জুলাই থেকে আগস্ট। বসন্তের ভর্তি মৌসুমটি শিক্ষার্থীদের কাছে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়। কেননা, এ সময় অনেক বেশি কোর্স থেকে নিজের কাঙ্ক্ষিত কোর্সটি পাওয়ার সুযোগ থাকে। সেই সঙ্গে থাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরেই বসবাসের সুযোগ। তা ছাড়া সেমিস্টারের শুরুতেই ফেব্রুয়ারিতে উচ্চ সম্ভাবনা থাকে খণ্ডকালীন চাকরি মিলে যাওয়ার।

*শরৎ ও বসন্ত ছাড়া বিগত বছরগুলোয় ভর্তির নতুন আরেকটি পদ্ধতি চালু হয়েছে, যেটি রোলিং ইনটেক নামে পরিচিত। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা বছরের যেকোনো সময়েই ভর্তির জন্য আবেদন করতে পারেন। এ পদ্ধতিতে সব কটি আসন পূরণ না হওয়া পর্যন্ত ভর্তির আবেদন চলতে থাকে। রোলিং ইনটেকের প্রধান সুবিধা হলো এখানে সর্বাধিক চাহিদাসম্পন্ন প্রোগ্রামগুলোয় ভর্তি হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। তবে সব বিশ্ববিদ্যালয় বা প্রোগ্রামেই রোলিং ইনটেক থাকে না। এ বিষয়ে নিশ্চিত হওয়ার জন্য নির্দিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে নির্দিষ্ট প্রোগ্রামের নির্দেশনাগুলো চেক করতে হবে।

ভর্তির আবেদনের একমাত্র উপায় হলো বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ওয়েবসাইটে আবেদন করা। প্রযোজ্য ক্ষেত্রে অনলাইন আবেদনের পর যাবতীয় কাগজপত্র কুরিয়ার করার প্রয়োজন হতে পারে। আবেদনের সময়সীমা ও ভর্তি পরীক্ষার প্রয়োজনীয়তা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে।

আবেদনে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

*উচ্চমাধ্যমিক বা স্নাতক পরীক্ষার সার্টিফিকেট ও একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট

*ইংরেজি ভাষার দক্ষতার প্রমাণস্বরূপ আইইএলটিএস (স্কোর: ৬ দশমিক ৫ থেকে ৭) বা টোয়েফল (স্কোর: ৭৯ থেকে ১০০)

*কারিকুলাম ভিটা (সিভি) বা পোর্টফোলিও

*স্টেটমেন্ট অব পারপাস (এসওপি) বা পারসোনাল স্টেটমেন্ট

*রিকমেন্ডেশন লেটার (১ থেকে ৩টি)

*গবেষণা প্রস্তাব (পিএইচডি প্রোগ্রামের জন্য)

*বৈধ পাসপোর্ট

*আর্থিক সচ্ছলতার প্রমাণ (ব্যাংক স্টেটমেন্ট বা অন্যান্য আর্থিক নথি)

*স্কলারশিপপ্রাপ্ত হলে তার প্রমাণপত্র

*বিদেশি শিক্ষার্থীর স্বাস্থ্যবিমা

*আবেদন ফি দেওয়ার রসিদ

*বিষয়ভিত্তিক পরীক্ষার স্কোরকার্ডের জন্য অতিরিক্ত নথি (জিআরই বা জিম্যাট)

স্টুডেন্ট ভিসার অনলাইন আবেদন

এই ভিসার মাধ্যমে সর্বোচ্চ চার বছর পর্যন্ত নিউজিল্যান্ডের যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে ফুলটাইম অধ্যয়ন করা যায়। স্টুডেন্ট ভিসার আবেদনের পিক টাইম হচ্ছে অক্টোবর থেকে মার্চ। তাই রওনা হওয়ার অন্তত তিন মাস আগে থেকে আবেদন শুরু করা জরুরি। সরাসরি অনলাইনে আবেদনের জন্য https://www.immigration.govt.nz/new-zealand-visas/visas/visa/full-fee-paying-student-visa লিংকে নতুন অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে হবে। পর্যায়ক্রমে প্রাসঙ্গিক তথ্য প্রদানপূর্বক প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের স্ক্যান কপি আপলোডের মাধ্যমে আবেদন সম্পন্ন করতে হবে।

