1. [email protected] : চলো যাই : cholojaai.net
দক্ষ কর্মী ভিসার জন্য বছরে ১ লাখ ডলার ফি আরোপ
সোমবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১১:৩১ পূর্বাহ্ন

দক্ষ কর্মী ভিসার জন্য বছরে ১ লাখ ডলার ফি আরোপ

  • আপডেট সময় সোমবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

দক্ষ কর্মী ভিসার ওপর প্রতিবছর ১ লাখ ডলার ফি আরোপ করে শুক্রবার একটি নির্বাহী আদেশে সই করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এইচ-১বি ভিসার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে দক্ষ কর্মী নেওয়া হয়। এই ভিসা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন এ সিদ্ধান্তে কয়েকটি দেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়তে পারে।

এইচ-ওয়ানবি ভিসা কর্মসূচির সমালোচকরা দীর্ঘদিন ধরে যুক্তি দিয়ে আসছেন যে, এই ভিসা আমেরিকান কর্মীদের জন্য কাজের সুযোগ নষ্ট করছে। অন্যদিকে বিলিয়নেয়ার ইলন মাস্কসহ যারা এই কর্মসূচির পক্ষে, তাদের যুক্তি- এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে বিশ্বজুড়ে শীর্ষ প্রতিভাবানদের আকর্ষণ করার সুযোগ তৈরি করে দিচ্ছে।অন্য আরেকটি আদেশে, কিছু নির্দিষ্ট খাতের অভিবাসীদের জন্য এক মিলিয়ন পাউন্ড থেকে শুরু করে, ফি প্রদানের বিনিময়ে দ্রুত ভিসা দেওয়ার একটি নতুন ‘গোল্ড কার্ড’ পদ্ধতি চালু করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। শুক্রবার এই ঘোষণার সময় ওভাল অফিসে ট্রাম্পের সাথে যোগ দেন মার্কিন বাণিজ্যমন্ত্রী হাওয়ার্ড লুটনিক। তিনি বলেন, সব বড় বড় প্রতিষ্ঠানই এইচ-১বি ভিসার জন্য বছরে ১ লাখ ডলার ফি দেওয়ার এই সিদ্ধান্তে সমর্থন দিয়েছে। আমরা তাদের সঙ্গে কথা বলেছি।’

তিনি বলেন, ‘কোম্পানির সিদ্ধান্ত নিতে হবে- যদি বিদেশি কর্মীটি তার প্রতিষ্ঠানের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয় তবে প্রতিষ্ঠানটিকে প্রতি কর্মীর জন্য সরকারকে বছরে ১ লাখ ডলার ফি দিতে হবে। অথবা তাদেরকে নিজ দেশে পাঠিয়ে দিতে হবে। অন্যথায় আমেরিকানদের নিয়োগ দিতে হবে।’

লুটনিক বলেন, ‘যদি তুমি কাউকে প্রশিক্ষণ দিতে যাও, তাহলে আমাদের দেশের অন্যতম সেরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্প্রতি স্নাতক হওয়া একজনকে প্রশিক্ষণ দেবে। আমেরিকানদের প্রশিক্ষণ দাও। আমাদের চাকরি কেড়ে নেওয়ার জন্য লোক আনা বন্ধ করো।’

২০০৪ সাল থেকে, এইচ-ওয়ানবি ভিসা ক্যাটাগরিতে আবেদনের সংখ্যা প্রতি বছর ৮৫ হাজারে সীমাবদ্ধ রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র। এখন পর্যন্ত, এই ভিসার জন্য বিভিন্ন প্রশাসনিক ফি বাবদ, মোট এক হাজার পাঁচশ ডলার খরচ করতে হতো। মার্কিন নাগরিকত্ব ও অভিবাসন সেবা সংস্থা, ইউএসসিআইএস এর দেয়া তথ্য অনুযায়ী, আগামী অর্থবছরের জন্য এইচ-ওয়ানবি ভিসার আবেদন অনেকটাই কমে প্রায় তিন লাখ ৫৯ হাজারে নেমে এসেছে – যা চার বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন।

সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে, গত অর্থবছরে এই কর্মসূচির সবচেয়ে বেশি সুবিধাভোগী ছিল অ্যামাজন, তারপরে রয়েছে টেক জায়ান্ট টাটা, মাইক্রোসফট, মেটা, অ্যাপল এবং গুগল। ভিসা নিয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের সিদ্ধান্তের বিষয়ে মতামত জানতে এই কোম্পানিগুলোর সাথে কথা বলার চেষ্টা করেছে বিবিসি। ওয়াটসন ইমিগ্রেশন ল-এর প্রতিষ্ঠাতা আইনজীবী তাহমিনা ওয়াটসন বিবিসিকে বলেন, এই রায় তার অনেক ক্লায়েন্টের জন্য ‘কফিনে পেরেক ঠুকে’ দেওয়ার মতো হবে, যারা বেশিরভাগই ছোট ব্যবসা এবং স্টার্ট-আপ করছেন।

