স্টপ অ্যান্ড ফ্রিস্ক। এক আতঙ্কের নাম নিউইয়র্কে। বন্দুক হামলাকারীদের ধরতে আর সাধারণ মানুষকে বিপদমুক্ত করতেই এই ব্যবস্থা এনওয়াইপিডির। কিন্তু সেই সুরক্ষার নামে অনেককেই অহেতুক হয়রানি করা হয়েছে। আর তা ধরা পরেছে কেন্দ্রীয় নজরদারিতে। তাতে বলা হয়েছে, স্টপ অ্যান্ড ফ্রিস্কের নামে অসংখ্য মানুষের সঙ্গে যা করা হয়েছে তা অবৈধ।
পর্যবেক্ষক মিলান ডেনেরস্টেইন বলেন, পারিপার্শিক নিরাপত্তার জন্য এনওয়াইপিডি’র বিশেষ ইউনিট গত ১৪ মাসে যে পুলিশিং করেছে তা ছিলো অসাংবিধানিক। কোনো বিচার-বিবেচনা ছাড়াই অনেক মানুষকে থামিয়ে তল্লাশি চালানো হয়েছে। এর মধ্যে একটি প্রিসিঙ্কটে যাদের থামানো হয়েছে তাদের মাত্র ৪১ শতাংশ ছিলো সঠিক। এছাড়া যাদের কব্জা করা হয় তাদের মধ্যে ৬৮ শতাংশই ছিলো অন্যায় আর তল্লাশির আওতায় যাদের আনা হয় তাদের মধ্যেও মাত্র ২৬ শতাংশ ছিলো সঠিক বাকি ৭৬ শতাংই ছিলো অবৈধ।
নেইবারহুড সেফটি টিমস নামে পুলিশের একটি বিশেষ বাহিনী নগরীর ৮০ শতাংশ অপরাধ হয় এমন ৩৪টি এলাকায় তাদের কর্মতৎপরতা চালায়। এই সমেয় তারা যাদের থামিয়েছে তাদের ৯৭ শতাংশই ছিলো কৃষ্ণাঙ্গ কিংবা হিসপ্যানিক।
মেয়র এরিক অ্যাডামসের কার্যালয়ের একজন মুখপাত্র বলেছে, তারা এই জরিপটি সম্পর্কে জেনেছেন এবং বিষয়টি নিয়ে তারা উদ্বিগ্ন। ডেনারস্টেইনের পর্যবেক্ষন পদ্ধতিও তারা খতিয়ে দেখছেন।
মুখপাত্র ফ্যাবিয়েন লেভি বলেন, নেইবারহুড সেফটি টিম মাঠে নামার পর নিউইয়র্কে বন্দুক হামলা কমেছে।
তিনি বলেন, যে অফিসাররা এই টিমে কাজ করেন তারা শুধু নিউইয়র্কারদের নিরাপদ রাখতেই নয় ববং তাদের নাগরিক স্বাধীনতাও নিশ্চিত করতে সচেষ্ট থাকেন। এ লক্ষ্যে তাদের বিশেষ প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়, বলেন লেভি।
তিনি আরও বলেন, অসাংবিধানিক কোনো বাধা অগ্রহণযোগ্য। আমরা নিউইয়র্কারদের প্রত্যাহিক জীবনকে আরও নিরাপদ করতেই কাজ করে যাচ্ছি।
ডেনারস্টেইন তার পর্যালোচনার কাজটি শুরু করেন ২০২২ সালের মার্চে মেয়র এরিক অ্যাডামন নেইবারহুড সেফটি টিমস মোতায়েনের ঘোষণা দেওয়ার পর থেকে। এর আগে অপরাধ-দমন বাহিনী হিসেবে কাজ করতো পুলিশের একটি দল যা বাতিল করে নেইবারহুড সেফটি টিম গঠন করা হয়। এই টিমের লক্ষ্যই হচ্ছে অস্ত্র সহিংসতা কমানো। এই টিমের সদস্যরা বিশেষভাবে তৈরি ইউনিফর্ম পরে, সাধারন গাড়িতে ঘুরে বেড়ান, এবং সন্দেহভাজন কাউকে পেলেই থামিয়ে তল্লাশি করেন।
ডেনারস্টেইন তার প্রতিবেদনে লিখেছেন, দুর্ভাগ্যজনক বিষয় হচ্ছে ফলাফল এসেছে হতাশাজনক।
এর আগে ২০১৩ সাল একজন কেন্দ্রীয় বিচারক রায় দিয়েছিলেন স্টপ অ্যান্ড ফ্রিস্কের নাম এনওয়াইপিডি কৃষ্ণাঙ্গ ও হিসপ্যানিকদের নাগরিক অধিকার লঙ্ঘন করছে। ওই বিচারক এই ব্যবস্থাকে বর্ণবাদী বলেও উল্লখ করেছিলেন। তখন এই ব্যবস্থার অন্যতম উদগাতা সাবেক মেয়র মাইকেল ব্লুমবার্গ এ জন্য ক্ষমাও চেয়েছেন।
ওই রুলের পর এমন থামানো ও তল্লাশির ঘটনা অনেক হারে কমে যায়। ২০১৬ সাল নাগাদ তা বছরে ১১ হাজার ৭৩০ জনে নেমে আসে। অথচ ২০১১ সালে এই সংখ্যা ছিলো ৬৮৬,০০০।
২০২১ সাল থেকে সংখ্যাটি বাড়ছে। এবং পুলিশের অন্যতম টার্গেট হয়ে উঠছে কৃষ্ণাঙ্গ ও হিসপ্যানিকরা, বলা হয়েছে খবরে।