রোমাঞ্চ ও নতুনের স্বাদ গ্রহণের ইচ্ছে নিয়েই গোয়ায় পাড়ি দিয়েছিলাম মার্চ মাসের শেষে। সাত দিনের জন্য ব্যাকপ্যাক গুছিয়ে এক সন্ধেয় পৌঁছে যাই পানাজি থেকে প্রায় ২১ কিলোমিটার দূরে উত্তর গোয়ার ভাগাতোরে। সূর্য ঢলতেই অপরূপ আলোয় ঝলমলিয়ে ওঠে এই উৎসবের শহর। নর্থ গোয়ার এই অঞ্চল সারা বছরই লাস্যময়ী। এর টানেই আমি বারবার গোয়া যাই। কিন্তু এ বার ভিড় ছাড়িয়ে প্রকৃতির বুকে একলা হওয়ার মধ্যেই খুঁজে পেলাম অন্য আনন্দ। বদলে গেল জীবনদর্শন।
ভাগাতোরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অপরূপ। এক দিকে সমুদ্রের হাতছানি, অন্য দিকে পাহাড়ের অনন্য শোভা। প্রতি বছরই সময় করে এখানে চলে আসি। গণ্ডির বাইরে বেরিয়ে ঘোরার নেশাই গোয়া ভ্রমণের উদ্দেশ্য। এ বারও মার্চের শেষে এসেছিলাম। কিন্তু কয়েকটা দিন কাটার পরেই এল লকডাউনের খবর। অনেক পর্যটক চলে গেলেন। আমি ঘাঁটি গাড়লাম বন্ধু আশকা গারোডিয়ার যোগশালায়। কিন্তু আমরা ভাবি এক, হয় আর এক। বেনিয়মের জীবন কাটাব বলে এসেছিলাম, হল তার ঠিক উল্টো। যোগশালায় একশো দিন কাটিয়ে নতুন জীবনদর্শন নিয়ে ফিরলাম, যা আমার সারা জীবনের সঞ্চয়।
‘থাকব না কো বদ্ধ ঘরে’— এই মন্ত্র নিয়েই শুরু আমার যোগ শিক্ষা। রবিবার বাদ দিয়ে বাকি দিন দু’-তিন ঘন্টার সেশনেই জীবনকে নতুন ভাবে বুঝতে শিখলাম। তার মধ্যেই খবর দেখে বুঝতে পারছিলাম, করোনার প্রকোপ ক্রমশ বাড়ছে। জীবনযাত্রা আরও কঠিন হয়ে যাবে। মাথার মধ্যে ঘুরত, কবে মুম্বই ফিরব? আবার কবে কাজ শুরু হবে? ধীরে ধীরে সব কিছু সহজ করে দেখতে শিখলাম। এখন অনিশ্চিত পরিস্থিতিতেও শান্ত থাকতে পারি। কঠিন সময়েও ছোট ছোট খুশির খোঁজ করতে শিখে গিয়েছি। অশান্ত মনে শান্তির বার্তা আনত যোগাভ্যাস।


 
							
							 
                    







 
  
  
  
  
  
  
  
  
 