অ্যাডভেঞ্চার প্রিয় পর্যটকদের নতুন আকর্ষণ, ‘তুয়ারি মাইরাং’ ঝর্ণা। খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় কিছুদিন আগে খোঁজ মিলেছে প্রায় শতফুট উঁচু এ ঝর্ণার। করোনা পরিস্থিতির কারণে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর কয়েকদিন আগে খুলে দেয়া হয়েছে দেশের পর্যটন কেন্দ্রগুলো। এর মধ্যেই নতুন সন্ধান পাওয়া ঝর্ণা দেখতে ভিড় করছেন বিভিন্ন জায়গার পর্যটকরা।
লোকালয় থেকে হেঁটে ঝরনায় পৌঁছাতে সময় লাগে প্রায় ১ ঘণ্টা। তবে, দীর্ঘ এ পথচলার ক্লান্তি ভুলিয়ে দেবে পথের দু’ধারের চোখ জুড়ানো সবুজ জুম। সাথে মন ভরাবে বন্যপ্রাণী থেকে জুমের ফসল বাঁচাতে জুমিয়াদের বানানো ছোট ছোট জুমঘরও।
যাত্রাপথে চোখে পড়বে বড় বড় পাথর খণ্ড বেয়ে নামা পানির স্রোত। উঁচু পাহাড় আর গভীর অরণ্যের কারণে ঝিরি পর্যন্ত সূর্যের আলো পৌঁছায় না বলে, পাওয়া যায় গা ছমছমে পরিবেশের রোমাঞ্চ। কোন কোন স্থানে পাহাড় থেকে নামতে হয় প্রাকৃতিক লতা বেয়ে। হাঁটতে হয় ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ি ঝিরিতে। আর এতো সব অনন্য অভিজ্ঞতা পেরিয়ে অবশেষে দেখা মিলবে ‘তুয়ারি মাইরাং’ ঝর্ণার।
ত্রিপুরা ভাষায় ‘তুয়ারি মাইরাং’ শব্দের অর্থ- থালার আকৃতি। ঝর্ণার নিচে থাকা থালার মতো দেখতে পাথরের কারণে এমন নাম হয়ে থাকতে পারে বলে ধারণা স্থানীয়দের। দৃষ্টিনন্দন এ ঝর্ণায় পৌঁছানোর রাস্তা বেশ দুর্গম। স্থানীয়রা বলছেন, অবকাঠামো উন্নয়ন করা গেলে এখানে লোকসমাগম বাড়বে। বাইরে থেকে আসা পর্যটকদের গাইড সুবিধা দিতে প্রস্তুত স্থানীয়রা।
‘তুয়ারি মাইরাং’ ছাড়াও দীঘিনালায় রয়েছে তৈদুছড়া ঝর্ণা, বাঁদুড় গুহাসহ বেশ কিছু পর্যটনকেন্দ্র। তবে দুর্গম যোগাযোগব্যবস্থার কারণে সেসব জায়গায় অনেক কম পর্যটক যেতে পারেন। পর্যটন শিল্প বিকাশে প্রকৃতির কোন ক্ষতি না করেই অবকাঠামো উন্নয়নের উদ্যোগ নেয়া হবে বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।
তবে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে গিয়ে ঝর্ণার চারপাশে প্লাস্টিকসহ অপচনশীল দ্রব্য ফেলে সেই প্রকৃতিরই ক্ষতি না করার অনুরোধ প্রকৃতিপ্রেমীদের।