শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৪৮ অপরাহ্ন

দু’পা নেই জন্ম থেকেই, বাধা হতে পারেনি সাফল্যের পথে

  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ১ আগস্ট, ২০২৪

ইংরেজিতে একটি কথা আছে, ‘নো লেগস, নো লিমিট’, যার বাংলা অর্থ করলে হয়, পা নেই সীমাও নেই। অর্থাৎ আপনার পা নেই, সুতরাং আপনার চলার কোনো সীমা নেই। কোনো বাধা নেই আপনার সামনে এগিয়ে যেতে। কোনো সীমানা ধরে দেওয়া নেই যতদূর ইচ্ছা চলতে থাকুন। এবার তেমনই এক নজির গড়লেন কেন্যা সেসার।

৩১ বছর বয়সী সেসার দু’পা ছাড়াই জন্ম নিয়েছিলেন। কিন্তু জীবনে সাফল্যের পথে এগিয়ে যেতে কোনো বাধা হতে পারেনি তার এই অঙ্গটি। গিনেস বুক অব রেকর্ডসে নাম উঠেছে সেসারের। সবচেয়ে কম সময়ে হ্যান্ড স্ট্যান্ড স্কেটিং করে রেকর্ড করেছেন তিনি। রেকর্ডটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসে হয়েছিল।

সেসার যে শুধু স্কেটিং করেন তা নয়, তিনি একইসঙ্গে অ্যাথলেট, সার্ফার, হলিউড অভিনেত্রী এবং রানওয়ে মডেল। তাকে অনেকেই নাম দিয়েছেন ‘শক্তিশালী কন্যা’। তবে এই শক্ত মনের মেয়েটির শৈশব এতটাও সুখকর ছিল না। সেসার আসল মা-বাবা কে তা তিনি জানেন না।

জন্মগতভাবে দু’পা ছাড়া ১৯৯২ সালে জন্মগ্রহণ করেন এই স্কেটবোর্ডার। যখন সেসার একেবারেই ছোট, জন্মের হয়তো মাত্র কয়েকদিন পর তার মা-বাবা তাকে থাইল্যান্ডের পাক চং-এ একটি বৌদ্ধ মন্দির স্কুলের পাশে ফেলে রেখে চলে যান। সেই রাস্তা দিয়ে এক নারী যাওয়ার সময় সেসারকে দেখতে পান এবং দ্রুত তাকে হাসপাতালে নিয়ে যান।

হাসপাতালে একজন নার্স, যাকে ‘নার্স মে চ্যান’ নামে ডাকা হতো, তিনি এবং হাসপাতালের কর্মীরা ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত সেসার যত্ন নেন। ৫ বছর বয়সী সেসার জীবন বদলে যায় এ বছরের মে মাসে। আমেরিকান এক দম্পতি সেসারকে দত্তক নেন। তাকে নিয়ে আসেন পোর্টল্যান্ডে। সেখানেই সেসার তার নতুন বাবা-মা, জেন এবং ডেভ এবং তার দুই বড় ভাইয়ের সঙ্গে বেড়ে ওঠেন।

দু’পা নেই জন্ম থেকেই, বাঁধা হতে পারেনি সাফল্যের পথে

সেসার মনে করেন তার জীবনে শক্তিশালী মনোভাব তৈরি করা এবং নিজেকে ভালোবাসতে শিখিয়েছেন নার্স মে চ্যান এবং তার মা ডেভ। এই দুই নারীর ভূমিকা তার জীবনে সবচেয়ে বেশি। আমেরিকায় প্রথম অবস্থায় তার বেশ কয়েকটি চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়েছিল। প্রথম যে ব্যাপারে তার বাধা এসেছিল তা হচ্ছে ভাষা। থ্যাইল্যান্ডে বেড়ে ওঠা ছোট্ট সেসার ইংরেজি জানতেন না। এরপর শারীরিক নানান জটিলতা তো আছেই।

তার হাতে বেশ কয়েকটি অস্ত্রোপচার করা হয়েছিল। তবে ভেঙে পড়েননি সেসার। পরিবারের সবার সহযোগিতা, আন্তরিকতা ও স্নেহে সব কিছু শিখেছেন, জয় করেছেন। খুবই মিশুকে স্বভাবের সেসার বন্ধু বানাতে বেশি সময় লাগত না। তিনি দ্রুত নিজেকে বন্ধুদের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারতেন। বন্ধুদের সঙ্গে খেলতে পছন্দ করতেন এবং হাইস্কুলের প্রথম বছর পর্যন্ত চিয়ারলিডিং স্কোয়াডে যোগ দিয়েছিলেন। হাইস্কুলে তিনি তার প্রথম মডেলিং করেছিলেন।

সব বিষয়ে তার ছিল অসীম আগ্রহ। নতুন নতুন জিনিস শিখতে পছন্দ করতেন। সব খেলায় পারদর্শী ছিলেন সেসার। হুইলচেয়ার রেসিং, হুইলচেয়ার রাগবি, সাঁতার এবং স্লেজ হকি সব খেলায় অংশ নিতেন। এসব খেলার সময় তিনি স্কেটিংয়ের ব্যাপারে আগ্রহী হয়ে ওঠেন।

এক বন্ধুর ভাইয়ের কাছ থেকে পাওয়া স্কেটিং বোর্ড দিয়েই অনুশীলন শুরু করেছিলেন সেসার। এরপর থেমে থাকেননি আর। একের পর এক পুরস্কার জিতেছেন স্কেটিং করে। শেষ পর্যন্ত গিনেস বুক অব রেকর্ডসেও নাম উঠিয়েছেন সেসার।

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Theme Customized By ThemesBazar.Com