তেহরান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, আনুষ্ঠানিকভাবে “ইমাম খোমেনি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর” (IKA) নামে পরিচিত, ইরানের রাজধানী তেহরান শহরের প্রধান বিমানবন্দর। এটি আন্তর্জাতিক উড়ান সংযোগের জন্য ইরানের প্রধান কেন্দ্র হিসেবে কাজ করে এবং মধ্যপ্রাচ্যের অন্যতম ব্যস্ত বিমানবন্দরগুলির একটি। ইমাম খোমেনি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ইরানের ইতিহাস, সংস্কৃতি এবং আধুনিকতার প্রতিফলন ঘটায়।
তেহরান শহরের কেন্দ্র থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত এই বিমানবন্দরটি। এর অবস্থান শহরের বাইরে হলেও তেহরানের কেন্দ্র থেকে সহজেই সেখানে পৌঁছানো যায়। মেট্রো, বাস এবং ট্যাক্সি সার্ভিসের মাধ্যমে বিমানবন্দরে যাওয়া সম্ভব, যা যাত্রীদের জন্য আরামদায়ক।
১৯৭৯ সালের ইসলামিক বিপ্লবের পরে ইরান সরকার একটি আধুনিক এবং বৃহত্তর বিমানবন্দরের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করে। বিমানবন্দরটি নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছিল এবং ২০০৫ সালে এটি প্রথমবারের মতো যাত্রীদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। এটি ইমাম খোমেনির নামে নামকরণ করা হয়েছে, যিনি ইসলামী বিপ্লবের নেতা ছিলেন।
তেহরান বিমানবন্দরটি বর্তমানে শুধুমাত্র একটি প্রধান টার্মিনাল নিয়ে গঠিত, যা আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনা করে। তবে একটি দ্বিতীয় টার্মিনাল নির্মাণাধীন, যা ভবিষ্যতে আঞ্চলিক ও অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট পরিচালনা করবে। বিমানবন্দরটি যাত্রীদের জন্য বেশ কিছু আধুনিক সুবিধা প্রদান করে:
ইমাম খোমেনি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বিশ্বের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ গন্তব্যে সরাসরি ফ্লাইট রয়েছে। ইরান এয়ার, কাতার এয়ারওয়েজ, এমিরেটস, তুর্কিশ এয়ারলাইনস এবং অন্যান্য বেশ কিছু আন্তর্জাতিক এয়ারলাইনস এখানে তাদের সেবা প্রদান করে। ইউরোপ, এশিয়া এবং মধ্যপ্রাচ্যের অনেক শহরে নিয়মিত ফ্লাইট সংযোগ রয়েছে। ইরানের রাজধানী হওয়ায় তেহরান বিমানবন্দর ইরানের অভ্যন্তরীণ বিমান পরিষেবার কেন্দ্র হিসেবেও কাজ করে।
বিমানবন্দর থেকে তেহরান শহরের কেন্দ্র পর্যন্ত সহজে পৌঁছানোর জন্য বেশ কিছু অপশন রয়েছে:
ইমাম খোমেনি বিমানবন্দরে যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। বিমানবন্দরের প্রবেশ এবং প্রস্থান এলাকায় আধুনিক নিরাপত্তা প্রযুক্তি এবং প্রশিক্ষিত নিরাপত্তাকর্মীরা সবসময় নিরাপত্তা নিশ্চিত করে থাকেন।
ইমাম খোমেনি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের যাত্রী সংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে এখানে আরও একটি টার্মিনাল নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছে। এই নতুন টার্মিনালটি মূলত অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট পরিচালনার জন্য ব্যবহার হবে এবং এটি চালু হলে বিমানবন্দরটি আরও বেশি সংখ্যক যাত্রী ধারণ করতে সক্ষম হবে।
ইমাম খোমেনি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ইরানের আন্তর্জাতিক যোগাযোগের একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র এবং দেশটির সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক অগ্রগতির প্রতীক। এটি ভ্রমণকারীদের জন্য আধুনিক এবং সুবিধাজনক অভিজ্ঞতা প্রদান করে এবং ইরান ভ্রমণের জন্য আদর্শ প্রবেশদ্বার হিসেবে কাজ করে।