নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে নতুন বছরকে বরণ করছেন পাহাড়ের জনগোষ্ঠী। নানা আয়োজনে নতুন বছরকে বরণ এবং পুরাতন বছরকে বিদায় জানাচ্ছেন তারা। নতুন পোশাক পরে সেজেগুজে নতুন বছরকে বরণ করছেন তারা।
খাগড়াছড়ি
আনন্দঘন পরিবেশে খাগড়াছড়িতে উদযাপিত হচ্ছে বৈসাবি। নতুন বছরকে বরণে চলছে নানা আয়োজন।
খাগড়াছড়ি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউটের উপ পরিচালক জিতেন চাকমা জানান, বাঙালি, চাকমা, মারমা ও ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের প্রত্যেকের রয়েছে নিজস্ব পঞ্জিকা বর্ষ। নতুন বছরকে বরণ করতে ত্রিপুরা জনগোষ্ঠী বৈসু, মারমা জনগোষ্ঠী সাংগ্রাই, চাকমা জনগোষ্ঠী বিজু এবং বাঙালিরা উদযাপন করছে নববর্ষ। চলতি বছর নববর্ষ বরণের অনুষ্ঠান চলছে প্রায় ১০দিন ধরে। নিজস্ব কৃষ্টি-কালচার ও সংস্কৃতির মাধ্যমে বরণ করা হচ্ছে নতুন বছরকে আর বিদায় দেওয়া হয় পুরাতন বছরকে।
খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মংসুইপ্রু চৌধুরী জানান, খাগড়াছড়িতে বসবাসরত সব সম্প্রদায়ের লোকজন সম্মিলিতভাবে বৈসাবি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বরণ করে নতুন পঞ্জিকা বর্ষকে। ঐতিয্যবাহী খেলাধুলা, গানবাজনা, ধর্মীয় আচারের মধ্য দিয়ে নতুন বছরে উদযাপন করা হচেছ।
খাগড়াছড়ির সংসদ সদস্য কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা শুক্রবার (১৪এপ্রিল) সকালে বৈসাবির র্যালি উদ্বোধন করেন। তিনি বলেন, নতুন বছর বরণে ত্রিপুরা জনগোষ্ঠী তিনদিন ধরে উৎসব করছে। অন্যদিকে চাকমারা তিনদিন এবং মারমারা চারদিন ধরে উৎসব করছেন। এই আনন্দ সারা বছর থাকার জন্য কাজ করছে বর্তমান সরকার।
তিনি শান্তি ও উন্নয়নের জন্য সবাইকে সহনশীল হওয়ার আহ্বান জানান।
রাঙামাটি
নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে রাঙামাটিতেও বরণ করা হচ্ছে বাংলা নবর্বষ ১৪৩০। শুক্রবার সকালে রাঙামাটি জেলা প্রশাসন বাংলা নবর্বষ বরণের আয়োজন করে। সকালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে থেকে মঙ্গল শোভাযাত্রা শুরু হয়ে শিল্পকলা একাডেমিতে গিয়ে শেষ হয়।
র্যালিতে উপস্থিত ছিলেন রাঙামাটির সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদার, রাঙামাটির জেলা প্রশসাক মিজানুর রহমান, পুলিশ সুপার মীর আবু তৈহিদসহ জেলার বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তারা।
বিভিন্ন বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের পাশাপাশি সর্বস্তরের মানুষ বর্ণিল সাজে শোভাযাত্রায় অংশ নেন। রমজানের কারণে কিছুটা সীমিত আকারে বাংলা নববর্ষ উদযাপন চলছে।
শোভাযাত্রা শেষে শিল্পকলা একাডেমিতে আয়োজন করা হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। পরে পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে আয়োজিত বিভিন্ন প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।
বান্দরবান
পুরাতন বছরকে বিদায় আর নতুন বছরকে বরণ করে নিতে বাঙালি আর ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর পরিবারগুলো মেতে উঠেছে নববর্ষের আনন্দে।
নববর্ষ উপলক্ষে সকালে বান্দরবান জেলা প্রশাসন ও পার্বত্য জেলা পরিষদের আয়োজনে মঙ্গল শোভাযাত্রা বের হয়। বান্দরবানের রাজার মাঠ থেকে শুরু হয়ে প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে ক্ষুদ্র সাংস্কৃতিক নৃগোষ্ঠী ইনস্টিটিউটে গিয়ে শেষ হয়। শোভাযাত্রায় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ও বাঙালিরা তাদের ঐতিহ্যময় সাজ, ব্যানার ও প্ল্যাকার্ড নিয়ে অংশ নেয়।
মঙ্গল শোভাযাত্রায় উপস্থিত থেকে বেলুন উড়িয়ে এর উদ্বোধন করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈ সিং। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার তারিকু্ল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক লুৎফর রহমান, সুরাইয়া আক্তার সুইটিসহ সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা।
নববর্ষ বরণে বান্দরবানের মারমা, চাকমা, ত্রিপুরা ও তংচঞ্চ্যাসহ ১১টি নৃগোষ্ঠীর জনসাধারণ তাদের নানা ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানে মেতে উঠেছেন।