শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০২:২৯ অপরাহ্ন
Uncategorized

দেশের মাটিতেই আশা জাগাচ্ছে ভিয়েতনামি নারিকেল

  • আপডেট সময় শনিবার, ১৪ মে, ২০২২

নারিকেল গাছের কথা বললেই আমাদের চোখের সামনে ভেসে ওঠে বিশাল লম্বা একটি গাছ। এ গাছের একদম উপরের দিকে থাকে ফল। কিন্তু ধরুন কেউ মাটিতে দাঁড়িয়েই নারিকেল পাড়ছে? নারিকেলগুলো মাটি থেকে কয়েক ফুট উঁচুতে ঝুলছে। না, কোনো কাল্পনিক কথা নয়, সত্যিই এমন গাছ রয়েছে আর তা বাংলাদেশেই।

দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার গোপালপুরের শোভা পাচ্ছে এ নারিকেল। যা ভিয়েতনামি নারিকেল হিসেবে পরিচিত। এই গাছ প্রচলিত নারিকেল গাছের তুলনায় উচ্চতায় অনেক খাটো, ফলনও বেশি।

ঘোড়াঘাট উপজেলার গোপালপুরের কাজী মাহবুবুর রহমান মোহাম্মদ আবু সাঈদ আহমেদ চৌধুরী ২০১৬ সালে তার পুকুর পারে পরিত্যক্ত জমিতে ৫০টা ভিয়েতনামের চারা লাগান। এরপর ২০১৯ সালে প্রত্যেকটা গাছে ফুল আসা শুরু হয়। এর ৬ থেকে ৭ মাস পর ডাব এবং নারিকেল পেয়ে যান তিনি। বর্তমানে তিনি দুই একর জমিতে এ জাতের নারিকেলের চাষ করছেন।

একই সাথে তিনি যেমন ডাব এবং নারিকেলের ফলন করছেন তেমনিভাবে তিনি নতুন চারা তৈরির চেষ্টা করছেন। ফলে তার লাভ হচ্ছে দুইভাবে। ফল ও চারা বিক্রি করে।

আবু সাঈদ বলেন, ‘এই গাছ হাইব্রিড জাতের হওয়ার কারণে যত্ন একটু বেশি করতে হয়। বেলে-দোঁআশ মাটিতে ভালো হয়। আর আমার মনে হয় এই নারিকেল গাছ অনেক পানি খায়। আমি গোবরের কমপোষ্ট সার দিচ্ছি। তবে আমার মনে হচ্ছে আরো ভালো যত্ন করলে গাছ বাঁচানো যাবে।’

একটা গাছ বিক্রি করে তিনি গাছ প্রতি ৫ শ’ থেকে ৭ শ’ টাকা পান। আর ডাব ও নারিকেল প্রতিটি বিক্রি করেন ৩০ টাকা করে।

বাংলাদেশ সরকারের কৃষি তথ্য সার্ভিস বলছে, নারিকেল বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান অর্থকরী ফসল। তবে আমাদের দেশে বর্তমানে যে প্রচলিত নারিকেলগুলো রয়েছে তা থেকে ফলন পেতে স্বাভাবিকভাবে ৭ থেকে ৮ বছর সময় লাগে। তাই নারিকেলের ফলন যাতে তাড়াতাড়ি পাওয়া যায় তাই নতুন এই সম্পূর্ণ ডোয়ার্ফ (খাটো) জাতটির আবাদের ব্যাপারে জোর দেয়া হচ্ছে।

উপযুক্ত পরিচর্যা করলে একটি গাছ থেকে প্রতিবছর প্রায় ২৫০টি নারিকেল পাওয়া যায়। উন্নত এ জাতের সম্প্রসারণ করা গেলে আমাদের দেশের নারিকেলের উৎপাদন প্রায় ৩ গুণ বৃদ্ধি পাবে বলে মনে করেন কৃষি কর্মকর্তারা।

ভিয়েতনাম থেকে আগত খাটো নারিকেল গাছের দুটি জাত রয়েছে–
১. সিয়াম গ্রিন কোকনাট : এটি ডাব হিসেবে খুবই জনপ্রিয়। এ জাতের ডাবের রং কিছুটা সবুজ, আকার কিছুটা ছোট, প্রতিটির ওজন ১.২ থেকে ১.৫ কেজি। এ জাতের ডাবে ২৫০ থেকে ৩০০ মিলিলিটার পানি পাওয়া যায়। বছরে প্রতি গাছে ফল ধরে ১৫০-২০০টি।

২. সিয়াম ব্লু কোকোনাট : এটিও অতি জনপ্রিয় জাত। এটা উদ্ভাবন করা হয় ২০০৫ সালে। ভিয়েতনামে এ চারা কৃষকের খুবই পছন্দ। ফলের রং হলুদ, প্রতিটির ওজন ১.২ থেকে ১.৫ কেজি, ডাবে পানির পরিমাণ ২৫০-৩০০ মিলিলিটার। ডাবের পানি খুব মিষ্টি এবং শেলফ লাইফ বেশি হওয়ায় এ জাতের ডাব বিদেশে রফতানি করা যায়। বছরে প্রতি গাছে ফল ধরে ১৫০-২০০টি।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

Like Us On Facebook

Facebook Pagelike Widget
© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com