জার্মান পার্লামেন্টের (বুন্দেস্টাগ) সদস্যরা দেশটির নাগরিকত্ব আইনে ঐতিহাসিক পরিবর্তনের পক্ষে ভোট দিয়েছেন। ফলে নতুন আইন অনুযায়ী, জার্মানিতে টানা পাঁচ বছর বসবাসকারী বিদেশিরা নাগরিকত্বের জন্য যোগ্য বলে বিবেচনা করা হবে।
এছাড়াও বিদেশিরা তাদের জাতীয়তা বহাল রাখতে পারবেন অর্থাৎ দ্বৈত নাগরিকত্ব গ্রহণ করতে পারবেন। শুক্রবার জার্মান পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ বুন্দেস্ট্যাগ ন্যাচারালাইজেশনের আইন শিথিল করার এবং দ্বৈত নাগরিকত্বের পক্ষে এই ভোট দিয়েছে।
জার্মান সরকার বলেছে, আইনটি জার্মানিকে আন্তর্জাতিকভাবে দক্ষ কর্মীদের কাছে আরও আকর্ষণীয় করে তুলবে।
বুন্ডেস্টাগের সদস্যদের ৩৮২ জন সদস্য আইনটি পাসের পক্ষে ভোট দিয়েছেন, ২৩৪ জন বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন এবং ২৩ জন ভোট দেওয়া থেকে বিরত ছিলেন। ক্ষমতাসীন জোট সরকারের সদস্যরা অর্থাৎ চ্যান্সেলর ওলাফ শোলজের সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটস (এসপিডি), ফ্রি ডেমোক্র্যাটস (এফডিপি) এবং গ্রিন পার্টির সদস্যরা আইনটির পক্ষে ভোট দিয়েছেন।
অন্যদিকে দেশটির বিরোধী দল রক্ষণশীল ডানপন্থি দলগুলোর সদস্যরা এই বিলের বিরোধিতা করেছেন।
নতুন আইন অনুযায়ী পাঁচ বছর ধরে জার্মানিতে বসবাস করছেন এমন বিদেশিরা শর্তপূরণ সাপেক্ষে জার্মান পাসপোর্টের জন্য আবেদন করতে পারবেন যা বর্তমানে ৮ বছর। তবে কেউ যদি জার্মান ভাষা C1 স্তরের এবং কর্মক্ষেত্রে বিশেষ কৃতিত্ব দেখাতে পারে তাহলে ৩ বছর পরেই নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
নতুন এই আইনের ফলে বিদেশিরা যে দেশ থেকে এসেছেন সেই দেশের নাগরিকত্বও বহাল রাখতে পারবেন। যা বর্তমানে শুধুমাত্র ইউরোপের অন্যান্য দেশ ও সুইজারল্যান্ডের নাগরিকদের জন্য অনুমোদিত। বয়স্ক এবং শিশুরাও নতুন আইনের সুবিধা পাবে। ৬৭ বছরের বেশি বয়সীরা নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে ভাষা দক্ষতা (B1-স্তরের জার্মান) এবং নাগরিকত্ব পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে না। এছাড়াও সন্তান জন্মের সময় যদি বিদেশি পিতা বা মাতা একজন পাঁচ বছর ধরে জার্মানিতে বৈধভাবে বসবাস করে থাকেন তাহলে তাদের শিশু জার্মান নাগরিকত্ব লাভ করবে।
জার্মান গ্রিন পার্টির নেতা, প্রবাসী বাংলাদেশি শাহাবুদ্দিন মিয়া বলেছেন, জার্মানিতে বর্তমানে দক্ষ জনশক্তির অনেক প্রয়োজন। নাগরিকত্ব আইনের এই পরিবর্তনের ফলে দক্ষ কর্মীর এই সংকট কিছুটা হলেও দূর হবে।
তিনি জানিয়েছেন, যেহেতু বুন্দেস্টাগ সদস্যরা আইনটি পাস করার পক্ষে ভোট দিয়েছেন এখন এটি জার্মানির নিয়ম অনুযায়ী বুন্দেসরাট হয়ে প্রেসিডেন্ট ফ্রাংকভালটার স্টেইনমায়ার এর স্বাক্ষরের জন্য উপস্থাপন করা হবে। সব কিছু ঠিক থাকলে আগামী এপ্রিল বা মে থেকে আইনটি কার্যকর হবে বলে ধরণা করা হচ্ছে।