দুবাই ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট পৃথিবীর ৫ম বৃহত্তম এয়ারপোর্ট এবং এশিয়ার ৩য় বৃহত্তম এয়ারপোর্ট। এছাড়া পৃথিবীর ৬ষ্ঠ বৃহত্তম কার্গো এয়ারপোর্ট। পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি এয়ারবাস এবং বোয়িং এই এয়ার পোর্টে উঠানামা করে। ২০১৯ সালে দুবাই এয়ারপোর্ট আয় করেছে ২৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার যা দুবাইয়ের বার্ষিক জিডিপির ২৬ শতাংশ।
প্রতিদিন প্রায় ১২০০ ফ্লাইট এই এয়ারপোর্টে উঠানামা করে। বর্তমানে বিশ্বের ৭০ শতাংশ মানুষ দুবাইকে ট্রানজিট হিসাবে বেছে নিয়েছে। এই এয়ারপোর্টে ১৪০ টি এয়ারলাইন নিয়মিত ফ্লাইট পরিচালনা করে। সেবার মানের দিক থেকে বিশ্বের সেরা এয়ারপোর্টের মধ্যে দুবাই ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট অন্যতম।
১৯৩৭ সালে দুবাই ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট যাত্রা শুরু করে। ১৯৬৯ সালে বিমান বন্দরটি সম্পূর্ণ নতুন রূপে ঢেলে সাজানো হয়। ১৯৬০ সালে এই বিমান বন্দরটির রানওয়ে ছিল মাত্র ১৮০০ মিটার লম্বা। ১৯৬৩ সালে রানওয়ে সম্প্রসারিত হয়ে ২৮০০ মিটার লম্বা করা হয়।
ধীরে ধীরে এয়ারপোর্টটিতে ফ্লাইটের সংখ্যা বাড়তে থাকে। ১৯৭০ সালে দুবাই ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টকে অত্যাধুনিক ভাবে সজ্জিত করা হয়।
১৯৮৫ সালে দুবাই এর নিজস্ব এয়ারলাইন এ্যামিরেট্স যাত্রা শুরু করে। খুবই অল্প দিনের মধ্যে দুবাই চারটি এয়ারলাইনস এর মালিক হয়ে যায়। যে গুলো হচ্ছে এয়ার এ্যারাবিয়া, আমিরেট্স এয়ারলাইন্স, ইত্তেহাদ এয়ারওয়েজ এবং ফ্লাই দুবাই। এর মধ্যে এ্যামিরেট্স হচ্ছে বিশ্বের সর্বাধিক জনপ্রিয় একটি এয়ারলাইন্স। তারপরে রয়েছে ইত্তেহাদ এয়ারওয়েজ। যেটি যাত্রা শুরু করেছে ২০০৩ সালে। পাশাপাশি কম দামে টিকিটের জন্য মধ্যপ্রাচ্যে ফ্লাই দুবাই খুবই জনপ্রিয়। এছাড়া এয়ার এরাবিয়াও একটি জনপ্রিয় এয়ালাইনস। এই ৪ টি এয়ারলাইনস এর হাব হিসাবে ব্যবহৃত হয় দুবাই এয়ারপোর্ট।
৮০ এর দশক থেকে দুবাই অনেক উন্নতি করেছে। তিনটি টার্মিনালে প্রতি সপ্তাহে প্রায় ৮০০০ ফ্লাইট পরিচালিত হয়। দুবাই হয়ে ইউরোপ, আমেরিকা, মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে ট্রানজিট যাত্রির সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। যাত্রি সেবার মান দুবাই এয়ারপোর্টে অনেক উন্নত। আন্তর্জাতিকভাবে দুবাই এয়ারপোর্ট হাব হিসাবে গড়ে উঠেছে। সারা বছর ৩৬৫ দিন এবং দিনের ২৪টি ঘন্টা ব্যস্ত থাকে এয়ারপোর্টটি। বিমান বন্দরটিকে ২৪ ঘন্টা সচল রাখতে ৩ শিফটে প্রায় ১ লক্ষ স্থায়ী কর্মী সার্বক্ষনিক দায়িত্ব পালন করে।
পৃথিবীর এই ব্যস্ততম এয়ারপোর্টটি প্রতিদিন প্রায় ২ লক্ষ যাত্রী হ্যান্ডেল করে। পাশাপাশি রয়েছে ল্যাগেজ ডেলিভারি। এর সাথে রয়েছে কার্গো সার্ভিস। দুবাই এয়ারপোর্টে রয়েছে সর্বাধুনিক আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স সিষ্টেম। যার কারনে দুবাই এয়ারপোর্টে কোন মাদক চোরাচালান করা যায় না। প্রতিদিন প্রায় ১৩ শতাংশ যাত্রী বৃদ্ধি পাচ্ছে দুবাই এয়ারপোর্টে। আগামী ২০৩০ সাল নাগাদ দুবাই এর আয় দাড়াবে ৮৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার যা দুবাই এর মোট জিডিপির ৪৪ শতাংশ। দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৩৫ শতাংশের চাকরি হবে দুবাই এয়ারপোর্টে।
দুবাই এয়ারপোর্টে রয়েছে সবচেয়ে দ্রুত গতি সম্পন্ন ওয়াই ফাই সিষ্টেম। ক্লান্তি দুর করার জন্য দুবাই এয়ারপোর্টে রয়েছে সুন্দর এন্টারটেইনমেন্টরের ব্যবস্থা। যেখানে আপনি পাবেন বার, জিম, পার্কসহ ডিউটি ফ্রি শপিং এবং সব ধরনের খাবারের রেষ্টুরেন্ট। দুবাই এয়ারপোর্টের ভিতরেই রয়েছে ফাইভ স্টার হোটেল, সুইমিং পুল, কনফারেন্স রুম, রেষ্টুরেন্ট বার সহ সব ধরনের সুযোগ সুবিধা।
পৃথিবীর সব থেকে জনপ্রিয় এয়ারপোর্টগুলোর মধ্যে দুবাই এয়ার পোর্ট অন্যতম। এই এয়ারপোর্ট থেকে ২৬০ টি গন্তব্যে যাত্রীরা ফ্লাই করে থাকে। দুবাই এয়ারপোর্টের ভিতরে রয়েছে বিশাল একটি শপিং মল। এটি ডিউটি ফ্রি হওয়ায় দ্রব্যমূল্যও তুলনামূলক ভাবে কম।