শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৫৫ অপরাহ্ন

নাজমুন নাহারের ১৭৫ দেশ ভ্রমণের মাইলফলক অর্জন

  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ৭ নভেম্বর, ২০২৪

লাল সবুজের পতাকা হাতে বিশ্ব ভ্রমণের এক অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন নাজমুন নাহার। প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ১৭৫ দেশ ভ্রমণের এই ঐতিহাসিক রেকর্ড গড়লেন তিনি। ১৭৫তম দেশ হিসেবে ভানুয়াতু ভ্রমণের মাধ্যমে এই কৃতিত্ব অর্জন করেন তিনি। সকল শঙ্কা, ভয়কে উপেক্ষা করে মৃত্যুকে হাতের মুঠোয় নিয়ে নাজমুন এগিয়ে চলছেন পৃথিবীর পথে পথে।

২০২৪ এর সেপ্টেম্বরের শুরু থেকে পৃথিবীর দক্ষিণ-পূর্ব গোলার্ধে অবস্থিত দেশ ফিজি ও ভানুয়াতু পর্যন্ত এবারের ভ্রমণ শুরু করেন তিনি। নাজমুন বাংলাদেশ থেকে অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন হয়ে প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দ্বীপরাষ্ট্র ফিজির নাদিতে পৌঁছান ৯ সেপ্টেম্বর। ফিজির নাদি, নাতাদোলা ও সুভাসহ বিভিন্ন স্থান ভ্রমণ শেষে তিনি ভানুয়াতু অভিযাত্রা করেন। ভানুয়াতুর পোর্ট ভিলা, এসপিরিতু শান্তো, মালেকুলা, মেলে, তানা, এরাকর ও একাসুপসহ বিভিন্ন আদিবাসী অঞ্চল ভ্রমণ করেন। একাসুপ কালচারাল ভিলেজের আদিবাসীদের প্রধান রাজা নাজমুন নাহারের বিশ্ব ভ্রমণের মাইলফলকে অভিনন্দন জানান।

নাজমুন ভ্রমণ করবেন বিশ্বের প্রতিটি দেশ। তার পেছনে ব্যাকপ্যাক, দুচোখে পুরো পৃথিবী দেখে শেষ করার এক অনাবিল স্বপ্ন দেখতে দেখতে লাল সবুজের পতাকা হাতে  এগিয়ে চলেছেন সকল দুর্গম পথ। সকল বাধা বিপত্তি অতিক্রম করে তার এই দুর্বার পথ চলা যেন পৃথিবীতে অপারাজেয় বাংলাদেশের আরেক নাম। নাজমুন বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশের সুনাম অক্ষুণ্ন রেখে এভাবেই গৌরবের সাথে বাংলাদেশকে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছেন বিশ্ববাসীর কাছে। উত্তর গোলার্ধ থেকে দক্ষিণ গোলার্ধসহ পৃথিবীর প্রতিটি দেশের মানচিত্রের মাঝে উড়াচ্ছেন লাল সবুজের পতাকা।

২০০০ সালে ভারতের ভুপালের পাঁচমারিতে ‌ইন্ডিয়া ইন্টারন্যাশনাল এডভেঞ্চার প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করার মাধ্যমে তার প্রথম বিশ্ব ভ্রমণের সূচনা হয়। ১ জুন ২০১৮ সালে ১০০ তম দেশ ভ্রমণের মাইলফলক সৃষ্টি করেন জাম্বিয়া ও জিম্বাবুয়ের সীমান্তের ভিক্টোরিয়া জলপ্রপাতের ওপর। ১৫০ দেশ ভ্রমণের মাইলফলক সৃষ্টি করেন আফ্রিকা মহাদেশের দেশ সাওতমে অ্যান্ড প্রিন্সিপ। ২৪ বছর ধরে নাজমুন পৃথিবীর এক দেশ থেকে আরেক দেশে বিভিন্ন জনপদের মাঝে বাংলাদেশের পতাকাকে তুলে ধরছেন।

এছাড়া তিনি পরিবেশ রক্ষা ও বাল্যবিবাহ বন্ধের লক্ষ্যে পৃথিবীজুড়ে মানুষের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধি করছেন।

নাজমুন পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ভ্রমণের সময় ‘নো ওয়ার অনলি পিস, সেভ দ্য প্ল্যানেট’ এই শান্তি ও ঐক্যের বার্তাগুলো পৌঁছান এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিশু ও তরুণদের উৎসাহিত করেন।

পৃথিবীর বেশির ভাগ দেশ নাজমুন সড়ক পথে ভ্রমণ করেছেন। তার ২৪ বছরের বিশ্ব অভিযাত্রার মাঝে তিনি বহু প্রতিকূলতার মুখোমুখি হয়েছেন। বহুবার মৃত্যুমুখে পতিত হয়েছেন, তবুও একের পর এক দেশ ভ্রমণ করেছেন লাল সবুজের পতাকা হাতে। তিনি মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে বাংলাদেশকে নিয়ে যাচ্ছেন এক অনন্য উচ্চতায়।

নাজমুন নাহার একজন হার না মানা দুর্বার নারী, ইতিপূর্বে তার বিশ্ব ভ্রমণের কঠিন চ্যালেঞ্জগুলো সেটাই প্রমাণ করেছে। দেশ-বিদেশে তার অর্জনের ঝুলিতে যুক্ত হয়েছে প্রায় ৫৫ টির মতো অ্যাওয়ার্ড। তিনি পড়াশোনা করেছেন সুইডেনের লুন্ড ইউনিভার্সিটিতে। বিশ্ব গণমাধ্যমের শিরোনাম হয়েছেন নাজমুন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মন্ত্রী, রাষ্ট্রপ্রধান, বিখ্যাত ব্যক্তিরা তাকে সংবর্ধিত করেছেন।

বাংলাদেশের লক্ষ্মীপুর সদরে জন্ম নিয়েছেন এই আলোকিত নারী। স্বপ্ন, চেষ্টা আর সংগ্রামের মাধ্যমে পৃথিবীতে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন যে সকল নারী তাদেরই একজন আমাদের নাজমুন নাহার। যুগ যুগ ধরে লাল সবুজের পতাকা হাতে নাজমুন নাহারের বিশ্ব ভ্রমণের এই দৃষ্টান্ত পৃথিবীর মানচিত্রে বাংলাদেশকে গৌরবান্বিত করবে। নাজমুন নাহারের ১৭৫ দেশ ভ্রমণ করে বিশ্ব রেকর্ডের কাছাকাছি পৌঁছেছেন নাজমুন।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com