হংকংয়ে চাকরির সুবাদে অনেকবার আমার চীন যেতে হয়েছে। প্রথমবার যখন চীন গেলাম, তখন খাবার খেতে অনেক কষ্ট করতে হয়েছে। কারণ, ভাষাগত সমস্যা। চায়নিজরা ইংরেজি বোঝেই না। হোটেলের বাইরে অ্যাকোয়ারিয়ামে অনেক রকমের জ্যান্ত মাছ সাজানো। কিন্তু কী খাব তা বলতে না পারায় দুই–তিন দিন শুধু ফল ও রুটি খেয়েই ক্ষুধা নিবারণ করেছি।
সে অনেক দিন আগের কথা। মন চাইল পুরোনো জায়গাটা আবার দেখে আসি। যে ভাবনা, সেই কাজ। দুই দেশ একবারে দেখা হয়ে যাবে—থাইল্যান্ড আর চীন। কিন্তু দুই দেশের ভিসা এখন আমাদের জন্য খুব কঠিন করে ফেলেছে। তবু সাহস করে ভিসার জন্য পাসপোর্ট জমা দিলাম। দুই দেশের জন্যই আমাকে ইন্টারভিউ দিতে হয়েছে। অনেক যাচাই–বাছাই করে শেষ পর্যন্ত ভিসা দিয়েছে।
প্রথমে ইউএস–বাংলা এয়ারলাইনসে চড়ে থাইল্যান্ড গেলাম। আগের দেখা থাইল্যান্ড আর এখনকার থাইল্যান্ডের বিস্তর ফারাক দেখলাম। মানুষের জীবনযাত্রার মান অনেক উন্নত হয়েছে। জিনিসপত্রের দাম অত্যধিক। কিন্তু আমি যখন প্রথম থাইল্যান্ড গিয়েছিলাম তখন রাস্তায় প্রচুর যানজট ছিল। এখন উড়ালসড়কের কারণে যানজট নেই বললেই চলে। রাস্তাগুলো ঝকঝকে। পুরোনো কোনো গাড়ি নেই। শহরের আনাচকানাচে বিদেশি পর্যটক দেখতে পেলাম।
যা হোক, আমার উদ্দেশ্য চীনকে নিয়ে লেখা। কুনমিং চীনের একটি প্রদেশ। এখানে সারা বছরই বসন্তের হাওয়া বিরাজ করে। তাই কুনমিংকে চিরবসন্তের শহর বলা হয়।
হোটেলে আমি একা, তাই রাতের আকাশ দেখে সময় পার করি। এবার হঠাৎ দেখি আধখানা চাঁদ আকাশে। বাঁশি বাজল না, তবে চাঁদ মামা আমাকে সময় দিল অনেকটা। চাঁদের এমন রূপ আমি আগে কখনো দেখিনি। সে অদ্ভুত আলোকচ্ছটার সৌন্দর্য একদমই ধরা পড়ল না আমার ক্যামেরায়। তবে আমার নির্ঘুম বিষাদমাখা জার্নিটা আনন্দময় হয়ে উঠল কিছুটা।
তিন দিন থাকার পর আমার চীন সফর শেষ হয়। চমৎকার অভিজ্ঞতার ঝুলি নিয়ে দেশে ফিরি। অনেক নতুন অভিজ্ঞতা হয়েছে। আবারও আপনাদের সামনে হাজির হব নতুন কোনো দেশের গল্প নিয়ে।