ওয়াটসন বলেন, ‘এটা সবারই ক্ষমতার বাইরে চলে যাবে। এই এক লাখ ডলারের প্রভাব ভয়াবহ হবে। অনেক ছোট বা মাঝারি আকারের কোম্পানি “আপনাকে বলবে যে তারা আসলে কাজ করার জন্য কর্মী খুঁজে পাচ্ছে না। যখন নিয়োগকর্তারা বিদেশি প্রতিভাদের পৃষ্ঠপোষকতা করেন, তখন প্রায়শই তারা এটি করেন। কারণ সেই পদগুলো দেশের ভেতর থেকে পূরণ করতে সক্ষম হননি।’

লিটলার মেন্ডেলসন পিসির অভিবাসন ও বৈশ্বিক গতিশীলতা অনুশীলন গোষ্ঠীর চেয়ারম্যান জর্জ লোপেজ বলছেন, এক লাখ ডলার ফি ‘প্রযুক্তি খাত এবং সমস্ত শিল্পে আমেরিকান প্রতিযোগিতার উপর একটা স্থবিরতা আনবে। কিছু কোম্পানি যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে কার্যক্রম স্থাপনের কথা বিবেচনা করতে পারে, যদিও বাস্তবে সেটি করা চ্যালেঞ্জিং হতে পারে।

এইচ-ওয়ানবি ভিসা নিয়ে বিতর্কের ফলে ট্রাম্পের দল এবং সমর্থকদের মধ্যেও অতীতে বিভক্তি দেখা দিয়েছিল, ভিসার পক্ষে যারা ছিলেন তাদের বিরুদ্ধে সাবেক কৌশলবিদ স্টিভ ব্যাননের মতো সমালোচকদের লড়াইয়ে নামতে হয়েছিল। গত জানুয়ারিতে হোয়াইট হাউসে ডোনাল্ড ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেছিলেন, তিনি এইচ-ওয়ানবি ভিসা সংক্রান্ত ‘যুক্তির উভয় পক্ষই’ বোঝেন। আগের বছর নির্বাচনি প্রচারণার সময়ও প্রযুক্তি শিল্প সংশ্লিষ্টদের সমর্থন পেতে প্রতিভা আকর্ষণের প্রক্রিয়াটিকে আরও সহজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, এমনকি কলেজ স্নাতকদের জন্য গ্রিন কার্ডের প্রস্তাবও করেছিলেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, কোম্পানিগুলোতে কাজ করার জন্য আপনার একদল লোকের প্রয়োজন। আপনাকে এই লোকদের নিয়োগ করতে এবং তাদের ধরে রাখতে সক্ষম হতে হবে।

এইচ-ওয়ানবি ক্যাটাগরিতে ভিসা আবেদনের যাচাই-বাছাই আরো শক্তিশালী করা এবং জালিয়াতি বন্ধ করার লক্ষ্যে, ২০১৭ সালে নিজের প্রথম মেয়াদের শুরুতে, ট্রাম্প একটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছিলেন। ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা প্রত্যাখ্যানের হার সর্বকালের সর্বোচ্চ ২৪ শতাংশে পৌঁছায়, যেখানে সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার আমলে পাঁচ শতাংশ থেকে আট শতাংশ এবং তারপর জো বাইডেনের আমলে দু্ই শতাংশ থেকে চার শতাংশ ছিল। সেই সময়, ট্রাম্প প্রশাসনের এইচ-ওয়ানবি আদেশের কঠোর সমালোচনা করে পিছু হটেছিল প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এইচ-ওয়ানবি প্রোগ্রামে অতিরিক্ত বিধিনিষেধের এই সিদ্ধান্ত, ভারতের মতো দেশগুলোতে যথেষ্ট উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে- যারা এই ধরনের ভিসা আবেদনের জন্য এখন পর্যন্ত বৃহত্তম উৎস দেশ।

খবর বিবিসি বাংলার

শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর

ভ্রমন সম্পর্কিত সকল নিউজ এবং সব ধরনের তথ্য সবার আগে পেতে, আমাদের সাথে থাকুন এবং আমাদেরকে ফলো করে রাখুন।

© All rights reserved © 2020 cholojaai.net
Developed By ThemesBazar.Com