আরও পড়ুন

ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

*নিউজিল্যান্ডের বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তির অফার লেটার

*১ কপি ছবি, যার সফট কপিটি হবে—৫০০ কিলোবাইট থেকে ৩ মেগাবাইটের মধ্যে; রেজল্যুশন ৯০০x১ হাজার ২০০ পিক্সেল থেকে ২ হাজার ২৫০x৩ হাজার পিক্সেলের মধ্যে; ফাইলটি হবে জেপিজি বা জেপিইজি ফরম্যাটের

*বৈধ পাসপোর্ট

*চেস্ট এক্স-রেসহ মেডিকেল সার্টিফিকেট

*পুলিশ সার্টিফিকেট

*উচ্চশিক্ষার উদ্দেশ্যে নিউজিল্যান্ড গমন নিয়ে একটি কাভার লেটার বা পারসোনাল স্টেটমেন্ট

*বিগত শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ ও একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট

*নিউজিল্যান্ডের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে সরবরাহ করা অধ্যয়ন ফি প্রদানের রসিদ (অন্তত এক বছর বা একটি প্রোগ্রামের ফি হতে হবে)

*আর্থিক সচ্ছলতার প্রমাণ: বছরে ২০ হাজার (প্রতি নিউজিল্যান্ড ডলার ৭৩ দশমিক ৯৫ বাংলাদেশি টাকা হিসাবে ১৪ লাখ ৭৯ হাজার ৩৪ টাকা)। ১ বছরের কম সময়ের প্রোগ্রামের জন্য প্রতি মাসে ১ হাজার ৬৬৭ নিউজিল্যান্ড ডলার বা ১ লাখ ২৩ হাজার ২৭৮ টাকা। এর সঙ্গে নিউজিল্যান্ড থেকে বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তনের জন্য একটি বিমান টিকিট কেনার জন্য অতিরিক্ত অর্থ থাকতে হবে। পুরো তহবিলের প্রমাণ হিসেবে ন্যূনতম তিন মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট দেখাতে হবে।

এ ছাড়া তহবিল প্রদর্শনের সমতুল্য মাধ্যমগুলো হলো

*অ্যাকাউন্টে কমপক্ষে তিন মাস ধরে গচ্ছিত থাকা ফিক্সড ডিপোজিট

*স্থায়ী কোনো সম্পত্তি, যেমন বাড়িভাড়া থেকে অর্জিত আয় (এ ক্ষেত্রে বাড়ির খাজনা পরিশোধের রসিদ যুক্ত করতে হবে)

*শিক্ষা ঋণ (এ ক্ষেত্রে মাল্টিন্যাশনাল ব্যাংক থেকে সেই ঋণ অনুমোদনের চিঠি দিতে হবে)

শিক্ষার্থী নিজেই নিজের খরচ বহন করলে যে নথিগুলো দেখাতে হবে

*আয়ের প্রমাণস্বরূপ নিয়োগকর্তার কাছ থেকে কর্মসংস্থানের সনদ, যেখানে শিক্ষার্থীর পদ ও বেতন উল্লেখ থাকবে

*ট্যাক্স রিটার্ন

*প্রদর্শনকৃত তহবিলের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট অবশ্যই শিক্ষার্থীর নিজের বা অনুমোদিত কোনো আর্থিক গ্যারান্টর বা স্পনসরের নামে থাকতে হবে। একজন শিক্ষার্থী শুধু একজন স্পনসরকে দেখাতে পারবেন। এ স্পনসর হতে হবে শিক্ষার্থীর পরিবারের সদস্য, যেমন মা–বাবা, ভাই-বোন, স্বামী-স্ত্রী, দাদা-দাদি। এ ক্ষেত্রে শিক্ষার্থী ও গ্যারান্টরের সম্পর্ক প্রমাণের স্বার্থে তার যে নথিগুলো দিতে হবে, তা হলো—

-পাসপোর্ট, জন্মসনদ বা জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি)

-সরকারপ্রদত্ত প্রশংসাপত্র, যেমন নাগরিকত্বের প্রশংসাপত্র বা বিবাহের সনদ

*তাঁর আয়ের বৈধতার জন্য যে নথিগুলো দরকার হবে, তা হলো-

-নিয়োগকর্তা কর্তৃক ইস্যুকৃত কর্মসংস্থানের প্রশংসাপত্র (পদ ও বেতন উল্লেখসহ)

*স্পনসরকে দুটি ফরম পূরণ করতে হবে—স্পনসরশিপ ফর টেম্পরারি এন্ট্রি (https://www.immigration.govt.nz/documents/forms-and-guides/inz1025.pdf)

*ফিন্যান্সিয়াল আন্ডারটেকিং ফর এ স্টুডেন্ট-(https://www.immigration.govt.nz/documents/forms-and-guides/inz1014.pdf)

*নিউজিল্যান্ডে অধ্যয়নের সময় আবাসনের প্রমাণপত্র

-স্কলারশিপ পেয়ে থাকলে তার প্রমাণ

-চিকিৎসা ও যাতায়াতের বিমা (এর মধ্যে অধ্যয়নের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত জীবনযাত্রা বাবদ সম্ভাব্য ব্যয় এবং নিউজিল্যান্ডে বিমানে আসা-যাওয়ার খরচ সংকুলান হতে হবে)

-বাংলাদেশ থেকে নিউজিল্যান্ডের প্লেনের টিকিট

-ইংরেজি ভাষার দক্ষতার প্রমাণ (আইইএলটিএস বা পিয়ারসন টেস্ট ইংলিশ বা টোয়েফল সনদ)

*ভিসা প্রক্রিয়াকরণ ফি কত

-অনলাইনে ভিসা আবেদন ফি ৪৩০ নিউজিল্যান্ড ডলার কিংবা ৩১ হাজার ৮০০ টাকা, যেটি ভিসা, মাস্টারকার্ড বা ইউনিয়ন পে-এর মাধ্যমে পরিশোধ করা যাবে। ফির মধ্যে আন্তর্জাতিক ভিজিটর কনজারভেশন অ্যান্ড ট্যুরিজম লেভি (আইভিএল) বাবদ ৩৫ ডলারের (২ হাজার ৫৮৮ টাকা) একটি চার্জ রয়েছে। এটি আগামী ১ অক্টোবর থেকে ১০০ ডলার (৭ হাজার ৩৯৫ টাকা) করা হবে।

*স্টুডেন্ট ভিসা প্রক্রিয়াকরণের সময় ও ভিসাপ্রাপ্তি

ভিসা প্রস্তুত হতে কমপক্ষে ছয় সপ্তাহ সময় লাগে। অনলাইনে আবেদনের ক্ষেত্রে এই স্টুডেন্ট ভিসা হিসেবে পাসপোর্টে মূলত কোনো ভিসা স্টিকার দেওয়া হয় না। এর পরিবর্তে তা ইলেকট্রনিকভাবে প্রার্থীর পাসপোর্টের বিশদ বিবরণের সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়। এটি প্রার্থী নিউজিল্যান্ডের অনলাইন ইমিগ্রেশনে নিজের অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে দেখতে পারেন। তা ছাড়া ভিসা অনুমোদনের বিষয়টি ই-মেইলের মাধ্যমে নিশ্চিত করা হয়। অর্থাৎ অনলাইনে সব আগে থেকে প্রস্তুত হয়ে যায়। নিউজিল্যান্ডে প্রবেশের আগমুহূর্তে প্রার্থীকে শুধু পাসপোর্ট দেখাতে হয়। তখন পাসপোর্ট নম্বর অনুসারে অনলাইন প্ল্যাটফর্ম থেকে কাস্টমস কর্মকর্তা ভিসার সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারেন।

*পড়াশোনা ও জীবনযাত্রার সম্ভাব্য খরচ কেমন

আন্ডারগ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রামগুলোর জন্য প্রতিবছর ব্যয় হতে পারে ২০ থেকে ৪০ হাজার নিউজিল্যান্ড ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় এটি ১৪ লাখ ৭৯ হাজার ৩৪ থেকে ২৯ লাখ ৫৮ হাজার ৬৮ টাকার সমান। মাস্টার্সের জন্য ২০ থেকে ৪৫ হাজার ডলার (১৪ লাখ ৭৯ হাজার ৩৪ থেকে ৩৩ লাখ ২৭ হাজার ৮২৭ টাকা) বাজেট রাখতে হবে বছরে। আর ডক্টরাল ডিগ্রির জন্য প্রয়োজন হবে ৬ হাজার ৭০০ থেকে ৯ হাজার ৫০০ নিউজিল্যান্ড ডলার (৪ লাখ ৯৫ হাজার ৪৭৬ থেকে ৭ লাখ ২ হাজার ৫৪১ টাকা)। এমবিএ-তে খরচের পরিমাণ ৩১ হাজার ৭৫০ থেকে ৫৫ হাজার ডলার (২৩ লাখ ৪৭ হাজার ৯৬৭ থেকে ৪০ লাখ ৬৭ হাজার ৩৪৪ টাকা)।

নিউজিল্যান্ডে মোটামুটি অল্প খরচের অধ্যয়ন ফি রয়েছে ওয়াইকাটো বিশ্ববিদ্যালয়ে, যা বার্ষিক ২৫ থেকে ৫৫ হাজার নিউজিল্যান্ড ডলারের মতো। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার মূল্যমান ১৮ লাখ ৪৮ হাজার ৭৯৩ থেকে ৪০ লাখ ৬৭ হাজার ৩৪৪ টাকা। তারপর রয়েছে ম্যাসি ইউনিভার্সিটি, যেখানে খরচ হতে পারে ২৩ থেকে ৫৫ হাজার ডলার (১৭ লাখ ৮৮৯ থেকে ৪০ লাখ ৬৭ হাজার ৩৪৪ টাকা)।

মানের ভিত্তিতে নিউজিল্যান্ডের বিভিন্ন শহরে জীবনযাত্রার খরচ বিভিন্ন রকম। ওয়েলিংটনের মতো ব্যয়বহুল শহরে থাকার মাসিক খরচ গড়ে ৪ হাজার ৪০০ ডলার (৩ লাখ ২৫ হাজার ৩৮৮ টাকা)। অকল্যান্ডে থাকার জন্য মাসিক বাজেট রাখতে হবে ৪ হাজার ১৫ ডলার (২ লাখ ৯৬ হাজার ৯১৬ টাকা)। ক্রাইস্টচার্চে ব্যয় হতে পারে ৩ হাজার ৮৮৪ ডলার (২ লাখ ৮৭ হাজার ২২৮ টাকা)। আর সবচেয়ে সাশ্রয়ী শহর হ্যামিল্টনে জীবনযাত্রার জন্য ৩ হাজার ১৮২ ডলারই (২ লাখ ৩৫ হাজার ৩১৪ টাকা) যথেষ্ট।

এসব খরচের মধ্যে বাসাভাড়া, ইউটিলিটি, মোবাইল, খাবার ও যাতায়াত অন্তর্ভুক্ত। তবে সবচেয়ে বেশি খরচ হয় আবাসন খাতে; প্রতি মাসে গড়ে ১ হাজার ৬০০ থেকে ২ হাজার ৫০০ নিউজিল্যান্ড ডলার।

স্কলারশিপ

ব্যয়ভারের চাপকে যথেষ্ট কমিয়ে দিতে নিউজিল্যান্ডে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের স্কলারশিপের সুযোগ। তার মধ্যে সরকারি প্রকল্প নিউজিল্যান্ড এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড ১০ হাজার নিউজিল্যান্ড ডলার (৭ লাখ ৩৯ হাজার ৫১৭ টাকা) পর্যন্ত বৃত্তি দিয়ে থাকে।

*ইউনিভার্সিটি অব অকল্যান্ডের ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্ট এক্সিলেন্স কার্যক্রম থেকে অধ্যয়ন ফিতে সর্বোচ্চ ১০ হাজার ডলার (৭ লাখ ৩৯ হাজার ৫১৭ টাকা) ছাড় পাওয়া যায়।

*ইউনিভার্সিটি অব ওটাগোর অধীনে পরিচালিত প্রকল্পের নাম ইন্টারন্যাশনাল মাস্টার্স স্কলারশিপ। এখানে গোটা এক বছরের অধ্যয়ন ফি মওকুফ পাওয়া যায়। সেই সঙ্গে প্রতিবছরে ১৮ হাজার ডলারের (১৩ লাখ ৩১ হাজার ১৩১ টাকা) উপবৃত্তি থাকে।

মাস্টার্স ও পিএইচডি শিক্ষার্থীদের জন্য অধ্যয়ন, আবাসন ও স্বাস্থ্যবিমার খরচ বহন করে নিউজিল্যান্ড কমনওয়েলথ স্কলারশিপ। এখানে আরও পাওয়া যায় বার্ষিক ৩ হাজার ডলারের (২ লাখ ২১ হাজার ৮৫৫ টাকা) উপবৃত্তি এবং জীবনযাত্রার জন্য প্রতি সপ্তাহে ৪৯১ ডলার (৩৬ হাজার ৩১০ টাকা)।

ভূ-পদার্থবিদ্যা ও ভূবিজ্ঞান নিয়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে এসইজি স্কলারশিপ। এখানে নির্বাচিত মেধাবী শিক্ষার্থীদের বার্ষিক ৩ হাজার ডলার (২ লাখ ২১ হাজার ৮৫৫ টাকা) করে ভাতা দেওয়া হয়।

খণ্ডকালীন চাকরি

নিউজিল্যান্ডের স্টুডেন্ট ভিসায় সেমিস্টার চলাকালে সপ্তাহে সর্বোচ্চ ২০ ঘণ্টা খণ্ডকালীন ও ছুটির দিনগুলোয় ফুলটাইম চাকরি করার অনুমতি থাকে। দেশটির স্থানীয় জনগণের মতো বিদেশি শিক্ষার্থীরাও চাকরির সমান অধিকার পান। ২০২৪ সালের হিসেবে জারিকৃত স্বল্পকালীন চাকরির ন্যূনতম মজুরি ঘণ্টাপ্রতি ১৮ দশমিক ৫২ নিউজিল্যান্ড ডলার (১ হাজার ৩৭০ টাকা) সবার জন্য প্রযোজ্য।

এখানে সর্বাপেক্ষা চাহিদাসম্পন্ন পার্টটাইম চাকরির মধ্যে কল সেন্টার কর্মী, যেখানে গড় মজুরি ঘণ্টাপ্রতি ২১ ডলার (১ হাজার ৫৫৩ টাকা)। শেফ ও খুচরা বিক্রয় প্রতিনিধিদের ২২ ডলার (১ হাজার ৬২৭ টাকা), ওয়েটার বা ওয়েট্রেসরা পান ২৪ দশমিক ৮৮ ডলার (১ হাজার ৮৪০ টাকা)। বারটেন্ডারদের আয় ২৬ ডলার (১ হাজার ৯২৩ টাকা) ও লাইব্রেরি সহকারীদের ২২ থেকে ২৫ ডলার (১ হাজার ৬২৭ থেকে ১ হাজার ৮৪৯ টাকা)।

এ ছাড়া স্থানীয় মাধ্যমিক বা উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের টিউটরিংও উপার্জনের সেরা একটি উপায়। এমনকি এতে কোনো কোনো ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক ৩০ থেকে ৩৫ ডলারও (২ হাজার ২১৯ থেকে ২ হাজার ৫৮৮ টাকা) আসে।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com